নিজস্ব প্রতিবেদক : গাজীপুরের টঙ্গীর আউচপাড়া মোক্তার বাড়ি এলাকায় খাবারের প্রলোভনে একই বাড়িতে চার শিশু ধর্ষণ, ঢাকার ধামরাইয়ের চরচৌহাট এলাকায় ৩৫ বছরের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ এবং নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের বেগম উত্তর রামনারায়ণপুর গ্রামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ, দ্রুত গ্রেফতার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনিব্যবস্থা গ্রহণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবিও জানিয়েছে নারীর অধিকারের দাবিতে সোচ্চার সংগঠনটি।
মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গত ২৬ এপ্রিল গাজীপুরের টঙ্গীর আউচপাড়া মোক্তার বাড়ি এলাকায় ভিকটিম শিশুদের বামা-মা দিনমজুরের কাজে বাড়ির বাইরে থাকায় সন্ধ্যায় ওই চার শিশু বাড়ির উঠানে খেলাধুলা করছিল। এ সময় খাবার কিনে দেয়ার কথা বলে এক এক করে চারটি শিশুকে ডেকে এনে নিজ কক্ষে ধর্ষণ করে বেলায়েত হোসেন বেনু (৫০) ও তার সহযোগী বিল্লাল হোসেন (৪৭)।
ঘটনাটি জানাজানি হলে রাতেই কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালান অভিযুক্তরা। শিশুদের শারীরিক পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে গত ২৭ এপ্রিল ঢাকার ধামরাইয়ের চরচৌহাট এলাকার বাদশা মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধ ৩৫ বছরের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাদশা মিয়াকে তার ঘরে তালা দিয়ে ৬ ঘণ্টা আটকে রাখার পর স্থানীয় মাতব্বররা বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে রাত সাড়ে দশটার দিকে সালিস বৈঠক চলাকালে ধর্ষককে আটক করে ধামরাই থানা পুলিশ।
একইদিন বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের বেগম উত্তর রামনারায়ণপুর গ্রামের প্রবাসী ফেয়ার হোসেনের স্ত্রীর সঙ্গে তার ভাশুর শাহজাহান সাজুর বাগি¦ত-া হয়। একপর্যায়ে শাহজাহান ক্ষিপ্ত হয়ে দা নিয়ে গৃহবধূকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। গৃহবধূ মাটিতে লুটে পড়লে পালিয়ে যান শাহজাহান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা। বাড়ির অন্যরা মুমূর্ষু অবস্থায় গৃহবধূকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
দেশের এই সংকটময় সময়ে সারাদেশে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংতায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণসহ নির্যাতনের শিকার শিশু, প্রতিবন্ধী নারীকে সুচিকিৎসাসহ তাদের এবং হত্যার শিকার গৃহবধূর পরিবারের নিরাপত্তা ও বেআইনি সালিস বন্ধের দাবি জানান তারা।