মোঃ মিজানুর রহমান, (খুলনা) : আজ মঙ্গলবার ২৩ সেপ্টেম্বর, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তালবুনিয়ায় ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ইন্টিগ্রেটেড মাল্টি-ট্রফিক অ্যাকুয়াকালচার (আইএমটিএ) বিষয়ক একটি সংযোগ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ৫০ জন অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে ছিলেন প্রদর্শনী কৃষক, সহযোগী কৃষক, স্থানীয় মৎস্যজীবী, মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি এবং ওয়ার্ল্ডফিশ এর কর্মীরা।

এই কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য ছিল আইএমটিএ পদ্ধতির গুরুত্ব তুলে ধরা এবং টেকসই মৎস্যচাষের জন্য বিভিন্ন অংশীদারের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতা গড়ে তোলা। পরিবেশবান্ধব ও জলবায়ু সহনশীল এই পদ্ধতিতে মাছ, শামুক-ঝিনুক ও জলজ উদ্ভিদের মতো বিভিন্ন প্রজাতি একত্রে চাষ করা হয়, যা পানির মান উন্নয়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ওয়ার্ল্ডফিশ এর গবেষণা সহযোগী মো. শামীম হোসেন ঐতিহ্যবাহী চাষ ব্যবস্থায় আইএমটিএর গুরুত্ব ও পদ্ধতি ব্যাখ্যা করেন। তিনি কৃষকদেরকে মানসম্মত পোনা (PL) ও খাদ্য কোথায় এবং কীভাবে পাওয়া যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, “আইএমটিএ কেবল উৎপাদন বাড়ায় না, বরং পরিবেশ রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”

বটিয়াঘাটা সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সেলিম সুলতান মাঠ পর্যায়ের তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং কৃষকদের সঙ্গে সহযোগিতার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি কৃষকদের আইএমটিএ গ্রহণে উৎসাহিত করেন এবং মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কারিগরি সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন। ওয়ার্ল্ডফিশ এর গবেষণা সহকারী মো. সোহেল রানা কার্যক্রমটি সঞ্চালনা করেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী কৃষকেরা আইএমটিএ পদ্ধতি গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং মানসম্মত বীজ ও খাদ্যের যোগানদাতাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
এই সংযোগ কার্যক্রমটি এশিয়া-আফ্রিকা ব্লুটেক সুপারহাইওয়ে প্রকল্পের অংশ, যা যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ও ওয়ার্ল্ডফিশ এর সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রচার, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং টেকসই পদ্ধতির মাধ্যমে উপকূলীয় ও অভ্যন্তরীণ জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়ন করা।
এ ধরনের সংযোগ কার্যক্রম কৃষক ও অংশীদারদের মধ্যে জ্ঞান বিনিময়, বাজার সংযোগ বৃদ্ধি এবং টেকসই মৎস্যচাষ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, যা বাংলাদেশের নীল অর্থনীতি ও খাদ্য নিরাপত্তা লক্ষ্যে ইতিবাচক অবদান রাখবে।