মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্তের বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব কর্মকাণ্ডে তার সহযোগিতা করছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জোসনা খাতুন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, শেখর রঞ্জন ভক্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং অভিযোগ রয়েছে, তিনি উল্টো শেখর রঞ্জনের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে বিধি বহির্ভূতভাবে একজন শিক্ষিকাকে ডেপুটেশনে বদলি করেছেন।
বদলিকৃত শিক্ষিকা ইতি হালদার ১১৯ নং বান্ধাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের মাত্র ছয় দিনের মাথায় মৌখিক ডেপুটেশনে সোনাইলবাড়ি আড়পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। অথচ শিক্ষা বিধিতে মৌখিক ডেপুটেশনের কোনো বিধান নেই। তিনি দীর্ঘ আড়াই মাস সেখানে দায়িত্ব পালন করেন। সাংবাদিকরা সরেজমিনে অনুসন্ধানে গেলে তড়িঘড়ি করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন ডেপুটেশনের চিঠি সংগ্রহ করা হয়। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

এছাড়া, শেখর রঞ্জন ভক্ত কোটালিপাড়ায় যোগদানের পরপরই প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে ৮৭ নং বাহির শিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শিলা রানী সাহাকে অবমুক্ত করেন। কিন্তু বাস্তবে ঐ বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক প্রতিস্থাপন হিসেবে যোগদান করেননি। বরং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রেরিত চিঠিতে মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয়েছে।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে একাধিক প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের স্লিপের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে নিয়মিত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে টাকা দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজেরাই কেনাকাটা করেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে জানালে তিনি বিষয়টিকে অপরাধ মনে করেন না বলেই জানান।
কোটালিপাড়ার সচেতন মহল মনে করছেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার এসব দুর্নীতির পেছনে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জোসনা খাতুনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ রয়েছে। তারা দ্রুত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।