মহসীন আহমেদ স্বপন : বিশ্বে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দুই শতাধিক-অঞ্চলে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ। পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের সর্বশেষ আপডেটে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরও ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মারা গেলেন এক হাজার ৩০৫ জন। একই সময়ে নতুন করে আরও চার হাজার আটজনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮ হাজার ৪৮৯ জনে।
বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা অনলাইনে বুলেটিন পড়েন।
তিনি মোট ৬১টি ল্যাবের মধ্যে ৫৯টি ল্যাবের নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ হাজার ৯২২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ৫২৭টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো পাঁচ লাখ ৫১ হাজার ২৪৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও চার হাজার আটজনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৮ হাজার ৪৮৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৩ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৩০৫ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৯২৫ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৩৮ হাজার ১৮৯ জন।
গত মঙ্গলবারের (১৬ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা একদিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানির রেকর্ড। ১৭ হাজার ২১৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৮৬২ জনের দেহে। এটিও একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কমলেও শনাক্ত বেড়ে হয়েছে নতুন রেকর্ড।
বুধবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগী বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
ডা. নাসিমা বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।
ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে পরিসংখ্যান বিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্যমতে, প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৫০০শ’র বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৫০০’র মতো মানুষের। অপরদিকে সেরে উঠেছেন প্রায় ৪২ লাখ ৪২ হাজার ৭৭০ জন।