নিজস্ব প্রতিবেদক : মানবপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে বাংলাদেশি সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল কুয়েতে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হলেও তার বিষয়ে বরাবর সাফাই গেয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালাম। এমনকি এই সাংসদ কুয়েতে আটক হওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও দেশটির সরকারের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো উত্তর আদায় করতে পারেননি রাষ্ট্রদূত।
পাপুল’র অপরাধের সঙ্গে তার জড়িত থাকার কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। কুয়েত সরকারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে এই রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে ঢাকা। এমন তথ্যই পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে একথা বলতে শোনা যায়।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, ভিডিও ক্লিপ দুটি একটি টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারের অংশ।
ভিডিওতে সাংসদ পাপুল সম্পর্কে এখনও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো তথ্য পায়নি বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এসএম আবুল কালামের নিয়োগের চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষ দিকে। এ মাসেই তার মেয়াদ শেষে তিনি চলে আসবেন। নতুন রাষ্ট্রদূত কে হবেন তা-ও আমরা চূড়ান্ত করে ফেলেছি।’
রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, ‘কুয়েত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হলে তা অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।’
এদিকে মানবপাচারের ঘটনায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ড. মোমেন বলেন, ‘আমরা মানবপাচার ও অর্থপাচার বন্ধ করতে কত চেষ্টা চালাচ্ছি। এ সময় একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে কুয়েতে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কুয়েতের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলামের (পাপুল) বিরুদ্ধে মানবপাচার ও অর্থপাচারের অভিযোগ করা হয়েছে। তবে সে দেশের সরকার আমাদের অফিসিয়ালি কিছু জানায়নি।’
‘ওই দেশের সরকার যদি আমাদের এ সাংসদের বিষয়ে জানায় তবে আমরা আমাদের দেশের নিয়ম অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব ব্যাপারে অর্থাৎ মানবপাচার ও অর্থপাচারের বিষয়ে জিরো টলারেন্সে নীতি মেনে চলেন। সে যে দলেরই হোক না কেন, নিজের দলের হলেও তাকে শাস্তি পেতে হবে,’ যোগ করেন ড. মোমেন।
পাপুলের কুয়েতে অবস্থানের বিষয়ে বলতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এ সাংসদ কোনো সরকারি পাসপোর্ট নিয়ে সে দেশে যাননি। তিনি কুয়েতে ২৯ বছর ধরে ব্যবসা করেন। ওখানকার কোম্পানির সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সে দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া বাংলাদেশের এ সাংসদকে তারা সে দেশের একজন ব্যবসায়ী হিসেবে গ্রেফতার করেছে।’