মুক্তি চাই

অন্যান্য বিবিধ

মোস্তাফিজুর রহমান : বহুমাত্রিক নেশায়, পেশায় অবিরাম ছুটে চলা অসংখ্য মানুষ পরিস্থিতির কারণে থমকে যেতে বাধ্য হয়েছে। বেকারত্ব ও অলসতায় ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিলেও বাড়বে পরিবারের সদস্যদের সাথে সখ্যতা। অর্থের পিছু নিয়ে বিরামহীন ছুটে চলা মানুষগুলো ভুলেই গিয়েছিলো পরিবার আর আপনজনের প্রকৃত সংজ্ঞা। সম্পদ অর্জনের মায়াজালে বন্দী হয়ে সন্তানের সাথেও মাসে একবার সাক্ষাৎ করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি অনেকের। ওদের সম্পদের প্রত্যাশা পূরণ করতে করতে পৃথিবী এখন ক্লান্ত, তাইতো সংক্রমণের উছিলায় গৃহে বন্দী করে সম্পদ ও ভালবাসার সমীকরণ মেলানোর জন্য হয়তো বিশ্বজুড়ে প্রকৃতির এই আয়োজন। কি অদ্ভুত ব্যাপার!


বিজ্ঞাপন

প্রয়োজন মাফিক সম্পদ অর্জনের জন্য নিরলস পরিশ্রম যৌক্তিক কিন্তু অধিক সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে সাম্রাজ্যর মালিক বনে যাওয়া বোকামি। কারণ যাদের জন্য এত পরিশ্রম ও বিশ্রামহীন ছুটে চলা, তাদের আদূরে অবয়বে কখন স্নেহ ভালবাসার ছোয়া দিয়েছেন, কখন প্রাণখুলে বাক্য বিনিময় করেছেন, সেটার সঠিক দিনক্ষণ কি আপনার আদৌ মনে পড়ে! অবাক হওয়ার কিছু নেই। প্রকৃতি জীবনকে যেমন উপহার দেয়, তেমনই সময় হলে প্রতিদানও বুঝে নেয়। চলমান এ বন্দী জীবন সম্পদ অর্জনের জন্য নয়, পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্য ও ভালবাসায় দেওয়ার সময়।


বিজ্ঞাপন

স্থাবর অস্থাবর সম্পদের চেয়ে পারিবারিক প্রতিটি সদস্যর হাসিমুখ ও সান্নিধ্য অনেক দামী।স্নেহ ভালবাসার অধিকার বঞ্চিত এই নোংরা সংস্কৃতি আমাদের মমতাহীন বানিয়ে দিয়েছে। ভোগের মাধ্যম হিসেবে অর্জিত অঢেল অর্থই সম্পদ নয়, সংসারের প্রতিটি সদস্য প্রকৃত সম্পদ হিসেবেই বিবেচিত হোক। মমতাহীন সংসার জীবনের করুন চিৎকারে প্রকৃতি আবেগাপ্লুত হয়েই হয়তো প্যানডেমিক এই কলাপসিবলের আয়োজন করেছে। আপনার গৃহের প্রতিটি সদস্য যেন তাদের প্রাপ্য স্নেহ ভালবাসা ও অধিকার ফিরে পায় এই প্রত্যয়ে গৃহবন্দীর এমন রিহার্সেল। ভুলে যাওয়া এই সংস্কৃতি জেগে উঠুক প্রতিটি ঘরের প্রতিটি কক্ষে, স্নেহ ভালবাসায় মুগ্ধ হোক আপনজনেরা, মুগ্ধ হোক প্রকৃতি, তাহলেই আমাদের মুক্তি, নচেৎ নয়।