নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নির্দেশনা দেন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
তিনি জন্মশতবার্ষিকীর পুনর্বিন্যাস করা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পর্কে জেলা প্রশাসকগণকে ধারণা দিয়ে বলেন, জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আগামী ১৭ মার্চ যে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট বিশ্ব পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী জনসমাগম পরিহারের প্রেক্ষিতে তা আপাতত হচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুশাসনের কথা উল্লেখ করে ড. কামাল আবদুল নাসের জানান, জনসমাগম ব্যতিরেকে দেশ-বিদেশের অগণিত মানুষ যেন উদ্বোধনী আয়োজনে সম্পৃক্ত হতে পারেন, সে লক্ষ্যে টেলিভিশন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান একযোগে সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জনসাধারণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ১৭ই মার্চের উদ্বোধন অনুষ্ঠান মিডিয়ায় সম্প্রচারসহ জেলা পর্যায়েও অন্যান্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো নির্দেশনাগুলো অনুসরণের আহ্বান জানান তিনি। এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-
১. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় উৎসবমুখর পরিবেশে, তবে জনসমাবেশ পরিহারপূর্বক সীমিত আকারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন;
২. ১৭ মার্চ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে তোপধ্বনি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে);
৩. সকল সরকারি, বেসরকারি ভবনে ১৭ মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলন;
৪. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন;
৫. মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন;
৬. দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাবার/মিষ্টান্ন বিতরণ;
৭. হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার ও এতিম খানায় মিষ্টান্ন বিতরণ ও উন্নতমানের খাবার পরিবেশন;
৮. স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহহীনদের মধ্যে গৃহ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ;
৯. জনসমাবেশ ব্যাতিরেকে আতশবাজির আয়োজন;
১০. মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতর ও প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তাদের ভবনে ১৭ মার্চ থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি, উদ্ধৃতি, জন্মশতবার্ষিকীর লোগো সংবলিত সামঞ্জস্যপূর্ণ মাপ অনুযায়ী ড্রপডাউন ব্যানার ব্যবহার ও মুজিববর্ষ উদযাপনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যানার, ফেস্টুন ইত্যাদির মাধ্যমে সজ্জিতকরণ;
১১. সকল সরকারি-বেসরকারি সংস্থা/প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা, সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা;
১২. বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উৎসবমুখর পরিবেশে নিজস্বভাবে সীমিত আকারে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, যেমন: আলোচনা অনুষ্ঠান, দেয়াল পত্রিকা/স্মরণিকা প্রকাশ, কুইজ, রচনা, বিতর্ক ও চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, মিষ্টান্ন বিতরণ, দুপুরের খাবার ইত্যাদির আয়োজন;
১৩. ওয়েবসাইটে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর নির্মিত ভিডিও ক্লিপিংস/ফুটেজ প্রচার;
১৪. জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয়ভাবে স্যুভেনির, গ্রন্থ, স্মরণিকা, দেয়াল পত্রিকা ইত্যাদি প্রকাশ;
ভিডিও কনফারেন্সে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আ. গাফফার খান, জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটির কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।