নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান কারোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে পেছাতে পারে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ। আগামী ৭ থেকে ৯ মের মধ্যে এ পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার প্রস্তাবনা রয়েছে। তবে গণপরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় তা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, ‘গণপরিবহন বন্ধ থাকায় প্রধান পরীক্ষকরা খাতা নিয়ে বোর্ডে আসতে পারছেন না। যদি আগামী সপ্তাহে অফিস ও গণপরিবহন খুলে যায়, তাহলে আমরা যথাসময়েই এসএসসির ফল দিতে পারব।’
তিনি বলেন, আগামী ৭ থেকে ৯ মের মধ্যে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানোর চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। আগামী ৪ এপ্রিল বা আরও এক সপ্তাহ পরে দেশের সকল স্থানে পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। তবে গণপরিবতন বন্ধ থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, এসএসসি ফল প্রকাশের প্রায় সকল কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে উত্তরপত্রের স্ক্যানিং কাজ শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ফল প্রকাশের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
এসএসসি পরীক্ষা ফল প্রকাশে দেরি হলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম পিছিয়ে যেতে পারে কি-না-জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী ১০ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশে কিছুদিন বিলম্ব হলেও কলেজ ভর্তি কার্যক্রম পেছানো হবে না। তবে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনায় কিছুটা সময় কমিয়ে আনা হতে পারে।’ অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অন্তত ১৫ দিন পর থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করা হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
করোনার প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশর সব বিশ্ববিদ্যালয়। বন্ধ রয়েছে পরীক্ষাও। বছরজুড়েই থাকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা পরীক্ষা। কিন্তু করোনার কারণে সব পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালগুলোয় সামার সেমিস্টারের ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে।
জুলাই মাসে এইচএসসির ফল প্রকাশের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়। নভেম্বরে ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু এবার যথাসময়ে ভর্তি প্রক্রিয়া ও ক্লাস শুরু করা সম্ভব হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থীও সংকটে রয়েছেন।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়, ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএসসি ও কারিগরির তত্ত্বীয় এবং ১ মার্চ পর্যন্ত দাখিলের তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আর ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চের ব্যবহারির পরীক্ষা শেষ হয়।
এ বছর ২৮ হাজার ৮৮৪টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৯টি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ১৬ লাখ ৩৫ হাজার ২৪০ জন পরীক্ষার্থী ছিল। এর মধ্যে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৯১৮ জন ছাত্র এবং ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৩২২ জন ছাত্রী।
দাখিলে এবার ২ লাখ ৮১ হাজার ২৫৪ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালে ১ লাখ ৩১ হাজার ২৮৫ জন পরীক্ষা দেয়। বিদেশের আটটি কেন্দ্রে ৩৪২ জন শিক্ষার্থী এসএসসিতে অংশ নেয়।