নিজস্ব প্রতিনিধ : প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাথে এসএমপি পুলিশ কমিশনারের মত বিনিময়ের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে সোমবার সিলেট মহানগরীর উপশহরস্থ সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তর এর সম্মেলন কক্ষে “সিলেট জেলা প্রেসক্লাব”এর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া এন্ড কমিউনিটি সার্ভিস) বি,এম, আশরাফ উল্যাহ তাহের এর পরিচালনায় উক্ত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্মানিত পুলিশ কমিশনার মোঃ নিশারুল আরিফ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিঃ পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) পরিতোষ ঘোষ, অতিঃ পুলিশ কশিনার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব মোঃ শফিকুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জনাব তাপস দাস পুরকায়স্থ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত সভাপতি আল আজাদ, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহ দিদার আলম নবেল, নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ, সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাধারণ সদস্যগণ। সভার শুরুতে প্রত্যেকেই নিজ নিজ পরিচয় উপস্থাপন করেন। পরবর্তীতে সিলেট মহানগর এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে উপস্থিত প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ সময় তারা নগরীতে বসবাসকারী প্রবাসী-দূর্বলদের জায়গা ও বসতবাড়ির দখল, ফুটপাতের হকার, যানজট নিরসন, অবৈধ পার্কিং, অবৈধ সিএনজি, কিশোর গ্যাং, মাদক, জুয়া, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি, ওপেন হাউজ ডে, থানা এলাকার সীমানা নিয়ে বিভ্রান্তি, ভোর বেলায় যাত্রীসাধারণ কে পুলিশ কর্তৃক হয়রানি বন্ধ করণ, বিভিন্ন ঘটনা এবং মামলায় গণমাধ্যম কর্মীদের যেন হয়রানির শিকার না হতে হয় এবং সুষ্ঠু তদন্তের আশাবাদ ব্যক্ত করার,পুলিশ ফাঁড়ি সমূহের ইনচার্জের রদবদল করণ এবং প্রেস এর লোগো ব্যবহার করে অবৈধ কার্যক্রম সম্পাদন, অভিযোগ বক্স স্থাপন, অবাধ ও নির্বিঘ্নে পুলিশ এবং গণমাধ্যমের মধ্যে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের আদান-প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। উপস্থিত সকলের মতামত গ্রহণ শেষে সম্মানিত পুলিশ কমিশনার মহোদয় তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, সমাজ গঠনের মূল দায়িত্ব পালন করে সাংবাদিকরা। আর আমরা পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করি। সাংবাদিকদের লেখনীর ফলে সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার লাভ করে। সাংবাদিকগণ সমাজের কাছে সুপার হিরো। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বদা সক্রিয়। যে কোন অপরাধ গোড়া থেকে নির্মূল করার জন্য সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণের সহায়তা প্রয়োজন। হকার উচ্ছেদ সম্পর্কে পুলিশ কমিশনার বলেন ইতিমধ্যে সিলেট সিটি মেয়রের সহযোগিতায় হকারদের লালদিঘীরপাড়ে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে নগরী হকারমুক্ত হবে আশা ব্যক্ত করেন। যানজট ও অবৈধ পার্কিং নিরসনে এসএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে এর পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে সচেতন করার জন্য সংবাদকর্মীদের এ বিষয়ে লেখালেখি করার আহবান জানান। সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সমাধানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান। সিলেটবাসী,যাত্রী সাধারণের জানমাল নিরাপত্তায় সিএনজির গ্রিল লাগানোর বিষয়ে ২০১২ সালে সরকার ঘোষিত আদেশ সারাদেশের মতো সিলেটেও যথারীতি বাস্তবায়ন হবে বলে ব্যক্ত করেন। এছাড়াও এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে এম্বুলেন্স সমূহের পার্কিংয়ের শৃঙ্খলা শীঘ্রই নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, ইভটিজারদের তালিকা প্রস্তুত করে তা প্রতিরোধে তাদের অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করে তাদের সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে, যদি তাতে কাজ না হয় পরবর্তীতে আইনগত অ্যাকশন নেওয়া হবে। মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেন বলেন যদি কোন পুলিশ সদস্যও মাদকের সঙ্গে যুক্ত হয় তাহলে তাকে চাকুরিচ্যূত করে আইনের আওতায় আনা হবে এবং মাদকের বিরুদ্ধে সামগ্রিকভাবে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন শিলং তীর খেলার এজেন্টদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকসহ জনসাধারণের কাছ থেকে কাছে তথ্য থাকলে তা দিয়ে সহায়তা করার জন্য আহবান জানান। নগরীর লোকজনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেবা প্রদান করার জন্য প্রতিটি থানায় কিউ.আর,টি টিম গঠন করা হয়েছে। প্রবাসী ও দূর্বলদের জায়গাজমি ও বসতবাড়ি দখল সংক্রান্তে কোন অভিযোগ আসলে পুলিশ খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে অ্যাকশন নিবে বলে জানান। পুলিশ কর্তৃক জনসাধারণ কিংবা যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া এবং ভোরবেলা যাত্রীসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান। এসএমপির বিভিন্ন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইতোমধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে এবং শীঘ্রই বাকিদেরও পরিবর্তন করা হবে। তবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে জনবান্ধব পুলিশিং করার দেশাত্মবোধ ও অন্তরিকতা সবার মধ্যে আরও বৃদ্ধি করতে হবে। এসএমপি এবং মিডিয়ার মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও জনকল্যাণে সুসম্পর্ক বিরাজমান রয়েছে এবং পূণ্যভূমি সিলেটের সম্মান ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরন অর্থে তিনি সবার সম্মিলিত সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতি মাসের ০৮ তারিখে এয়ারপোর্ট থানা, ১২ তারিখ দক্ষিণ সুরমা থানা, ১৫ তারিখ জালালাবাদ থানা, ১৮ তারিখ মোগলাবাজার থানা, ২২ তারিখ কোতোয়ালী থানা, ২৫ শাহপরাণ (রহৎ) থানা প্রাঙ্গনে ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ওপেন হাউজ ডে তে পুলিশ কমিশনার নিজে উপস্থিত থেকে এবং কমপক্ষে উপ পুলিশ কমিশনার সাধারণ জনগণের অভিযোগ শুনবেন এবং উক্ত ওপেন হাউজ ডে তে সিলেট নগরীর সকল নাগরিকবৃন্দকে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য আহবান করেন। এছাড়াও কমিউনিটি পুলিশিং সংক্রান্তে বলেন কমিউনিটি পুলিশিং এর নতুন কমিটি গঠন করা নিয়ে অফিসাররা কাজ করছেন। পরিশেষে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন এবং পুলিশ ও সাংবাদিক একসাথে কাজ করার আহবান জানিয়ে উপস্থিত সবাইকে মধ্যাহ্নভোজনে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ জা