অগ্নি-ঝুঁকিতে কমাতে ফায়ার হাইড্রেন্ট নির্মাণের পরামর্শ

অপরাধ অর্থনীতি এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন ঢাকা রাজধানী

বিশেষ প্রতিবেদক : রাজধানীর শতকরা ৮০ ভাগ ভবনই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। আগুন লাগলে সরু রাস্তায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে না পারা ও পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে কয়েকগুণ। এ কারণে আতঙ্কিত অনেক এলাকার বাসিন্দারা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ হওয়ায় আপাতত ফায়ার হাইড্রেন্ট নির্মাণ ও সচেতনতা জরুরি। ঢাকা ওয়াসা জানায়, নতুন পাইপ লাইন বসানোর সময় পুরো শহরেই পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হবে।
পুরনো ঢাকার পোস্তায় গত বুধবার আগুন নেভানোর কাজ শুরুর কিছুক্ষণ পরেই পানি সংকটে পড়ে ফায়ার সার্ভিস। সরু গলিতে গাড়ি ঢুকতে না পারায়ও সমস্যা হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে।
ঢাকা দক্ষিণের বেশিরভাগ জায়গায়ই এমন সরু রাস্তা, অলিগলি পেরিয়ে চলাচল করেন বাসিন্দারা। রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থের গুদাম, আবাসিক এলাকায় কারখানা ও অনিরাপদ বৈদ্যুতিক লাইনের ছড়াছড়ি এলাকাজুড়ে। আগুন লাগলে নিরাপদ জায়গায় বের হওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি সরবরাহেরও ব্যবস্থা নেই অনেক জায়গায়। এ কারণে আতঙ্কে থাকেন স্থানীয়রা।
তারা বলেন, এই জায়গায় আগুন লাগলে আমরা ঘর থেকেই বের হতে পারবো না। ভেতরেই পুড়ে মরতে হবে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকার মত ব্যবস্থা নেই। দূর থেকে পাইপ এনে তারা পানি দেয়।
নতুন বহুতল ভবনে নিজস্ব ফায়ার হাইড্রেন্ট তৈরি করছেন অনেকে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু নিজস্ব ভবনেই নয়, প্রয়োজনে অন্য ভবনে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা থাকা উচিত এগুলোতে।
সাবেক ডিজি, ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব) আলী আহম্মেদ খান বলেন, জলাধারগুলো ভরাট হয়ে গেছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এইগুলো উদ্ধার করতে হবে। পানির জন্যেই আগুন নেভাতে সমস্যা হয় বেশি।
অবকাঠামোর এ সংকট রাতারাতি সমাধানযোগ্য নয়, কোথাও তা অসম্ভবও বটে। পুরনো ঢাকার অনেক জায়গায় রাস্তার পাশে পানির কল রয়েছে। লাইনগুলোকে আরও বড় করে দুর্ঘটনার সময় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করার দাবি স্থানীয়দের।
ডিএনসিসির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আউয়াল বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে পরামর্শ করলে ভাল হয় যে তিন ইঞ্চি না চার ইঞ্চি পাইপ দিয়ে রাখবে। যাতে আগুন নিভাতে সহজ ভূমিকা পালন করে।
ঢাকা ওয়াসা জানায়, দমকল কর্মীদের বহরে পানির গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করবে সংস্থাটি।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের যে ৮৭০ টি জলাধার আছে সেই অনুপাতে ৮৭০ ফায়ার হাইড্রেন্ট আছে। নতুন ডিজাইনে আরও ফায়ার হাইড্রেন্ট রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জলাধার তৈরির জায়গা সংকট দূর করতে উড়ালসেতুর নিচে অব্যবহৃত স্থান ব্যবহারের পরামর্শ দেন ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব) আলী আহম্মেদ খান।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *