নিজস্ব প্রতিনিধি : নিজেকে পরিচয় দিতেন ডিএমপির মিরপুর জোনের উপকমিশনার। শিল্প প্রতিমন্ত্রী বা সংসদ সদস্য কিংবা কাউন্সিলরের কণ্ঠ নকল করে বিভিন্ন পন্থায় টাকা দাবি করতেন সাধারণ মানুষের কাছে। টার্গেট বিভিন্ন ব্যবসায়ী অথবা সমাজের অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিদের। এমনই এক প্রতারককে রোববার (১৭ জানুয়ারি) গ্রেফতার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও শীতার্তদের সহায়তার কথা বলে নগদ অর্থ হাতিয়ে নিত প্রতারক ইমদাদ। তার বিরুদ্ধে এর আগেও রাজধানীর দুটি থানায় মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মিরপুর জোনের ডিসি পরিচয়ে নগরীর শেওড়াপাড়ার ব্যবসায়ী ইসহাকের নম্বরে ফোন দিয়ে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য টাকা চান ইমদাদ নামের এক ব্যক্তি। কথা বলিয়ে দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের সঙ্গে।

মোবাইল ফোনে প্রতারক ইমদাদ বলেন, আমি জাহাঙ্গীর মোল্লা বলছি উপকমিশনার মিরপুর ব্রাঞ্চ। করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করব। সেখানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত থাকবেন। আপনার পক্ষ থেকে কিছু সহযোগিতা করতে হবে। ওপাশ তিনি বলেন, আমি ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি।
মিরপুরের ডিসি পরিচয়ে, কণ্ঠ নকল করে কথা বলাতেন মন্ত্রী, এমপি, কমিশনার এমন সব সরকারের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিদের। এমনই এক প্রতারককে রোববার গ্রেফতার করে মিরপুর থানা পুলিশ।
মিরপুর জোনের ডিসি জানান, করোনায় অসহায় ও শীতার্তদের শীতবস্ত্র বিতরণসহ নানা অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে টাকা হাতিয়ে নিত এই প্রতারক।
ব্যবসায়ী ইসহাক বলেন, কামাল আহমেদ মুজমদারের সঙ্গে আমার অনেকবার মিটিং হয়েছে। সে কণ্ঠের সঙ্গে কোনো মিল নেই। ডিসি সাহেক যদি টাকাই নিতে চান তাহলে বিকাশে কেন? হয় ডিসি স্যার লোক পাঠাবেন অথবা আমাকে চায়ের দাওয়াত দেবেন।
এমন প্রতারণার শিকার নানা ব্যক্তির অভিযোগের তদন্তের প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁদ পেতে তাকে গ্রেফতার করে। ভুক্তভোগীদের থেকে নেওয়া নগদ অর্থও উদ্ধার করে পুলিশ।
মিরপুর জোনের ডিসি আসম মাহতাব উদ্দিন বলেন, সমাজের প্রতিষ্ঠিত ও বিখ্যাত ব্যক্তির মাধ্যমে যখন কথা বলে, তখন এক ধরনের সন্দেহ তৈরি হয়। সে সময়ে তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে ফেলেন। অভিযান চালিয়ে আমরা তাকে গ্রেফতার করে সক্ষম হই। এ ছাড়া তার থেকে ৩৭ হাজার টাকা উদ্ধার করি।
এর আগেও প্রতারণার অভিযোগে নগরীর দারুসসালাম ও রামপুরা থানায় এই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।