নিজস্ব প্রতিনিধি : পিনাক-৬ ট্র্যাজেডির পাঁচ বছর পূর্তি আজ ৪ আগস্ট বুধবার । ২০১৪ সালের এই দিনে মাঝ পদ্মায় শতাধিক তাজা প্রাণের সলিল সমাধি হয় এই ট্রাজেডিতে।
এতদিন পরেও বিচার পায়নি নিহতদের স্বজনরা। আইনের ফাঁক-ফোকড় দিয়ে বেরিয়ে যেতে বসেছে লঞ্চের অতি মুনাফাখোর মালিক-শ্রমিকরা।
দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট। ঈদের আনন্দ কাটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মস্থলে ফিরছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষ ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা। সেদিন সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল।
এমন বৈরী আবহাওয়ায় পদ্মা ছিল উত্তাল। এরই মধ্যে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে লঞ্চগুলো উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে।
এদের একটি ছিল পিনাক-৬। সেদিন পদ্মা নদীর মাঝে আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে ডুবে যায় পিনাক-৬ নামের লঞ্চটি। এতে সলিল সমাধি হতে হয় শতাধিক যাত্রীর।
সরকারি হিসাবে, এ ঘটনায় ৪৯ যাত্রীকে লাশ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ ছিলেন ৫৩ জন। নিহত যাত্রীদের মধ্যে এখনো ২১ জনের পরিচয় জানা যায়নি। ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের পর যাদের বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।
লঞ্চ দুর্ঘটনায় দুটি মামলা হয়। তবে পাঁচ বছরেও মামলা দুটির নেই তেমন কোনো অগ্রগতি।
পিনাক ট্র্যাজেডির পর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ২৪ দফা সুপারিশ করে। যেগুলোর কিছু বাস্তবায়ন হলেও বেশিরভাগই রয়ে গেছে আঁধারে। ডুবে যাওয়া পিনাক-৬-এর সন্ধান মেলেনি আজও।
এই রুট দিয়ে চলাচলকারী তোফাজ্জেল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই রুটে এখনো অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে যাত্রী পারাপার করে লঞ্চে।
দেখার যেন কেউ নেই। এবারের ঈদে এই পদ্মা নদী পার দিতে হবে। তাই পুনরায় যেন আবার পিনাক ট্রাজেডি দেখতে না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে প্রশাসনের।’
কাঁঠালবাড়ী ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক ইন্সেপেক্টর আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পর খুব সাবধানতার সঙ্গে লঞ্চ চলাচল করা হয়।
যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ধারণক্ষমতার বাইরে যাত্রী উঠানো হয় না। এছাড়াও ফিটনেসবিহীন কোনো লঞ্চ চলাচল করতে দেওয়া হয় না।’
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিএনএ টেস্টের নমুনার সঙ্গে যদি কেউ প্রমাণসাপেক্ষে মৃতদেহ শনাক্ত করতে আসে, তাহলে তারা চাইলে দেহাবশেষ নিতে পারবেন।