নিজস্ব প্রতিবেদক : শীতকালে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে করোনা আছে এবং সেটা শীতকালে বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে অনেক আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছি। সারা বিশ্বে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৬৭৬ জন আক্রান্ত। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৪৭১ জনের অর্থাৎ ২.৮০ শতাংশ। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ১.৪ শতাংশ। অন্যদিকে ভারতে ১.৫৯, পাকিস্তানে ২.০৯, যুক্তরাজ্যে ১০.৩৬, বেলজিয়ামে ৯.৪৬, ফ্রান্সে ৬.৭১, জার্মানিতে ৩. ৪২, যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর হার ২.৮৯ শতাংশ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার আরো কম হতো যদি দেশের মানুষ ব্যাপক হারে পরীক্ষা করতো। পরীক্ষার হার নিয়ে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশে যে পরিমাণ পরীক্ষা করা হচ্ছে সেটা জাপানের কাছাকাছি। জাপানের জনসংখ্যার অনুপাতে যে পরিমাণ পরীক্ষা হয় তার থেকে একটু কম আছে বাংলাদেশে। কিন্তু জাপানের কাছাকাছি। করোনা মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে আমরা অনেক দেশের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাহামারির এই সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখে এশিয়ার প্রায় সব দেশকে পেছনে ফেলে ৫.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সেটা প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বের কারণে সম্ভব হয়েছে। এই করোনার মধ্যে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে আমাদের রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বিগত বছরের তুলনায় বেশি। করোনার মধ্যে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি জুলাই মাসে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি ছিল। এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও নানা ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করার কারণে।
করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় প্রচারণা ও সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে তথ্য মন্ত্রণালয় কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সচেতনতা বাড়ানোর জন্য আমরা প্রথম থেকেই কাজ করছি। করোনা শুরুর পর থেকে তথ্য মন্ত্রণালয় নানা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। সেই প্রচার শুধু সরকারি প্রচার যন্ত্রের মাধ্যমে করা হচ্ছে তা নয়। আমরা বেসরকারি টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকাগুলোকে আহ্বান জানিয়েছিলাম। তারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে। তারা নিজেরাও অনেক প্রচার করেছে।
ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, করোনা কখন যাবে আমরা সেটা কেউ জানি না। শীতকালে সেটি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা দেখেছি গত ডিসেম্বর মাসে যখন করোনা দেখা দিয়েছিল তখন যে সমস্ত দেশে শীত বেশি ছিল সেসব দেশে বেশি মানুষ মারা গেছে। সুতরাং শীতকালে করোনা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যেটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলেছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে জনগণকে ওয়াকিবহাল করেছেন। আমিও অনুরোধ জানাবো আমরা যেন এই ধারণায় না ভুগি যে, করোনা চলে গেছে। মনে রাখতে হবে করোনা আছে এবং সেটা শীতকালে বাড়তে পারে। স্বাস্থ্যবিধি আমাদের সবার মেনে চলা প্রয়োজন। আমরা অতীতে বা করোনার শুরুতে যেমন সতর্ক ছিলাম এখনও একই সতর্কতা আমাদের অবলম্বন করতে হবে।