সংসার টিকাতে দিলেন টাকা  : জীবন বাঁচাতে ৯৯৯ এ ফোন! 

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : “আমি শুধু সংসারটা বাঁচাতে চেয়েছিলাম, শেষমেশ বাঁচাতে হলো নিজেকেই”—এভাবেই চোখের জল আটকে নিজের বেঁচে ফেরার গল্প বললেন মোছাঃ ইলতি আক্তার (২৪)। যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মামলা দায়ের করেছেন এই তরুণী, যার কোলে এক বছর ছয় মাস বয়সী শিশুপুত্র।


বিজ্ঞাপন

বিয়ের তিন বছর না যেতেই এই তরুণীকে ভয়াবহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়। ইলতির অভিযোগ, স্বামী মোঃ রবিউল ইসলাম (৩১), শ্বশুর মোঃ আব্দুস সাত্তার (৫০) এবং শাশুড়ি মোছাঃ রাবিয়া খাতুন (৪৫) মিলে যৌতুকের জন্য তাকে দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিয়ে আসছিলেন।


বিজ্ঞাপন

প্রথমে ইলতি তার পরিবার থেকে তিন লক্ষ টাকা এবং একটি পালসার মোটরসাইকেল কেনার জন্য দুই লক্ষ টাকা এনে দেন। কিন্তু চাহিদা থেমে থাকেনি। পরে আরও ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করা হয়। টাকা না আনতে পারায় গত ২৫ মার্চ সকালে ইলতিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর স্বামী গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন বলে জানান ইলতি।


বিজ্ঞাপন

“আমার সন্তান পাশের ঘরে কাঁদছিল। আমি জানি না সে তখন কী বুঝেছে। আমি শুধু জানি—আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম তার জন্য,” বলছিলেন ইলতি।”

পরে তাকে ঘরে আটকে রাখা হয়। কোনোভাবে মোবাইল ফোনে বাবাকে ও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে। সঙ্গে ছিলেন ইলতির বাবা ও স্বজনরা। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

থানায় দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে ইলতির স্বামী মোঃ রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্ত শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতারের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। যার জিআর নং ১০/২০২৫ এবং সিআর নং ১০৫/২০২৫।

ইলতি আক্তার এখন পিত্রালয়ে অবস্থান করছেন। সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত এই মা বলেন, “সব সহ্য করেছিলাম ওর জন্যই। কিন্তু একদিন ওকে আমার লাশ দেখতে হতো—সে ভয়টা আর নিতে পারছিলাম না।”


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *