*বিপুল ক্ষতির মুখে কৃষক
*ভাসছে ২ সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বিশেষ প্রতিবেদক : দেশের মধ্যাঞ্চল ঢাকার দিকে ধেয়ে আসছে বন্যা। এরইমধ্যে বন্যার পানিতে রাজধানী ঢাকার আশপাশের নদীগুলো ভরতে শুরু করেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উত্তরাঞ্চলের সবকটি নদীর পানি ঢাকার দিকে আসবে বলে আগাম সতর্কতা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে বাংলাদেশের উজানে চীনের বন্যার পানি নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষক। কষ্টের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় হয়ে পড়েছেন নিঃস্ব। বসতভিটা নদীতে বিলীন হওয়ায় থাকতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশুদ্ধ পানির অভাবে দুর্গতরা আক্রান্ত হচ্ছেন কলেরা, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগে।
এদিকে দেশের ১৪ জেলায় বন্যায় দুই হাজার ১৪৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ের ৯৩২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এক হাজার ২২৭টি।
বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে একাধিক দফতর কাজ করছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) এবং মাধমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে জানানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান এ প্রসঙ্গে জানান, বাংলাদেশের বন্যায় চীনের পানির কোনো প্রভাব পড়বে না। চীনের পানি বাংলাদেশের নদ-নদীতে আসতে আসতে এর প্রভাব শেষ হয়ে যাবে।
তিনি আরও জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা ও ঢাকার চারপাশের নদীগুলো ছাড়া অন্যসব নদীর পানি কমে আসবে। ঢাকার চারপাশের নদীগুলোতে পানি বাড়বে। এছাড়া তিনি জানান, বর্তমানে দেশের ২৮ জেলায় ৪০ লাখের ও বেশি মানুষ পানিবন্দী রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা এবং ঢাকার চারপাশের নদী ছাড়া অন্য সব প্রধান নদীর পানি হ্রাস পাবে। ঢাকার আশপাশের নদীগুলোয় পানি বাড়তে থাকবে।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের আসাম ও পশ্চিম বঙ্গের উত্তরাঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মাসহ বিভিন্ন নদীর পানি হ্রাস পাবে। অপরদিকে বৃদ্ধি পাবে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বাড়তে পারে। ব্রহ্মপুত্রের নদরে পানি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
একারণে টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বগুড়া, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় একই রকম থাকতে পারে।
আগামী ১০ দিনের পূর্বাভাসে বন্যার সতর্কীকরণ ও পূর্বাভাসকেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদীর পানি আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত কমতে পারে। পরবর্তীতে সামান্য বেড়ে স্থিতিশীল হতে পারে। ব্রহ্মপুত্র যমুনা নদীর অববাহিকায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে আগামী সাতদিন বন্যা পরিস্থিতি প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এসব এলাকায় নদীর পানি কমে আবার সামান্য বাড়তে পারে। কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রথমে স্থিতিশীল হতে পারে এবং পরে কমতে পারে।
আপাতত গঙ্গা নদীর অববাহিকায় গোয়ালন্দ অববাহিকায় বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই। পদ্মা নদীর পানি গোয়ালন্দ, আরিচা, ভাগ্যকূলে পানি আগামী পাঁচদিনে বিপৎসীমার নিচে নেমে যেতে পারে। তবে ঢাকার আশপাশের নদীর পানি এর মধ্যে বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের আগামী ২৪ ঘণ্টার পুর্বাভাসে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের উত্তারাঞ্চল অতিক্রম করে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মোটামুটি সক্রিয়, দেশের অন্যত্র কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পুর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড পর্যবেক্ষণ করে থাকে এমন সব নদীর ৩৫ পয়েন্টে পানি বেড়েছে। কমেছে ৫৩ পয়েন্টে। পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুনামগঞ্জে সুরমা, শেরপুর-সিলেট জেলার সীমান্তে কুশিয়ারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাস, চাঁদপুরে মেঘনা, কুড়িগ্রামে ধরলা, গাইবান্ধায় ঘাঘট, চকরহিমপুরে করতোয়া, চিলমারী ও নুনখাওয়ায় ব্রহ্মপুত্র, ফুলছড়ি, বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ ও আরিচায় যমুনা, বাঘাবাড়িতে আত্রাই, এলাশিনে ধলেশ্বরী, জামালপুরে পুরনো ব্রহ্মপুত্র, গোয়ালন্দে, ভাগ্যকূলে ও সুরেশ্বরে পদ্মা নদীতে। এসব নদীতে পানি সর্বোচ্চ ১ থেকে ১১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিপুল ক্ষতির মুখে কৃষক : দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষক। কষ্টের ফসল তলিয়ে যাওয়ায় হয়ে পড়েছেন নিঃস্ব। বসতভিটা নদীতে বিলীন হওয়ায় থাকতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশুদ্ধ পানির অভাবে দুর্গতরা আক্রান্ত হচ্ছেন কলেরা, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগে।
গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় সাত উপজেলার ৫ লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে কেউ আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের ওপর। কেউ ঠাঁই নিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। ফসল ও মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে প্রায় ৩০ কোটি বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে সড়ক ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট।
জামালপুর: জামালপুরে বন্যায় এক সপ্তাহে ২৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। জেলার বকশীবাজার, দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি ও সদর উপজেলায় রোপা আমন বীজতলা, আউশ, পাট, মরিচ, কলা, আখ ও ভুট্টা চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
চাঁদপুর: চাঁদপুরের দুর্গম চর রাজেশ্বরে গত দু’দিনে ৪টি গ্রামের ২ শতাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। শেষ সম্বলটুকু সরিয়ে নিচ্ছে কেউ কেউ। আশ্রয় হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটছে চরবাসীর।
বগুড়া: বগুড়ায় যমুনার পানি কমার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এর মধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন কলেরা ও ডায়রিয়ায়। সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের কথা জানান বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান।
এছাড়া টাঙ্গাইলে গত এক সপ্তাহের বন্যায় ফসল, মাছ ও মুরগির খামারিদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। দুর্গত এলাকায় গো খাদ্যের তীব্র সংকটে বিপাকে পড়েছেন মানুষ।
পানিতে ভাসছে ২ সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : দেশের ১৪ জেলায় বন্যায় দুই হাজার ১৪৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে নি¤œ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পর্যায়ের ৯৩২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এক হাজার ২২৭টি।
বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে একাধিক দফতর কাজ করছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) এবং মাধমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে জানানো হয়েছে।
ডিপিই থেকে জানানো হয়েছে, দেশের ১৪ জেলায় মোট এক হাজার ২২৭টি বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে- কুড়িগ্রামের ১২ উপজেলায় ৫৪০টি, সিরাজগঞ্জের চার উপজেলায় ৭৩টি, বগুড়ার তিন উপজেলায় ৮৩টি, লালমনিরহাটের আট উপজলোয় ৫৪টি, গাইবান্ধার নয় উপজেলায় ২৫৪টি, নীলফামারীর তিন উপজেলায় ১৯টি, রংপুরের দুই উপজেলায় নয়টি, রাঙ্গামাটির সাত উপজেলায় ৩১টি, কক্সবাজারের দুই উপজেলায় ১১৫টি, ফেনীর তিন উপজেলায় ১২টি, সুনামগঞ্জের এক উপজেলায় ছয়টি, বরগুনার এক উপজেলায় দুটি এবং কুমিল্লার এক উপজেলার দুটি বিদ্যালয় রয়েছে।
মাউশির হিসাব অনুযায়ী, গাইবান্ধায় ৬৫টি, লালমনিরহাটে ৮০টি, কুড়িগ্রামে ১২৭টি, রংপুরে পাঁচটি, সিরাজগঞ্জে ২৭টি, জামালপুরে ১৩২টি, নেত্রকোনায় ৫১টি, সুনামগঞ্জে ২২টি, নীলফামারীতে ৬৩টি, নওগাঁয় ৩৮টি, বগুড়ায় ৩৯টি, রাঙ্গামাটিতে ৬৭টি, কক্সবাজারে ৮১টি, ফেনীর ৪২টি এবং বরগুনার ২১টি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা আংশিক ও পুরোপরি প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার পানির কারণে এসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় সাময়িক পরীক্ষা চলছে। আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজগুলোর ক্লাস বন্ধ রয়েছে।
চলতি বন্যায় ঠিক কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু বন্যার পানি না নামায় ক্ষতির হিসাবও সেভাবে নিরূপণ করা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা ও প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাঠাতে।
এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ জেলার সকল নির্বাহী প্রকৌশলীদের চিঠি দিয়ে বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব শিক্ষা প্রকৌশল দফতরে পাঠাতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা ও প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন মেরামতের পাশাপাশি অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু অতিরিক্ত ক্লাস কখন নেয়া হবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তবে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয় কর্মকর্তারা এ অতিরিক্ত ক্লাসের বিষয়ে নজরদারি করবেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো মেরামতের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, বন্যায় সাধারণত চর এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য এসব এলাকায় স্থায়ী ভবন নির্মাণের পরিবর্তে সহজে স্থানান্তরযোগ্য ভবন তৈরি করা হবে। এসব ভবন নির্মাণে বেশি টাকা খরচ হবে না।
তিনি বলেন, সার্বিক বন্যাপরিস্থিতি মাথায় রেখে আমরা প্রতি বছর পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। পানিবন্দি এলাকায় অস্থায়ীভাবে ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। এজন্য আমাদের জরুরি তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যা দিয়ে এসব অস্থায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়।
মহাপরিচালক আরও বলেন, ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে অর্থাৎ ক্ষতিগ্রস্ত জেলা-উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে বন্যায় প্লাবিত বিদ্যালয়গুলোর ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন এসব প্রতিবেদন অধিদফতরে পাঠানো হচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বন্যার পানি নেমে গেলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নির্ণয় করে মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, সারাদেশে নি¤œ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা মিলিয়ে ৯৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত মাঠপর্যায় থেকে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির আপডেট পাঠানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বন্যার পানি না নামা পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে না। তবে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শিক্ষকদের বলা হয়েছে।