মামুন মোল্যা, ষ্টাফ রিপোর্টার : খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার সিকিরহাট আবাসিক এলাকায় কয়লা রাখার প্রতিবাদে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষে ফুলতলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আলমগীর হোসেন মোল্যার নেতৃত্বে এলাকার সর্বস্তরের জনগন এই স্মারকলিপি প্রদান করেন। আবাসিক এলাকায় কয়লা রাখার প্রতিবাদে খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনা জেলা প্রসাশক, চেয়ারম্যান ফুলতলা উপজেলা পরিষদ, ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ফুলতলা ৪নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর এই স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত, আমরা পয়গ্রাম, তাজপুর, দক্ষিণডিহি গ্রামের অধিবাসি বৃন্দ আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ফুলতলা সিকিরহাট রাস্তার পাশ্ববর্তী নদী সংলগ্ন কয়েকটি ঘাটে ও লোকালয়ে কয়লা মজুদকরণ ও গাড়িতে (ট্রাকে ও বিভিন্ন পরিবহনে) বাড়তি কয়লা লোডিং এর ফলে সমস্ত রাস্তার কয়লা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। যে কারনে পরিবেশের মারাত্বক ক্ষতি সাধন করে। ফলে অত্র এলাকার সকল শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে শ্বাসকষ্ট, চোখে জ্বালাপোড়া ও কয়লা জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে করে সবুজ প্রকৃতির উপর কয়লার কালির প্রলেপ পড়েছে। এর ফলে আমরা বসবাস ও যাতায়াত জীবনের ঝুকি ও চরম স্বাস্থ্যহানির ঝুকিতে আছি।
এমতাবস্থায় দরখাস্থ দ্বারা প্রদান যে, লোকালয় হইতে কয়লা ঘাট অপসারণ ও বর্ণিত রাস্তায় নির্বিঘেœ চলাচলের সু-ব্যবস্থা করতে জনাবের মর্জি হয়।
সূত্র জানায়, ফুলতলা উপজেলার আবাসিক এলাকায় নদীর বিভিন্ন ঘাট থেকে নিয়মিত কয়লা, সিমেন্ট ও বালু লোড-আনলোড করার ফলে স্থানীয় এলাকার রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অপরদিকে সাধারন মানুষের চলাচলের চরম বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। ঐ এলাকার রাস্তায় চলাচলের সময় প্রায় ধুলার জন্য চোখে দেখতে না পেয়ে ছোট-বড় দুঘর্টনা ঘটছে। বিভিন্ন ভারী ট্রাক, ডামট্রাক, স্কেভেটর ও ট্রলি রাস্তাটির পর দিয়ে দের্দারছে দাপিয়ে চলাচল করে। ফলে রাস্তার অধিকাংশ যায়গায় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে ইঞ্জণচালিত ভ্যান, পা দিয়ে চালানো ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলে সাধারন যাত্রী যেতে চায় না। অনেক সাধারন খেটে-খাওয়া মানুষ এই ঘাট মালিকদের ব্যবসার কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
ফুলতলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আলমগীর হোসেন মোল্যা বলেন, সব ধরনের কয়লা লোড-আনলোড বন্ধ করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় খানা-খন্দ সৃষ্টি হওয়া রাস্তাটি সংস্কার পুর্বক পুর্নঃনির্মাণ কাজ করা। ঘাট মালিকদের ব্যবহারিত অবহেলিত রাস্তাটিতে সহনীয় মাত্রায় লোড নিয়ে গাড়ী চালাতে হবে।
সিকিরহাট ঘাট মালিক সমিতির সভাপতি আহসানুল হক লন্ডন’র ব্যবহারিত ০১৭১১-৪৫০০৯৫ মুঠোফোন নাম্বারে বার বার চেষ্টা করার পরও তিনি ফোনটি রিসিভ করেন নি।
সিকিরহাট ঘাট মালিক সমিতির সহ-সাধারন সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, আমরা কয়লা অপসারণের কোনো নির্দেশনা পায় নি। রাস্তা নষ্ট হওয়ার জন্যও আমরা দায়ী নয়।
ফুলতলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, সিকিরহাটে আবাসিক এলাকায় কয়লা না রাখার জন্যে ঐ এলাকার মানুষের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে সিকিরহাট ঘাট মালিক সমিতিকে দ্রুত কয়লা আবাসিক এলাকা থেকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা কয়লা সরানোর জন্য ১ মাসের সময় নিয়েছে।