মাসোহারায় নিরব সমবায় অধিদপ্তর!
নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বিদ্যমান সমবায় আইন, বিধিমালা, কালবের উপ-আইন, সাধারন সভা,ক্ষেত্র বিশেষে বোর্ড সভাও তোয়াক্কা করেন না কালবের চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী। এমনকি ১০ লাখ টাকার উপরে যে কোন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমবায় অধিদপ্তরের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্ত কোন বিনিয়োগের জন্যে সঠিকভাবে কোন অনুমোদন নেয়া হয় না। টানা দুই মেয়াদে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন তিনি। এ মেয়াদকালে তার বিরুদ্ধে জমি ক্রয়, ভবন নির্মান, সম্প্রসারন, মদের বার স্থাপন এবং স্টাফদের বোনাস দেয়ার নাম করে ৩২,৮০,৩৭৬/- টাকা আত্মসাৎ সহ নানা কাজে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। সংবাদ প্রকাশের পূর্বে রীতি অনুযায়ী তার বক্তব্য নিতে গেলে তিনি বলেন, “ দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে লেখেন, কথা বলার দরকার নাই, সংবাদ প্রকাশ হলে আমার কিছুই হবে না, কেউ আমার কিছুই করতে পারবে না ”। জোনাস ঢাকীর ক্ষমতার উৎস কোথায়? অনুসন্ধানে জানাগেছে, সমবায় অধিদপ্তরই এখানে রক্ষকের স্থলে ভক্ষকের ভুমিকায় আছে। অধিদপ্তরের কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কালব থেকে মাসোহারা গ্রহনের অভিযোগ রয়েছে।অধিকন্তুু রয়েছে নানা উপঢৌকন।বিদেশে বিভিন্ন ফোরাম, সেমিনারে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কালবের খরচে ভ্রমণ করানো, কক্সবাজারে কালবের ফোরামে বিমান যোগে নিয়ে প্রমোদ ভ্রমন করানো, স্বস্ত্রীক,স্ববান্ধব কালব রিসোর্টে নিয়ে বিনোদনের আয়োজন। এছাড়া, অধিদপ্তরের পদস্থ অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কালবে চাকরী দেয়ার রেওয়াজ। অন্যদিকে কালবের সচেতন প্রভাবশালী বিশেষকরে খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের সমিতির ডেলিগেটদের কাছেও লুটের হিস্যা পৌঁছে যায়। সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী মহলের জন্যে নিকট ভবিষ্যতে রয়েছে ফ্রি মদের অফার।সুতরাং বোর্ডের ২/৪ জন নিরীহ সৎ সদস্য অথবা সংখ্যা গরীষ্ঠ নিরীহ অসচেতন ডেলিগেটগণ দুর্নীতিতে কোন বাঁধা নয়। কারন তারা তিন বছর পর একবার এসে ভোট দিয়ে যাতায়াত ভাতা ,বিরানির প্যাকেটেই সন্তুষ্ট। সাথে আরো দুই বার সাধারণ সভায় তাদের ভাগ্যে জোটে যাতায়াত ভাতা ও বিরানীর প্যাকেট। ভবিষ্যতে ডেলিগেটদের বিরানীর প্যাকেটের সাথে এক বোতল মদের সম্ভাবনা ঝুলন্ত রয়েছে।
কালবে জোনাস ঢাকীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে বোর্ড সদস্যদের অবস্থান স্পষ্ট নয়। চেয়ারম্যান ছাড়া ৩ নির্বাহী’র মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যান ইন্টারনাল অডিট কমিটি কে লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে, তিনি কোন দুর্নীতির দায় নিবেন না। তবে বোর্ড সভায় তিনি কোন বিরোধিতা করেছেন কিনা তা জানা যায়নি। ট্রেজারারও কোন দায় না নেয়ার চিঠি দেবেন বলেও ; রহস্যজনক কারনে তিনি আবার জমা দেননি। সেক্রেটারীর অবস্থান এখনো স্পষ্ট নয়। ৮ পরিচালকের মধ্যে ২ জন জোনাস ঢাকীর একান্ত সারথী বলে জানাগেছে। বাকী ৬ জন না ঘরকা না ঘাটকা অবস্থানে আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।
এদিকে দেশের বিদ্যমান সমবায় আইন,বিধিমালা ও কালবের উপ-আইন লংঘন করে চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী এখন জেনারেল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। ৭ মে কালবের ৮ম বোর্ড সভায় ভারপ্রাপ্ত জিএম রোমেল ক্রুজ কে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরবর্তি সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যান অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে জিএম এর দায়িত্ব পালন করবেন মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি সদস্য সমিতি গুলোতে নোটিশ দিয়ে জিএম এর সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
এদিকে ঠুনকো কারনে জিএম কে অপসারন ও আইন লংঘন করে চেয়ারম্যন কর্তৃক জিএম এর দায়িত্ব গ্রহন কে কেন্দ্র করে সমবায় অঙ্গনে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, চেয়ারম্যান ও বোর্ড সদস্যদের লুটপাট নির্বিঘœ করতে জিএম কে ঠুনকো অজুহাতে অপসারন করা হয়েছে।
দি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লীগ অব বাংলাদেশ লিঃ (কালব) এর চেয়ারম্যান জোনাস ঢাকী এবং একাধিক পরিচালক সমবায় প্রতিষ্ঠান কে লুটপাটের আখড়ায় পরিনত করেছেন।
এদিকে বিনা প্রয়োজনে জমি ক্রয়, ভবন নির্মান, গাড়ি ক্রয়, প্রধান কার্যালয় বিক্রি করে আবার নতুন ভবন নির্মানের জন্যে জমি ক্রয় , রিসোর্ট ও মদের বার করার নামে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে জানাগেছে। কালব লুটপাট করে কানাডার টরেন্টোতে বাড়ি কিনেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে। তার দুই মেয়ে বর্তমানে টরেন্টোতে বসবাস করে। জোনাস ঢাকী ১০ বছরের ফ্রি ভিসায় কানাডায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করে। নাগরিকত্ব কনফার্ম হলে কালবের তহবিল শূণ্য করে দিয়ে কানাডায় পালাবেন। তার পূর্বের চেয়ারম্যান সাইমন এ পেরেরা ১০০ কোটি টাকা লোপাট করে নাগরিক হওয়ার সুবাদে আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুদক ইতিমধ্যে মামলা করেছে। অর্থের বিনিময়ে কালবে জব্দ সাইমনের পাসপোর্ট ফেরত দিয়ে আমেরিকায় পালাতে সহায়তা করেছে জোনাস ঢাকী। এক্ষেত্রে সমবায় অধিদপ্তরের ভ’মিকা রহস্যজনক। জোনাস ঢাকীর বেপরোয়া লুটপাটের কারনে কালব ধ্বংসের প্রহর গুনছেন সদস্যগণ।
এমতাবস্থায় সমবায়ীদের স্বার্থ রক্ষ্ার্থে কালবের চুড়ান্ত ধ্বংসের পূর্বে দুর্নীতিবাজ সাইমন এ. পেরেরার মত চেয়ারম্যান পদ থেকে জোনাস ঢাকী’র অপসারন দাবি করেছেন কালবের সচেতন ডেলিগেটগণ।