নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের জাতীয় গুরুত্বপুর্ন বহু প্রতিষ্ঠান থেকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসরদের বাদ দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু এখনো সোনালী ব্যাংক আওয়ামী কব্জায় রয়ে গেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বড় বড় পদ ভাগিয়ে নেওয়া আওয়ামী লীগের দোসররা সেখানে একদিকে ঋনখেলাপিদের আগের মতো বাঁচানোর ফন্দি করছে। পাশাপাশি খোলস পাল্টে ক্ষমতা পোক্ত করার চেষ্টা করছে। এই অবস্থায় বৈষম্যের শিকার হাজারো কর্মচারী ফুঁসে উঠেছে। সোনালী ব্যাংকে এই ফ্যাসিষ্টদের দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছে সৎ নিরীহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
২০০৮ সালে ক্ষমতা আরোহনের পর থেকে প্রশাসন আওয়ামীকরনের অংশ হিসেবে সোনালী ব্যাংকের প্রতিটি নিয়োগ, বদলি ও গুরুত্বপূর্ণ পদায়নের ক্ষেত্রে সাবেক ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। প্রধান কার্যালয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ এইচআরএমডি, এইচআরডিডি, পিআরডি (পাব্লিক রিলেশন ডিভইশন) এবং এমডি সেক্রেটারিয়েট। গত ১৬ বছরে এই ডিভিশনগুলোয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা বা আওয়ামী লীগ নেতাদের আত্মীয় স্বজনের বাইরে কাউকে নিয়োগ/বদলি করা হয়নি। যখন যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসেছেন তিনি তার পদ রক্ষার জন্য নিজস্ব আওয়ামী বলয় তৈরি করেছেন।
সোনালী ব্যাংকে আওয়ামী আমলে নিয়োগকৃত সর্বশেষ এমডি ছিলেন আফজাল করিম চৌধুরী। তার নিয়োগের ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রেখেছিলেন ছাগলকাণ্ডের হোতা সাবেক সচিব মতিউর রহমান ও গত কয়েকদিন আগে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তারকৃত আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আফজাল করিম চৌধুরী নিয়োগ পাবার পর বরিশাল কেন্দ্রিক বঙ্গবন্ধু পরিষদ, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ ও সাবেক ছাত্রলীগ করা কর্মকর্তাদের নিয়ে শক্ত বলয় তৈরি করেন। এই বলয়ের সম্মতি ছাড়া কোনো পদোন্নতি ও বদলি সম্ভব হতো না। আফজাল করিম ও মতিউর রহমান বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু তাদের রেখে যাওয়া বলয়ই এখন সোনালী ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করছে।।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, কোম্পানি সেক্রেটারি তৌহিদুল ইসলাম সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য।তার মাধ্যমেই ব্যাংকের আওয়ামী বলয় চলছে। তার সঙ্গে আছেন সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডিজিএম রবিউল আলম, ফেনীর সাবেক এমপি আলাউদ্দীন নাসিমের ভাই ও সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার জিএম আশরাফুল হায়দার চৌধুরী পিংকু, জিএম আলী আশরাফ আবু তাহের, পিডির (পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট ডীভিশন) জিএম সাফায়েত হোসেন পাটোয়ারী সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য। সাফায়েত পাটোয়ারী জুনিয়র জিএম হওয়ার সত্বেও তাকে গুরুত্বপূর্ণ এই পদে পদায়ন করা হয়। তার বাড়ি লক্ষীপুরে। ছাগলকান্ডের মতিউর তাকে এই পদে পদায়নের সুপারিশ করেছিলেন।
ডিজিএম মজিবুর রহমান আওয়ামী বলয়ের আরেক সদস্য। সাবেক এমডি আফজাল করিম বদলি বাণিজ্যর জন্য বরিশাল ডিভিশনকে শক্তিশালী করতে তাকে ক্ষমতাবান করেন। জানা গেছে, ২০২২ সালে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রায় ২০০ জনের মত ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও বংগবন্ধু পরিষদ এর লোক পদায়ন করা হয়।
ডিজিএম মজিবুর রহমান বদলি ও পদোন্নতি বানিজ্য করে একাধিক বাড়ি বানিয়েছেন। ঢাকার উত্তরায় তার একটি ছয়তলা ভবন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারত, সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ শাখা/এক্সচেঞ্জ হাইজে আওয়ামী সমর্থিত কর্মকর্তাদেরয় পদায়ন করা হয়। স্বজনপ্রীতি, দলপ্রীতি এবং আর্থিক লেনদেন এসব পোস্টিং এর মূল যোগ্যতা। সাবেক এমডি আতাউর রহমানের এক স্বজনকে পদায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকের আইন পর্যন্ত পরিবর্তন করা হয়েছিল। সাবেকে এমপি নিক্সনের ভাগ্নি তারানাকে নিয়োগ দিতে সকল আইন কানুনকে ঠেলে ফেলা হয়। তার জন্য কোন ভাইভা পরীক্ষা পর্যন্ত নেয়া হয়নি।
ডিজিএম মুজিবুর নারী সহকর্মীদের থেকে টাকা নিয়ে ইচ্ছেমত শাখায় পদায়ন করেন। ব্যাংকের ডিএমডি কাজি ওয়াহেদুল ইসলাম ২০২২ সালে এই পদে যুক্ত হন। নারায়ণগঞ্জ সদরের শামীম ওসমান ও নজরুল ইসলাম বাবুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিতি তার। তিনি আওয়ামী প্রকোশলী পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গুরুত্বপূর্ণ শাখা ও দপ্তরে রাখতে সদা তৎপর তিনি।
তার দাপটে এখনও কোনঠাসা ব্যাংকের আওয়ামী বিরোধী কর্মকর্তারা। তার বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয় সোনালি ব্যাংক। ফলে সাংবাদিকদের অনেককে কব্জা করে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। জানা গেছে, ব্যাংকের ছয়জন ডিএমডির মধ্যে তার অবস্থা ছিল চতুর্থ। বর্তমানে ৪ জন ডিএমডি আছেন। সেখানে তার অবস্থান দ্বিতীয়। নিয়ম অনুযায়ী পিএমডির দায়িত্ব ডিএমডি-১ এর পালনের নিয়ম থাকলেও আওয়ামী বলয়ের লোক হিসেবে তাকেই এই দায়িত্বের জন্য বেছে নেওয়া হয়। দায়িত্ব পেয়েই তিনি সোনালি ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের লোকদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
আওয়ামী সিণ্ডীকেটের অন্যতম হোতা তিনি। দীর্ঘ দিন আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকের কুয়েত শাখার মত ভাল পোস্টিং নিয়ে কাটিয়েছেন। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ শাখায় বংগবনধু পরিষদ এবং বংগ্মাতা পরিষদের লোকদের পদায়নের প্রধান হোতা তিনি। মাত্র কয়েকদিন আগে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ শাখা কাস্টম হাউজে বংগ্মাতা পরিহশদের সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ফকিরকে নিয়োগ দেন। স্বাধীনতা ব্যাংকার্সের আরেক নেতা কট্টত আওয়ামীলিগার নাজমুল হাসান আজমকে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ শাখা ক্যান্টমেন্টে পদায়ন করেন। ঢাকা শহরের বেশিরভাগ শাখায় তিনি আওয়ামীলীগারদের পদায়নে ভূমিকা রেখেছেন।
তিনিও সোনালি ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তার বাড়ি বরিশাল অঞ্চলে। আওয়ামী প্রভাবে তিনিও গুরুত্বপূর্ণ এই ডিভিশনে নিযুক্ত হন। আওয়ামীলীগ ঘরানার কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাদান ও ভিন্নমতের লোকদের মামুলি বিষয়ে শাস্তি দেয়াই তার মূল কাজ।
এমডি পিএস আলমগীর, এজিএম সাবেক এমডি আফজাল করিমকে ব্যবহার করে বদলি বানিজ্য করে কামাই করেছেন অঢেল টাকা। নতুন এমডি শওকত আলীর যোগদানের পরই তাকে কান পড়া দিয়ে বিদ্যমান আওয়ামী বলয়ে যুক্ত করেন। গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশন পিএমডিতে রুপালী ব্যাংকে থেকে আসা ডিএমডি, বর্তমান এমডির সহকর্মী এবং আওয়ামী বলয়ের নির্বাহী কাজী ওয়াহিদকে দায়িত্ব পাইয়ে দেন তিনি।নতুন এমডি শওকত আলী যিনি রূপালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা ছিলেন, তিনিও এখন আওয়ামী বলয়ে ঢুকে পড়েছেন।
তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তার ভাই স্বৈরাচার হাসিনার সাবেক এমপি স্বপন। বাগের হাটে বাড়ি হওয়ায় শেখ হেলালের আত্মীয় পরিচয়ে সোনালী ব্যাংকে দাপিয়ে বেড়াতেন, এখনো তা অব্যাহত আছে। তিনি এসিআর টেমপারিংয়ের মাধ্যমে ডিজিএম থেকে জিএম পদ বাগিয়ে নেন।
চাকরি জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে আওয়ামী প্রশাসনে ছত্র ছায়ায় থেকেছেন। আওয়ামীলীগের প্রভাব খাটিয়ে ব্যাংকের ইংল্যান্ড শাখায় কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। সেখানে থাকা অবস্থায় দুর্নীতি করলে তাকে দেশে পাঠানো হয়। দেশে ফেরার পর ইংল্যান্ডে দেওয়া এসিআর টেম্পারিং করে জিএম পদ বাগিয়ে নেন। এরপর ছাগল কান্ডের হোতা সাবেক সচিব ও ব্যাংকের পরিচালক মতিউর রহমোনের প্রভাবে কোম্পানি সেক্রেটারি পদ বাগিয়ে নেন। গড়ে তোলেন শক্তিশালী আওয়ামী সিন্ডিকেট। তার স্ত্রী সন্তানেরা সবাই ইংল্যাণ্ডে থাকেন। সুন্দরী মেয়েদের ম্যানেজারসহ ভালো পোস্টিং দিয়ে তাদের সাথে সখ্য গড়ে তোলেন। একবার নাড়ি কর্মকর্তাসহ ধরাও খেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।।
আশরাফুল হায়দার চৌধুরী পিংকু, জিএম, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা। তিনি পারিবারিকভাবে আওয়ামীলীগের লোক, তার ভাই ফেনীর সাবেক এমপি আলাউদ্দীন নাসিম। জুলাই আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যার দায়ে উত্তেজিত জনতা তাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়। আশরাফুল হায়দারের পরিবারের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। তিনি এখনো ভয়ে বাড়ি যেতে পারেন না।
সোনালী ব্যাংক আওয়ামী বলয়ের আরেক জিএম আলী আশরাফ আবু তাহের। তিনি চট্টগ্রাম অঞ্চলের জিএম থাকা অবস্থায় সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভিন্নমতের লোকদের জন্য ছিলেন এক মূর্তিমান আতংকের নাম। তিনি বেছে বেছে আওয়ামী ঘরানার লোকদের ঝিভিন্ন শাখার ম্যানেজার এবং লোভনীয় পোস্টিং দিয়ে দিতেন।
আর ভিন্নমতের কর্মকর্তাদের দুরদুরান্তে বাজে পোস্টিং দিয়ে হয়রানি করতেন। রংপুরের ডিজিএম থাকা অবস্থায় সন্ধার পর নারী কর্মকর্তাদের নিয়ে ভ্রমণে বের হতেন। অভিযোগ আছে, এমডি কনফারেন্স বাদ দিয়ে অসুস্থতা দেখিয়ে রংপুরের এক নারী কর্মকর্তার বিয়েতে গিয়েছিলেন, যার সাথে তার অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ রয়েছে। কাস্টমারের জমা দেয়া হজ্জের টাকা মেরে হজ্জ্ব করার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু তার আওয়ামী প্রভাব এতই বেশি যে তার বিরুদ্ধে কোন ঘটনাতেই ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
তিনি মাগুরার সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের ঘনিষ্ঠ বন্ধুর পরিচয়ে সোনালি ব্যাংকে পুরোটা সময় প্রভাব খাটিয়ে চলেছেন। তাদের শক্তিশালী বলয়ের বাইরে কেউ মুখ খুলতে পারেন না। আওয়ামী প্রভাবের কারনেই ব্যাংকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমতার কেন্দ্র এমডি সেক্রেটারিয়েটে পোস্টিং নিতে পেরেছেন।
মোস্তফা এবং মাসুম, পি আর ডি-ছাগল কান্ডের মতিউর রহমানের ঘনিষ্ঠ। উভয়ের বাড়ি বরিশাল অঞ্চলে। আমির হোসেন আমুর ভগ্নিপতি হিসেবে মোঃ আফজাল করিম এর সোনালী ব্যাংকে এমডি হিসেবে যোগদানের পর থেকে বরিশাল অঞ্চলএর আওয়মী সমর্থিত কর্মকর্তাদের যেন পোয়া বারো অবস্থা তৈরি হয়।
আফজাল করিম তার চারপাশে নিরাপত্তা বেস্টনী তৈরি করেন নিজের লোকজনের নিয়োগ ও পদোন্নতি দিয়ে। তার অংশ হিসেব পিআরডিতে মাসুম এবং মোস্তফাকে বদলী করেন। স্বৈরাচার হাসিনার দোসর, ১৬ বছরের সুবিধা পাওয়া সাংবাদিকদের ব্যবহার করে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিউজ করাই তাদের একমাত্র কাজ হয়ে উঠেছে। একজন সাবেক এমডির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মিথ্যা নিউজ ছপিয়ে মাসুম সবার নজরে আসেন। যেকোন কর্মকর্তাকে ঘায়েল করতে তার নামে মিথ্যা নিউজ ছাপিয়ে দেন। একাজে তাকে সহযোগীতা করেন পি আর ডি থেকে বিজ্ঞপন পাওয়া কিছু হলুদ সাংবাদিক।
কিছু অসাধু, স্বৈরাচার এর সুবিধাভোগী সাংবাদিককে ব্যাবহার করে তারা কয়েকজন জিএমকে জিম্মি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কয়েকজন জিএম এর বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ এবং সজানো কাহিনি বানিয়ে তা ছেপে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মাসিক চাদা আদায়ের ন্যাক্কারজনক অভিযোগ রয়েছে মাসুমের বিরুদ্ধে।। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও মানুষের সাথে খারাপ আচরণ এবং দুর্নীতির দায়ে সে চাকরি হারান।। সোনালী ব্যাংকে শত অপকর্ম করার পরও শুধু আওয়ামী লীগের সাপোর্ট নিয়ে পার পেয়ে যান। তিনি সোনালী ব্যাংক বংগবন্ধু পরিষদ এর একটি সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত আছেন।
সাবেক এমডি আফজাল করিমকে ব্যবহার করে বদলি বানিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করেছেন। নতুন এমডি শওকত আলী জোগদানের পরই তার কান পড়া দিয়ে বিদ্যমান আওয়ামী সিন্ডিকেটের বলইয়ে ঢুকিয়ে নেন। বংবন্ধু পরিষদের কর্মকর্তাদের সকল অপকর্ম হাইড করে তাদের গুনগান গাইয়ে এমডিকে বশ করে ইতোমধ্যে আওয়ামী বলয়ে ঢুকিয়ে ফেলেছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট রাজনৈতিক পট পরির্বতন হলেও বহাল তবিয়তে আছেন সোনালী ব্যাংক বরিশালের জিএমসহ আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তারা। তাদের দাপটে ১৬ বছর ধরে অসহায় হয়ে আছেন গত পদ বঞ্চিতরা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারী হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তারা আছেন বিপদে। সোনালী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তার কাছ থেকে জানা গেছে, ব্যাংকের জিএম গোপাল চন্দ্র গোলদারের বিশেষ সহযোগিতায় জিএম অফিস বরিশাল, প্রিন্সিপাল অফিস ইস্ট ও ওয়েস্টে এ পদায়ন করেছেন। গোপাল চন্দ্রের বিশেষ ঘনিষ্ঠ দেবাশীষ কুণ্ডের পরামর্শে বরিশাল সিটির সকল শাখায় আওয়ামীলীগের সমর্থনপুষ্ট ও সোনালি ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতাদের রাখা হয়েছে সেখানে। এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
ইস্ট ও ওয়েস্টের ডিজিএম বিভাষ চন্দ্র, পঙ্কজ গুহ, পরিমল বারই, তিমির রঞ্জন, শুভ সাহা, অসীম, দিপু রানী, শ্রাবণী, সুব্রত, বিজন দাস, অভিজিৎ, উজ্জ্বল, সুমন দাস, সুসমা সহ আরও অনেকে গোপাল চন্দ্র গোলদারের বিশেষ পছন্দের এবং তাদের পদায়নও করেছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা গোপাল চন্দ্র গোলদার। জিয়া পরিষদের এক নেতা বলেন, তাদের কার্যকলাপ দেখলে মনে হয় এখনো আওয়ামী ক্ষমতায় আছে। বিগত দিনে ক্ষমতার দাপট যেভাবে দেখিয়েছে ঠিক এখনো ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে।
সোনালি ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের ওপর ভর করে বিভিন্ন অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে যারা পছন্দের শাখায় চাকরি করে আসছে, তারাই এখন জিয়া পরিষদে ঠাঁই নিতে মরিয়া। বর্তমান পিএস আবু তায়েবসহ একাধিক কর্মকর্তা। এছাড়াও আছেন শরিফ আল মামুন ( ম্যানেজার গুটিয়া শাখা) , আবদুল্লাহ আল মামুন মুরাদ সিনিয়র অফিসার (ম্যানেজার, চরামন্দি শাখা)।
যৌন হয়রানির অভিযোগে অপসারন করা হলেও বরিশাল চক বাজার শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক প্রিন্স পারভেজকে নগরীর সাগরদী শাখার দায়িত্ব দেন জিএম গোপাল চন্দ্র গোলদার। ২০২০ সালে নারী সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রিন্স পারভেজকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।
ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর জিএম গোপাল চন্দ্র গোলদারকে প্রভাবিত করে করে প্রথমে আগৈলঝাড়া শাখায় ছয় মাস ব্যবস্থাপক হিসেবে থাকার পর পরে বরিশাল নগরীর সাগরদীতে ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগদান করেন তিনি। ২০২০ সালে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আবু হানিফের পরামর্শে তৎকালীন ডিজিএম গোলাম সিদ্দিক গন বদলির আদেশ দেন।
পরে বিপুল আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে বদলীর আদেশ স্থগিত হয়। আস্থাভাজনদের সুবিধাজনক স্থানে পদায়ন করতে বরিশাল জোনে গণবদলি করা হয় তখন। প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাদের বদলি করে ওই পদে বরিশাল নগরীর বাইরের বিভিন্ন শাখা কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয় । তখন থেকেই সোনালী ব্যাংকে বদলির মাধ্যমে অনুসারী কর্মকর্তাদের নগরীতে পদায়নের ব্যবস্থা করা হয়। সোনালী ব্যাংকের জিএম গোপাল চন্দ্র গোলদার বৈষম্যবিরোধী সমর্থক কাউকেই সহ্য করতে পারেন না।
বরিশাল সোনালী ব্যাংকের সেই সব আওয়ামী দাপুটে কর্মকর্তারাদের মধ্যে জিএম গোপাল চন্দ্র গোলদার (বরিশাল) ছাড়াও আছেন ডিজিএম-শাহ আলম, জিএম পিএস-আবু তায়েব, দেবাশীষ কুন্ডু ঝালকাঠি কোট বিল্ডিং শাখা, আওয়ামী পন্থী ব্যবস্থাপকআবদুল্লাহ মুরাদ (চরামদ্দি শাখা বরিশাল), সাজ্জাদ হোসেন (কামারখালি শাখা বরিশাল), পারভেজ হোসেন (সাহেবের হাট শাখা), নজরুল ইসলাম (জয়েন্ট কাষ্টডিয়ান), পঙ্কজ গুহ (পিডি) কপোরেট শাখা।