নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে নব্য জেএমবি
ইসমাঈল ইমু : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ও নব্য জেএমবি প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। তবে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে আনসার আল ইসলাম। সাম্প্রতিক সময়ে গুজবের সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে এরা।
শনিবার ভোরে রাজধানীর রুপনগর থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিট। এরা হলো, আবু সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়া, কিবরিয়া ও আহম্মদ আলী। এসময় জঙ্গিদের দায়ের কোপে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২১ জুলাই রাতে রাজধানীর পল্টন ও খামারবাড়ি পুলিশ বক্স এলাকায় তারা বোমা ফেলে রাখে। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় জঙ্গিদের যোগসূত্র থাকতে পারে। গত ২৩ জুলাই রাতে রাজধানীর খামারবাড়ি ট্রাফিক বক্সের পাশে ও পল্টন মোড়ে হাতবোমা উদ্ধারের ঘটনার পর গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছিল, পুলিশের কাছে মেসেজ ছিল দেশি জঙ্গি সংগঠনগুলো সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।
বোমা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যে হাতবোমাগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো মাঝারি ধরনের শক্তিশালী ছিল। তবে এসব বোমা দিয়েও ব্যাপক হত্যাকা- ঘটানো সম্ভব ছিল। বোমাগুলো ছিল একেবারই নতুনভাবে তৈরি ও তাজা। তবে এই বোমা তৈরির ধরন দেখে মনে হয়েছে, এগুলো দেশেই তৈরি করা হয়েছে। অতীতে জঙ্গি আস্তানা ও বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব বোমা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে মোটামুটি মিল রয়েছে। বোমাগুলোতে আইইডি জেল, বিয়ারিংয়ের বল, তার কাটা, ডেটোনেটর, কাচের টুকরোসহ নানা উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশের জঙ্গিরাও তৎপরতা শুরু করে। প্রতিনিয়ত তাদের নিজস্ব চ্যানেলগুলোতে হামলা চালানোর জন্য তথ্য আদান-প্রদান হতো। পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা থাকা ও জঙ্গিদের হামলা চালানোর মতো ক্ষমতা না থাকার কারণেই জঙ্গিরা সফল হতে পারেনি। এরপর তারা সুযোগ খুঁজছিল। সম্প্রতি পদ্মাসেতুতে মাথা লাগবে এমন গুজব সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে তারা আবার তৎপর হয়। পুলিশও সতর্ক অবস্থা নেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতেই হাতবোমাগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এর আগে গত ২৯ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে গুলিস্তানের ডন প্লাজার সামনে পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ককটেল ছোড়া হয়। এতে ট্রাফিক কনস্টেবল নজরুল ইসলাম (৩৭), লিটন (৪২) ও কমিউনিটি পুলিশ মো. আশিক (২৮) আহত হন। এর একদিন পর জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, নব্য জেএমবি অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। তবে আনসার আল ইসলাম তাদের শক্তি জানান দিতে ব্যর্থ চেষ্টা করছে। মাঝেমধ্যেই এ সংগঠনের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হচ্ছে। তবে আগের মত আর তাদের ঘুরে দাড়ানোর শক্তি নেই। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতার কারণেই জঙ্গিরা কোনঠাসা হয়ে গেছে।