নিজস্ব প্রতিনিধি : নবাবগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে নেই কোনো আইন কানুনের বালাই। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটিতে গণপরিবহণে চলছে নৈরাজ্য। যাত্রীবাহী বাসের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যারিকেড সুষ্টি করছে অন্য বাস। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌছতে পারছে না যাত্রীরা।
এতে বাস মালিকদের দৈনিক টার্গেট পূরণ হলেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বিরতিহীন সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে ‘চিটিং’ সার্ভিস। আর এসব পরিবহনে নবাবগঞ্জ থেকে রাজধানীর গুলিস্তান মাত্র ৩৭ কিলোমিটার রাস্তা যেতে সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। দীর্ঘ কয়েক যুগের এ সমস্যার জন্য পরিকহন মালিকদের খামখেয়ালিপনা ও প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করছে স্থানীয় যাত্রীরা। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চায় নবাবগঞ্জবাসী।
নিয়মিত ঢাকাগামী যাত্রীদের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের মাসিক মিটিংয়ে এ বিষয়টি নিয়ে অনেকবার আলোচনা হলেও অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে নবাবগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রী ওঠানোর নামে যানজট ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করলেও দেখার কেউ নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, বান্দুরা ও দোহারের মিনি কক্সবাজার থেকে এন মল্লিক পরিবহন, যমুনা সার্ভিস ও দ্রুত পরিবহনের বাসগুলো ছেড়ে আসে। এরপর একটি আরেকটিকে যেতে না দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তা আটকে রেখেছে। এভাবে পাল্লাপাল্লি করে যানযট তৈরি করে রাখছে। এতে মাত্র ৩৭কিমি রাস্তায় সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। ফলে যাত্রীরা পড়ছে ভোগান্তিতে। নির্দিষ্ট সময়ে অফিস বা ব্যবসার কাজে যেতে পারছে না।
এদিকে নবাবগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কে চলাচলরত যাত্রীবাহী পরিবহন সংস্থার অনেক গাড়ির সঠিক কাগজপত্র নেই। নেই চালদের সঠিক প্রশিক্ষণ ও গাড়ির ফিটনেস। যাত্রীসেবার নামে পরিচালিত এসব পরিবহনের কর্তৃপক্ষ কোনো জবাবদিহিতার প্রয়োজন মনে করছে না। এমনকি ঈদ সামনে রেখে বাস ভাড়া ৪ গুণ বৃদ্ধি করলেও বলার কেউ নেই। শুধু ভোগান্তির কবলে পড়ে পকেট কাটা যায় সাধারণ যাত্রীদের। প্রশাসন মাঝে মধ্যে লোক দেখানো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তাদের সতর্ক করলেও পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আইন মানছে না বলে অভিযোগ।
কৈলাইল এলাকার পাড়াগ্রামের বাসিন্দা বাসযাত্রী পারভেজ বলেন, বান্দুরা থেকে ঢাকা যেতে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। টিকিটে ১০০% সিটিং সার্ভিস লেখা থাকলেও এসব পরিবহন যেখানে সেখানে থেমে থাকে। এতে গুলিস্তান যেতে আমাদের বেশি সময় লাগে। সময় মতো পৌছাতে না পারায় ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
নবাবগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মুহাম্মদ গোলাম নবী শেখ বলেন, পুলিশ সদস্যরা যানজট নিরসনে নিয়মিত কাজ করছে। সমস্যার সমাধানে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাস মালিকদের আন্তরিকতা না থাকায় মূলত এ সমস্যা হচ্ছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচএম সালাউদ্দিন মনজু বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তি ও যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে যাত্রী, চালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।