বিশেষ প্রতিবেদক : আর মাত্র একদিন বাদেই রাজধানীর তিন রুটে চলবে না রিকশা। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী। তারা বলছেন, গণপরিবহনের সংখ্যা ও সেবার মান না বাড়িয়ে রিকশা বন্ধ করা হলে নারী ও শিশুরা পড়বেন চরম ভোগান্তিতে। একই মত সড়ক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
শুক্রবার তারপরও গাড়ির থেকে কুড়িল-বিশ্বরোডে রিকশার গতি বেশি। রিকশা কম হলেও, যান্ত্রিক পরিবহনে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।
রাজধানীর সড়কে গতি আনতে কুড়িল থেকে সায়দাবাদ পর্যন্ত প্রগতি সরণি, সায়েন্সল্যাব থেকে শাহবাগ ও গাবতলী থেকে আজিমপুরে রিকশা চলাচল বন্ধ হবে রোববার থেকে। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত উদ্বেগ বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষের। বিশেষ করে যেসব সড়কে আছে স্কুল-কলেজ ও হাসপাতাল।
সাধারণ মানুষ বলেছে, গণপরিবহনের সংখ্যা না বাড়িয়ে রিকশা পুরোপুরি বন্ধ করে দিলে ভোগান্তি বাড়বে।
এক নারী বলেন, বাসে অনেক ভিড় থাকে। অনেক সময় বাস নিতে চায় না। রিকশা ছাড়া চলবো কেমনে? আরেক নারী বলেন, রিকশার জন্য আলাদা লেন করে দিয়ে সমস্যা মেটানো যেতো। বাচ্চাদের নিয়ে চলাচল করা না হলে অনেক সমস্যা হবে। আরেক পথচারী বলেন, পুলিশ যদি লেনের রিকশা কন্ট্রোল করতে পারে তাহলে যানজট কম হবে।
এদিকে কর্মহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা অযান্ত্রিক এ যানের শ্রমিকদের। তারা বলেন, এক রিকশায় ৩টা পরিবার চলে। রিকশাওয়ালার পরিবার, গ্যারেজ মালিকের, আর মেস খাওয়ায় যে তার। তারা আরো বলেন, রিকশা চালাতে পারবো না, কি খাবো আমরা চুরি ডাকাতি করবো?
রাজধানীতে ৪০ শতাংশ মানুষ রিকশা ব্যবহার করেন। তিন চাকার এই বাহন বন্ধ করে দিলে রাস্তায় প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেড়ে যাবার আশঙ্কা সড়ক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞদের।
তারা বলছেন, গণপরিবহনে সেবার মান বৃদ্ধি ও স্কুল-কলেজে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার ওপর জোর না দিয়ে ঢালাওভাবে রিকশা বন্ধ করা হলে দুর্ভোগ ও অনিয়ম বাড়বে। রিকশা বন্ধ করে দিলে প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। সেটা রাস্তার উপর আরেকটি প্রভাব ফেলবে। গণপরিবহনে নারী-শিশুদের যাত্রী হিসেবে না তোলার সমস্যাটা রয়েই যাচ্ছে। রিকশা বন্ধ করার পাশাপাশি অন্যান্য গণপরিবহন ব্যবস্থাকে ভালো করতে হবে।
২০১৭ সালের এক প্রতিবেদন বলা হয় ১০ বছরে যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে ৭ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। ২০১৮ সালে বুয়েট জানায় প্রতিদিন ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে যানজটের কারণে। রাজধানীবাসীর প্রশ্ন, এর দায় শুধু রিকশার ওপর চাপানো কতটা যৌক্তিক।