বিশেষ প্রতিবেদক : শত বাধাবিপত্তি এড়িয়ে সাংবাদিকতা করেই যাচ্ছেন মূল ধারার সাংবাদিকরা, একাধিক মামলা আবার কেউ কেউ অর্ধশত মামলা কাঁধে নিয়েও বাংলাদেশে সাংবাদিকতা ও সম্পাদনা করছেন এমনও নজির রয়েছে বাংলাদেশে। দুই দশকের সাংবাদিকতার মতন এমন বর্বরতার সাংবাদিকদের উপরে এর আগে কখনো হয়নি। সাংবাদিকরা হাড়িয়েছেন লিখনির স্বাধীনতা দুই দশকের স্থায়ী অস্থায়ী সব সরকার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে চালিয়েছেন সাংবাদিকদের উপরে বর্বরতার বুল ড্রেজার নামক মামলা দিয়ে, হামলা চালিয়ে আবার গুম, খুন করেও।

অসংখ্য স্বনামধন্য সাংবাদিকদের, গুম হওয়াটাও ছিল মামুলি ব্যাপার মাত্র, গুম হয়েও আবার অনেকেই আয়না ঘরের বাসিন্দাও হতে হয়েছিলো, জেল হাজতের বিষয় না বললেই নয়। সাংবাদিকতায় বিশ্বের তিন নাম্বার ঝুঁকিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ। অন্যান্য দেশে দুই দেশের যুদ্ধ ক্ষেত্রে নানান ভাবে সাংবাদিকদের মৃত্যু”র সংবাদ পাওয়া যায় কিন্তু বাংলাদেশে সংবাদ প্রকাশের কারণে কিংবা সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করার কারণে প্রায় অর্ধশত সাংবাদিক হত্যা হয়েছে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে দুই দশকে। মামলা হামলাসহ সাংবাদিক নির্যাতিত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার বলে ধারণা করা যাচ্ছে। হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার প্রায় দুই হাজার সাংবাদিক নানান ভাবে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাংলাদেশে গত দুই দশকে অসংখ্য সাংবাদিক গুম, খুন, নির্যাতন হয়েছেন আর মামলার আসামি হয়ে কারাবাস করেছেন অনেকেই। শুধু তাই নয় সাংবাদিকদের পরিবারও এই থেকে রেহাই পায়নি অসংখ্য সাংবাদিক পরিবার হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সাইভার মামলার শিকার না হলেও নানান মামলার শিকার হয়েও জেল হাজতে থাকতে হয়েছে অনেক সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদেরকে । সব চেয়ে বেশি বর্বরতার শিকার হয়েছে ২০০৭ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে। সাংবাদিক গুম করে আয়না ঘরে রাখা, নির্বিচারে গুলি করে হত্যা, কখনো কখনো দলীয় কর্মীদের হাতে নির্যাতন করা সহ খুন হতে হয়েছে অসংখ্য সাংবাদিকদের। আর সংবাদ প্রকাশের কারণে অসংখ্য মামলার হয়েছে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যার পরিসংখ্যা এখনো পর্যন্ত কোন সংস্থাই সঠিক ভাবে দেয়নি তবে ধারণা করা যাচ্ছে প্রায় ১০ হাজার এর বেশি হতে পারে।
তবে আ.লীগ সরকারের আমলে অসংখ্য সাংবাদিক জেল হাজত এর ঘানি টানতে হয়েছে। অনেকে আবার সাজাও ভোগ করতে হয়েছে। বর্তমানেও অসংখ্য সাংবাদিক জামিনে আছেন হাজিরা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে সাংবাদিকদের কত জন সংবাদ প্রকাশের কারণে কারাবাস করছেন সেই বিষয়ে এখনো জানা যায়নি বর্তমান সরকারও এর বিষয়ে শুরুতে গুরুত্ব দিলেও এখন আর তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে তেমন দেখাও যাচ্ছে না। তবে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে ৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে, এখন পর্যন্ত ২৯৪ জন সাংবাদিকের নামে একাধিক মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১৭জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাত্র ৩জন সাময়িক জামিনে মুক্তি পেয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে সংবাদ প্রকাশের কারণে যত মামলা হয়েছে শতকরা ৯৯টি মামলা আওয়ামিলীগ এর দলীয় লোকদের দেওয়া মামলা। দুঃখজনক হলেও সত্য এই যে আওয়ামিলীগ এর দলীয় কেহ সংবাদ প্রকাশের কারণে কোন মামলা দিলেই সেই সব মামলা কখনো খারিজ হয়নি তদন্ত কর্মকর্তাকে সংবাদের চেয়ে আরও বেশি ডকুমেন্টস দিও সেই সব মামলা থেকে কোন সাংবাদিক রেহাই পেয়েছেন এমন নজির নেই! পুলিশ, ডিবি, পিবিআই, সিআইডি সবাই একচেটিয়া আওয়ামিলীগ সরকার দলীয় খোশামোদ করেই গেছেন।
স্বাধীন দেশের সাংবাদিকতাকে গলা টিপে হত্যা করার মতন কর্মকাণ্ড ছিল আ. লীগ সরকারের। ২০০৪ সালের বিএনপির আমলে খুলনার সাংবাদিক মানিক সাহার হত্যা কাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিলো সাংবাদিকতায় চরম দুর্ভাগ্যের যাত্রা। মানিক সাহার হত্যা কাণ্ডের যিনি প্রতিবাদ জানাবেন হুমায়ূন কবীর ভালু তিন দিনের মাথায় তিনিও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। ২০০৫ সাথে গোতম সাহা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন।
২০০৭ সালে আ. লীগ এর আমলে রাঙ্গামাটিতে সাংবাদিক হত্যা কাণ্ডের মধ্য দিয়েই শুরু হয় চরম বর্বরতা। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের সীমা-হীন দুর্ভাগ্যের যাত্রা শুরু হয় মামলা, হামলা, নির্যাতন ও গুম, খুনের মধ্য দিয়ে দমন পীড়নের চরম মাত্রায় পৌঁছান আ.লীগ সরকার। কত জন সাংবাদিক হত্যা হয়েছে তার তালিকা এখনো পর্যন্ত কোন সংস্থা কিংবা কোন সংগঠন দিতে পারেনি, তবে আমরা ৩০ জন সাংবাদিক হত্যা হয়েছে বলে জানতে পারি দু-দশকে।
২০১০ সালে সাংবাদিক সাগর ও রুনী হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের মুখোশ উন্মোচন হলেও সাগর ও রুমী’র হত্যাকাণ্ডের বিচার ১৪ বছরেও হয়নি। পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে হামলার শিকার হয়ে সাংবাদিক কারো বিরুদ্ধে মামলা করে সঠিক বিচার পেয়েছেন এমন নজির খুব কম রয়েছে বাংলাদেশে। তাই সাংবাদিকরা একটি স্লোগান দেন আমরা বিচার পাই না বলে আমরা বিচার চাই না।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সাহসী ও সেরা বাংলাদেশের সাংবাদিকতা তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। মামলা, হামলা, গুম, খুন হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে সাংবাদিকরা থেমে নেই। তবে সাইবার মামলা গুলির কারণে সাংবাদিকরা স্বাধীন মত প্রকাশ করতে পারছিলেন না, এখনো পারছেন না। সারা দেশে সাংবাদিকদের সাথে কথা বললে সবাই একটা বাক্য এই সরকার স্বাধীন মত প্রকাশের কথাই বলছেন কিন্তু স্বাধীন মত প্রকাশের কোন সুযোগ নেই এখনো আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের তৈরি করা আইন এখনো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে। ৫ আগস্ট ২০১৪ইং তারিখে আওয়ামী সরকার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পরেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও এখন সাইবার মামলা হচ্ছে।
কুমিল্লায় বিএনপি’র দলীয় নেতাদেরকে উদ্দেশ্য করে বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের কারণেও মামলা করেছিলেন আমোদ পত্রিকার সম্পাদক মহিউদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে। নির্যাতনের সংখ্যার কোনো হিসেব নেই আগের চেয়ে ২০ গুন বেড়েছে। এখন সাইবার মামলা না হলেও ভুয়া আর গায়েবি মামলার শিকার হচ্ছে অসংখ্য সাংবাদিক। জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলা কালে ০৭ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৯৪জন সাংবাদিকের নামে একাধিক মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১৭জন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাত্র ৩ জন সাময়িক জামিনে মুক্তি পেয়েছে।
জুলাই ও আগস্ট আন্দোলনের অসংখ্য হত্যা মামলার আসামি হয়েছেন সাংবাদিক ভিত্তিহীন ভাবে। কুমিল্লা দেবিদ্বার থানায় কয়েকটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে ৪ জন সাংবাদিকে আসামি করা হয়েছে তার মধ্যে একজন সাংবাদিক বেলাল ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তার পায়ের অপারেশন হয়েছিলো আন্দোলনের আগে থেকে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় মামলার আসামি হয়েছেন তা কি ভাবা যায়? সরজমিনে গিয়ে জানা যায় ঐ সাংবাদিক বিএনপি করতেন সে যদিও আন্দোলন থাকতেন তাহলে তো ছাত্রদের পক্ষে সরকারের বিপক্ষে সরকার পতনের বিরুদ্ধেই আন্দোলন করতেন সে কি ভাবে হত্যা মামলার আসামি হয়?
শুধু যে কুমিল্লায় এই ঘটনা ঘটেছে তাই নহে চট্টগ্রামে থানা জ্বালাও পোড়াও মামলাতেও আসামি রয়েছে সাংবাদিক এমন সারা দেশে একই চিত্র। সাংবাদিকদের সাইবার মামলা সরকার খারিজ করে দেবেন বলাতে না বলাতেই এখন আর কেউ সাইবার মামলা না দিয়ে চাঁদাবাজি সহ অন্যান্য মামলা সাজিয়ে মামলা করছেন। দাউদকান্দি তিতাসে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীর বালু উক্তলনের বাঁধা দেওয়াতে ঐ অবৈধ বালু বেবসায়ী পক্ষে মামলা নিয়েছেন ওসি কিন্তু উক্ত মামলায় আসামি করা হয়েছে দু”জন সাংবাদিককে।
অনুসন্ধানে জানা যায় যাদের সাথে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীর ঝামেলা হয়েছে তাদেরকে মামলা দিলে তাদের পরিবারের দু”জন সাংবাদিক ঝামেলা করবেন তাই দু”জন সাংবাদিককে আর ছাড় দেওয়া হয়নি উক্ত মামলায় ওসি আসামি করেই মামলা দিয়েছেন ওসি মহোদয়! মামলাটি মোটা অঙ্কের টাকাও পেয়েছেন ওসি সাহেব। ওসির সাথে কথা বললে ওসি বলেন দুই সাংবাদিককে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে তদন্ত প্রতিবেদন থেকে। প্রশ্ন থাকে যে আসামি কেনই করলেন আর অব্যাহতি কেন দেবেন যদি দুই সাংবাদিক ঘটনার সাথে জড়িত হয়ে থাকে?
এছাড়াও চট্টগ্রাম প্রতিদিন এর সম্পাদক আয়ন শর্মাকে করা হয়েছে হত্যা মামলার আসামি! ইস্কন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী”কে আদালতে উঠানোর সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার আসামি করেন আয়ন শর্মাকে কিন্তু চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সম্পাদক সেই দিন চট্টগ্রামেই ছিলেন না তিনি ছিলেন ঢাকাতে। আয়ন শর্মার মামলার বিষয় সাংবাদিক সমাজ চরম নিন্দা জানালেও সরকারের কানে যায়নি যাবেই বা কি ভাবে সরকার এখন মহা ব্যস্ত। সরকার সেটাই দেখেন, শুনেন ও করেন যখন তারদের কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করে দাবিদাওয়া নিয়ে আজির হয় তখনি পূর্ণ হয়। তখন আর কোনো দাবিদাওয়া অপূর্ণ থাকে না। আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আসা সরকার যেন আন্দালনে বিশ্বাসী আন্দোলন ছাড়া দাবিদাবা পূরণের প্রশ্নই যেন আসে না এই সরকারের।
সাতক্ষীরায় ৫-৮-২০২৮ইং আগস্ট তারিখে ছাত্র মিছিলে হামলা চালানোর কথা উল্লেখ করে আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের আসামি বানিয়ে সদর থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারে দৈনিক সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক হাবিবুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। এজাহার দাখিলের পর সেই কপি নিয়ে আশাশুনির স্বঘোষিত সমন্বয়ক রিফাত সাতক্ষীরা শহরে ঘুরঘুর করছেন, হাজির হচ্ছেন আসামিদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ওই মামলা থেকে সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক হাবিবুর রহমানের নাম বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি, বিনিময়ে দাবি করছেন দুই লাখ টাকা চাঁদা।
সমন্বয়ক দাবিদার এ চাঁদাবাজ রিফাতকে ছাত্রদলের নেতা বলে দাবি করেছিলেন আশাশুনি উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবু জাহিদ সোহাগ তিনি ওই চাঁদাবাজ দুর্বৃত্তকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ্দ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে সাতক্ষীরা সদর থানার একজন ইন্সপেক্টর জানান, এজাহার লিখে থানায় জমা দিয়ে আবার তা সংশোধনের কথা বলে এজাহার কপিটা নিয়ে গেছে রিফাত। এখন পর্যন্ত থানায় এসে এজাহারটি জমা দেয়নি। ভাগ্যে কথিত সমন্বয়ক রিফাত এজাহার সংশোধন এর নামে এজাহার নিয়ে গিয়েছিলেন আর ধরা খেয়েছেন নয়তো দৈনিক সাতনদী পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক হাবিবুর রহমানকেও আওয়ামিলীগ এর দোসর হিসেবেই কলঙ্কের কালি নিয়ে বাকি জীবন দোসর সম্পাদক হিসেবে বাঁচতে হতো।
এখন সাংবাদিকতাকে দমিয়ে নিজেদের অপকর্ম করে বেড়াতেই সাংবাদিকদেরকে পথের কাটা মনে করেই বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে দিচ্ছেন সাংবাদিকদেরকে। সাইবার মামলার চাইতেও ভয়ংকর ভয়ংকর রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় জড়িয়ে দিচ্ছেন সাংবাদিকদেরকে সাংবাদিকতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে। শুধু মামলাতেই সীমা-বদ্ধ নেই খাগড়াছড়িতে কালের প্রতিছবির সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিবারের উপরে হামলা চালান ও বাড়ি ঘর ভাঙচুরে করেন আ.লীগ সরকারের আমলে। আ.লীগ সরকার পতন হওয়ার পরেও বিএনপি”র ব্যানারে গিয়ে আ.লীগ”র দোসোরেরা আবর আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাড়িতে হামলা চালালেও এখনো পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
জুলাই আগস্ট এর আন্দোলনের তোপের মুখে পরে স্বৈরাচার সরকার শেখ হাসিনা পালানোর পরে অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বর্তমান সরকার সহ সকল রাজনৈতিক দল গুলি আ.লীগ সরকার অবৈধ সরকার বলছেন তাহলে কি অবৈধ মন্ত্রী সভায় সাইভার মামলায় সাংবাদিকদেরকে যুক্ত করা কি আদৌ বৈধ এই আইনটি? সকলে অবৈধ বললেও বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার এ-সব মামলা গুলি রাখবেন না এক মাস, আবার দুই সপ্তাহ সময়ও বেধে দিয়ে ৩ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সংস্কারের নামে নাটকীয়তা করেই যাচ্ছেন সরকার।
সরকার স্বাধীন মত প্রকাশের কথা বলছেন কিন্তু সাংবাদিকদের স্বাধীনতার নামে মুখে মাছের বড়শি করণের মন্ত্র দিয়ে। সেই মন্ত্র পাঠ করেই এখন সাংবাদিকেরা এখন রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার আসামি হচ্ছেন এতেও ছোট্ট একটি বানী শুনিয়েই যাচ্ছেন এইসব মামলা থাকবে না বলে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ দোসোরেরাও এমন মন্ত্র অসংখ্যবার শুনিয়েছেন, যে সাইবার মামলা সাংবাদিকদের জন্য প্রযোজ্য নয়।
সেই একি মন্ত্র কি এখন পাঠ করছেন এই সরকার। সাংবাদিকরা অবিভাবিক হীন বলেই এইসব মন্ত্র পাঠ করতে পারছে অভিভাবক থাকলে আর এ সব মন্ত্র পাঠ করতে পারত না কেউ। অভিভাবকহীন হওয়ার মূল কারণ সাংবাদিকেরা রাজনৈতিক দলের দালালির সাথে জড়িত তারা দালালি করে নিজেরা অর্থের ও সাম্রাজ্যের পাহাড় গড়ছেন। ইতোমধ্যে সাংবাদিকেরা রাজনীতির সাথে জড়িয়ে জুলাই অগাস্টেও ছাত্র আন্দোলনে সরকারের সাথে মিলে হত্যাকাণ্ডে সাহায্য করেছেন। সাংবাদিকতায় কেন রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হবে না?
সাংবাদিকদের চেয়ে রাজনৈতিক লোকদের প্রতি বেশি গুরুত্ব এই সরকারের যার নজির ইতি-মধ্যেই আমরা দেখতে পারছি যেমন রাতেক রহমান বিদেশে বসে থেকে সকল অসংখ্য মামলায় খালাস পেয়েছেন আরও সব মামলায় খালাস পাবেন এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। লুতফুর জামান বাবরের ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস আরও বাকি মামলা গুলিও খালাস পাবেন।
আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, হেফাজত ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা ছাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় সভাপতি জাকির খানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছে এছাড়াও সকল রাজনৈতিক নেতাদের মামলা খালাস হয়েছে ও হচ্ছে।
কিন্তু আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহামুদ্র রহমানকে কয়েক দিন জেল হাজত খাটতে হয়েছে সাইভার মামলা, হত্যা, ১০ ট্রাক অস্ত্র ও রাস্ট্রদেহী মামলার চেয় যেন ভয়ংকর মনে হচ্ছে তাই তো রাজনৈতিক নেতারা বিদেশে থেকেও মামলা খালাস পেয়েছেন কিন্তু মাহামুদুর রহমান কারাবাস’র পর জামিন পেয়েছিলেন। অভিভাবক হীন সাংবাদিকদের মামলার বোজা কমবে থাক দূরের করা বরন আরও বেশি বেড়েই চলছে সাইভার মামলার চেয় ভয়ংকর ভয়ংকর মামলায়।
গত মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সাইবার মামলা বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন আরও নাকি এক মাস সময় লাগবে এবং আইনটি গসামাজাও করতে হবে! অন্তবর্তীকালীন সরকার আরও কত সময় নেবেন তারা কেউ বলতে পারছেন না কিংবা গণমাধ্যম সংস্কার করতে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারাও বলতে পারেন বলে আমাদের মনে হয় না তাই তো এই আইন নিয়ে একের পর এক বিবৃতি দিয়েই যাচ্ছেন আপনারা সংস্কার করবেন এতো বিবৃতিতে মাতিয়া উঠেছেন সাবেক আ.লীগ সরকারও তো এমনি করতেন তাহলে গসামাঝা আর বিবৃতিতেই আপনাদের সময় কাটবে।
এই সব বিবৃতি দিতে নানান সময় আনুষ্ঠানিক আয়োজন করে সময় ও অর্থ্য অপচয় করার মানে কি? একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানে কি বক্তব্য দেওয়া হবে তার ছক আকতেও তো সময় আর অর্থের প্রয়োজন সাংবাদিকেরা কি সেটা আপনাদের কাছে জানতে চেয়েছেন? কাজের চেয়ে ঢাক-ঢোল বেশি পেটানোদেরকে সাংবাদিকেরা কামলা বলেন না বরন আমলাই বলেন।
এই দিকে অসংখ্য পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের অনুমোদন দিয়ে গেছেন সাবেক আ.লীগ সরকার একজন আবার একাধিক পত্রিকারও মালিক! সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার পিএস সে একাই ৪টি পত্রিকার মালিক তার বিরুদ্ধেও রয়েছে পত্রিকার সার্কুলেশন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাদের অভিযোগ। এমন গত সরকার মিডিয়া বাজেট সরকারের পা চাটা মিডিয়া গুলিকেই দিয়েছেন বাকি মিডিয়া গুলিকে কোল-ঠাসা করে রেখে ছিল। এইসব সংস্কার প্রয়োজন কিন্তু আবার সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদেরকে বেতন বার্তা দেওয়ার বিষয়ের দাবিটি যৌক্তিক। তবে যারা বেতন দিতে পারবেন তাদের মিডিয়া গুলি বন্ধ করে দিতেও বলা হচ্ছে।
যৌক্তিক কথা হলেও মিডিয়া গুলি কি ভাবে রোজগার করে বেতন দিতে পারে সেই দিকেও নজর দেওয়া জরুরি মিডিয়া আবার ব্যবসার দিকে ঝুঁকলে তখন আবার মিডিয়া ভিন্ন পথে হাটতেও পারে। তাই যৌক্তিক মিডিয়া গুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। যারা সম্পাদক তাদের ইনকাম কি ভাবে আসবে সেই দিকে নজর দেওয়া জরুরি কেন না সাংবাদিকদের বেতন কি ভাবে দেবেন। আবার কিছু কিছু সম্পাদকও আছে এক দুই হাজার টাকা দিলেই সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে দিচ্ছেন মাদক ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক, ছিনতাই কারী, রিকশা ড্রাইভারদেরকেও এদেরকেও চিহ্নিত করতে হবে।
পরিশেষে মিডিয়া সংস্কার চায় সকল সাংবাদিক ও সম্পাদকেরা। অনেক সাংবাদিক মনিশিরা বলছেন বন্দি দশা থেকে এখন সাংবাদিকেরা অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন তবে আসলে কি বন্দি দশার সাংবাদিকতা শেষ হয়েছে নাকি চরম বন্দির মুখে থেকে অবরুদ্ধ অবস্থায় সাংবাদিকতাকে পঙ্গু হচ্ছে তার কোন ব্যাখ্যা নেই কার কাছেই। অভিভাবক হীন সাংবাদিকরা স্বাধীনতা চায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে।