মোঃ বুলবুল ইসলাম, (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারোডোব। দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার মানুষ অতি কষ্টে পারাপার হতেন খেয়া নৌকায় । ব্রিজের অভাবে দেড়শো পরিবারের প্রায় এক হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে অতি কষ্টে খেয়া পারাপার হতেন। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন পড়তেন দুর্ভোগে। কৃষকেরা তাদের ফসল নিয়ে পারাপারে নিত্য কষ্টে পেতেন।

এসব মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে এডিপি প্রকল্প থেকে ৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে একটি কাঠের সেতু । কাঠের সেতুর পাশাপাশি তাদের জন্য করা হয়েছে অটোরিকশা মডিফাইড করে এ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থা।
আজ সোমবার ১৮ আগষ্ট, এই সেতু উদ্বোধন করেন কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা।

এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও নেই মাধ্যমিক কোন বিদ্যালয়। তাই স্কুল বা কলেজ করতে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়তে হতো। এখানে নেই চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা। নারী ও শিশু এবং অসুস্থ মানুষের দুর্ভোগ ছিলো চরমে।তাই যোগাযোগের অভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য থেকে অনেকটাই বঞ্চিত থাকতো এই অঞ্চলের মানুষ।

এই এলাকায় রয়েছে বিশাল ফসলি জমি। সেখানে উৎপাদন হয় ধান, গম, ভুট্টা,কলা ও সাকসবজি সহ নানান ফসল। তবে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত এসব ফসল যোগাযোগের অভাবে বিক্রি করতে বিপাকে পড়তেন। এই একটি কাঠের সেতু তাদের জীবনে বড় একটি আশা জাগাচ্ছে। তবে শুধু এই কাঠের সেতুটি নয়, তারা স্থায়ী একটি সেতু এবং সংযোগ শড়কের দাবি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
এই এলাকার বাসিন্দা মোমেনা বেগম বলেন,’ আমাদের এখানে ব্রিজ না থাকায় আমরা অনেক কষ্ট করে পারাপার হতাম। কেউ অসুস্থ হলে এখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না । ছেলে-মেয়েরা ইস্কু-কলেজ যেতো অনেক কষ্টে। তবে এখন এই কাঠের সেতু পেয়ে আমরা অনেক খুশি।’
এই এলাকার কৃষক আব্দুর রহিম বলেন,’ আমরা এখানে বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপাদন করি। আমরা আমাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পেতাম না। যাতায়াতের সুবিধা না থাকায় কোন পাইকার এখানে আসতো না। কিংবা আমরাও আমাদের ফসল বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে পারতাম না। তবে এই কাঠের সেতু আপাতত একটি সমাধান। আমরা চাই এখানে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হোক। যাতে আমরা ন্যায্য দামে ফসল বিক্রি করতে পারি।
উপসহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) জুল জালাল একরাম বলেন, ইতিমধ্যে ১ কিলোমিটার সংযোগ শড়কসহ সহ ৮/৯ কোটি টাকা ব্যায়ে ৬০ মিটার লম্বা সেতুর প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে যা এক বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।
জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, ‘ চরের মানুষের আত্মসামাজিক উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।’