নিজস্ব প্রতিবেদক : হলি আর্টিজান বেকারিতেহামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫১২ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে এলিট ফোর্স র্যাব। তবে আদালত থেকে এখন পর্যন্ত ৩ শ’ জঙ্গি জামিনে নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে। যাদের অধিকাংশই এখন পর্যন্ত পলাতক আছে বলে জানিয়েছেন র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ। রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ঈদ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
ঈদুল ফিতরকে ঘিরে দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে জানিয়ে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, রাজধানী ঢাকা ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়াসহ বড় ঈদ জামাতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নাশকতা সৃষ্টিকারীদের মোকাবেলায় সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে র্যাব।
র্যাব ডিজি বেনজীর আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে জঙ্গি হামলার ঝুঁকি রয়েছে। আমাদের নিজস্ব ইন্টেলিজেন্স ও অন্যান্য ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যে কোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।
তিনি বলেন, রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫১২ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে এলিট ফোর্স র্যাব। তবে আদালত থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০ জঙ্গি জামিনে রয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই এখন পর্যন্ত পলাতক আছে।
জঙ্গি আসামিদের পক্ষে আইনজীবিদের আইনি লড়াই না করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, খুন-ধর্ষণসহ ৮ থেকে ১০টি অপরাধের সঙ্গে জঙ্গি আসামিকে এক করলে হবে না।
জঙ্গিদের হুমকি থেকে আইনজীবিসহ কেউ মুক্ত নয় উল্লেখ করে বেনজীর আহমেদ বলেন, যারা জঙ্গিদের জামিনের জন্য লড়ছেন, তারা কিন্তু হামলার শিকার হতে পারেন। জঙ্গি আসামির জামিনের জন্য লড়া ঠিক নয়। জঙ্গিরা আইনজীবীদের ওপরও হামলা চালিয়েছিল। জঙ্গিরা আদালতেও হামলা করেছে, কেউ তাদের আওতার বাইরে নয়।
দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, জামিনে পলাতক থাকা জঙ্গিরা আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, তারা বেশিদিন এ তৎপরতা চালাতে পারবে না।
র্যাব ডিজি বলেন, রমজানের শুরু থেকেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো ঘিরে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে যাতায়াত নিশ্চিত করতে র্যাব তৎপর রয়েছে।
ডিজি র্যাব বলেন, ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে ১৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সড়কে যানজট এবং দূর্ঘটনাপ্রবন এলাকা চিহ্নিত করে দেশজুড়ে ৪২টি স্থানে র্যাবের নজরদারি রয়েছে। তবে এবার সড়ক এবং নৌপথে ঈদযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে।
২৪ ঘণ্টা সড়ক-নৌ এবং রেলপথে নজরদারি রয়েছে জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, ঘরমুখো মানুষের ঈদের যাত্রা এখনও স্বস্তিদায়ক রয়েছে, আশা করছি ফেরার যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হবে। আমরা চাই না, সড়কে কোনো প্রাণহানি ঘটুক।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মূখপাত্র কমান্ডার মূফতি মাহমুদ খান, উপপরিচালক (মিডিয়া) মেজর হুসাইন রইসুল আযম মনি, র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেমসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।