মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা : উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

জাতীয় রাজধানী স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যেই শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দেশের ৫৫ কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। দেশব্যাপী ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের পরীক্ষায় বসেছিলেন ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন পরীক্ষার্থী। প্রতিটি পরীক্ষার হলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে করাকরি থাকলেও উল্টো চিত্র ছিল পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে।
পরীক্ষার আগে ও পরে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে পরীক্ষার্থী এবং তাদের স্বজনরা ভীড় করেন হলের গেটে। এতে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোর সামনে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। এমন কি প্রতিটি কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায়ও দেখা যায় একই চিত্র।
রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজ, তেজগাঁও সরকারি কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ কেন্দ্রের সামনে নির্দিষ্ট সময়ের আগে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন। নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষা শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা পূর্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন।
তবে পরীক্ষার পুরোটা সময় ধরে এসব কেন্দ্রের বাইরের চিত্র পুরো উল্টো ছিল। পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আসা স্বজনরা যে যার মতো স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে জটলা করে দাঁড়িয়ে বা বসে ছিলেন। একই চিত্র দেখা যায় পরীক্ষার পরেও। একই জায়গায় শতশত শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনরা ভিড় করেন। অনেকে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বাসে উঠেছেন।
অভিভাবকরা বলছেন, কেন্দ্রের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাভ কী? বাইরেই তো বিপুল পরিমাণ মানুষের ভিড়। এখানে করোনা সংক্রমণ হওয়া স্বাভাবিক।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন বালেন, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা পরীক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছি। আগেই জানিয়ে দিয়েছি, প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে মাস্ক পরে কেন্দ্রে আসতে হবে। এক ঘণ্টা পরীক্ষার পুরো সময় মাস্ক পরে থাকতে হবে। মাস্ক পরে আসার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে উল্লেখ করা আছে। তবু যারা ভুল করে মাস্ক না পরে এসেছেন, পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তাদের মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছে।
সংক্রমিতদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের মধ্যে করোনা উপসর্গ আছে তাদের আলাদাভাবে বিশেষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো প্রতিটা কেন্দ্রে আইসোলেশন কক্ষের ব্যবস্থা ছিলো। তাপমাত্রা পরিমাপ করে সবাইকে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করানো হয়েছে।
এর আগে গত ২২ মার্চ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বন্ধে রিট করেছিলেন উত্তরার বাসিন্দা তৈমুর খান। আকস্মিক করোনোভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে রিটটি করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই সেশনে ভর্তির কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি। অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম শুরুর অনেক আগেই মেডিকেলে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হলে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী সময়ে তাদের অন্য কোনো বিষয়ে ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সীমিত হয়ে যাবে, এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি দাখিল করা হয়েছিল।


বিজ্ঞাপন