নিজস্ব প্রতিবেদক : পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের প্রেতাত্মা বিশেষ সুবিধাভোগি ও পলাতক সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ঘনিষ্ঠ সহোচর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা(ডিসিআরও) শাহজাহান আলী রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও দাপটের সাথে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দুর্নীতি করে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন,সরকারের রাজস্ব ফাঁকি প্রদান,বিভিন্ন কোম্পানী থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়,আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদোন্নতি গ্রহন,অধিনস্থ নারী সহকর্মীর সাথে অবৈধ সম্পর্কোত্তর ভ্রুণ হত্যা এবং চাকুরিচ্যুত করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
চলতি বছরের ২৯ জুন, দুর্নীতি দমন কমিশনের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ ডিএসসিসি’র এক কর্মচারির দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, পলাতক সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে ডিএসসিসিতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানাভাবে লুটপাট করেছেন শাহজাহান আলী।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আবার তাকে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর কর পরীবিক্ষণ শাখায় উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার (চ. দা.) দায়িত্ব দেওয়া হয়। অথচ ২০২২ সাল থেকেই তিনি এই পদবি ব্যবহার করে বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছ থেকে আর্থিকসহ নানা অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। নিজের ইচ্ছামতো কর নির্ধারণ করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিজে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন।

মাসে শাহজাহান আলী’র সর্বসাকুল্যে বেতন ৯৫ হাজার ৯৩৫ টাকা। বেতনের থেকে ব্যাংকের কিস্তি জমা দেন বেশি। সাথে বাড়ির কেয়ারটেকার,গাড়িচালকদের বেতন ও মেইনটেইন্যান্স খরচ তো আছেই। সম্প্রতি শাহজাহান আলী তার বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রী সাবিয়া সুলতানা মলিকে মূল্যবান হীরার নেকলেস ও আংটি উপহার দেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর আর্মি গলফ ক্লাবে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০ লাখ টাকা খরচ করেছেন বলে অভিযোগে দাবি করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে,রাজধানীর উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৯ নম্বর রোডের ৯৭ নম্বরে ৩ কাঠার প্লটটি ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর শাহজাহান আলী ও তার স্ত্রীর নামে দলিল রেজিস্ট্রি হয়।
দলিলে রেজিস্ট্রি খরচ কমাতে ও আইনি ঝামেলা এড়াতে ৩ কাঠা জমির মূল্য মাত্র ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা দেখানো হয়। তবে সেখানে স্থানীয়ভাবে প্রতি কাঠা জমির দাম প্রায় কোটি টাকা। এই জমিতে নির্মাণ করেন ৭ তলা বাড়ি। এরমধ্যে তৃতীয় এবং চতুর্থ তলা ডুপ্লেক্স। তথ্য বলছে, বৃহৎ এই বাড়িটির জন্য শাহজাহান আলী বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স দেন মাত্র ৩৩ হাজার টাকা। এছাড়াও শাহজাহান আলীর রয়েছে দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি।
ডিএসসিসি’র ডিসিআরও শাহজাহান আলীর নারী কেলেংকারীসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির ফিরিস্তি থাকবে পরবর্তি পর্বে।