নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা যখন দিনকে দিন বাড়ছেই, তখন বন্ধ থাকা কলকারখানা, দোকানপাট, অফিস-আদালত খুলে দেয়ার তোড়জোড় ভাবিয়ে তুলেছে মহামারি বিশেষজ্ঞদের।
সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর শুক্রবার পর্যন্ত মোট ৮,২৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
গত কয়েক দিনের আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় খানিকটা ওঠানামা থাকলেও প্রতিদিনই অন্তত কয়েক শ মানুষ এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
আর এই পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশে অধিকাংশ গার্মেন্টস কারখানা খুলেছে, দোকানপাটে মানুষ আরো বেশী সময় ধরে কেনাকাটা করতে পারছেন, সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে কিছু সরকারি দপ্তর।
বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়- কিছু মন্ত্রণালয় এবং আদালতের কার্যক্রম সীমিতভাবে চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও পরে তা বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ চূড়ায় পৌঁছাতে বরং আরো খানিকটা সময় নেবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ বাড়ার এই সময়টাতে হঠাৎ করে যদি লকডাউনের শর্ত শিথিল করা হয়, তাহলে ঝুঁকি বাড়বে বৈ কমবে না।
অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী রয়েছে, ফলে এই শহরে এ ধরণের ঢিলেঢালাভাবে লকডাউন কার্যকর রাখা হলে অনেক বেশি ঝুঁকি বাড়বে।
তিনি বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জকে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দরকার হলে এর জন্য একটা টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে, যারা কেবলমাত্র এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। কারণ মানুষ লকডাউন করলেই ঘরে থাকছে না, সেখানে শিথিল করা হলে মানুষ আরো উৎসাহ নিয়ে আগাবে। যেভাবে চলছে, তাতে খারাপ একটা অবস্থা হতে পারে।
আইইডিসিআর-এর ভাইরোলজিস্ট তাহমিনা শিরীন বলেন, লকডাউন কার্যকর না হওয়ার কারণে আমরা অর্থনৈতিকভাবেও লুজার (ক্ষতিগ্রস্ত) হলাম। আবার সংক্রমণও কমাতে পারলাম না।
তিনি বলেন, রেস্তোরায় ইফতারি বিক্রির অনুমোদন দেয়াটা ছিল অবাক করার মতো। আমি জানি না কেন ইফতারির দোকান কেন খুলে দেয়া হচ্ছে? এগুলো তো অবশ্যই সংক্রমণ বাড়াবে। এমনিতে উপসর্গ নেই, কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে এমন রোগীতে ভরে গেছে।