নিজস্ব প্রতিনিধি (কুমিল্লা) : কুমিল্লার লাকসামে পুত্রবধূকে পরকীয়া প্রেম বাঁধা দেওয়ায় ধারালো ছুরি বুকে আঘাত ও ব্লেড দ্বারা শ্বশুরের পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যার দায়ে পুত্রবধূকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে কুমিল্লার আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন ২০২৫) দুপুর ১২টায় কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক মোছাঃ ফরিদা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোছাঃ তাসলিমা আক্তার কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আশকামতা গ্রামের মোঃ বিল্লাল হোসেন এর স্ত্রী।
মামলার বিবরণে জানাযায়- ভিকটিম মোঃ চাঁন মিয়ার ছেলে মোঃ বিল্লাল হোসেন ঢাকায় একটি কারখানায় চাকুরী করার সুবাদে বিল্লাল ঢাকায় থাকতেন। সেই সুযোগে পুত্রবধূ বিভিন্ন লোকের সাথে পরকীয়া প্রেম জড়িয়ে পড়ে। পুত্রবধূকে পরকীয়া প্রেম বাঁধা দেওয়ায় ২০১৪ সালের ১০ জুলাই রাত সাড়ে ১০টা থেকে পরদিন দিবাগত রাত ৩:১৫ ঘটিকার মধ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে বুকে আঘাত করে এবং ব্লেড দ্বারা শ্বশুর মোঃ চাঁন মিয়া (৭০) এর পুরুষাঙ্গ কেটে হত্যা করেন পুত্রবধূ মোছাঃ তাসলিমা আক্তার (৩০)।

এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ১১ জুলাই কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আশকামতা গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে মোঃ বাবুল মিয়া (৩৫) বাদী হয়ে ভিকটিমের পুত্রবধূ অর্থাৎ মোঃ বিল্লাল হোসেন এর স্ত্রী মোসাঃ তাসলিমা আক্তার (৩০) সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জনকে আসামি করে লাকসাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করিলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ এনামুল হক ঘটনার তদন্তপূর্বক আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন (যাহার অভিযোগপত্র নং-১৪৫)।

তৎপর মামলাটি বিচারে আসিলে ২০১৫ সালের ২৯ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় চার্জগঠনক্রমে রাষ্ট্রপক্ষে ডজনখানেক সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে দঃ বিঃ আইনের ৩০২ ধারার বিধানমতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড; অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

উল্লেখ যে, ভিকটিম চাঁন মিয়া স্থানীয় একটি মসজিদের মোয়াজ্জেম ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিজ্ঞ কৌশলী অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন ভূইয়া। তিনি এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।