হলি আর্টিজানে হামলা মামলায় চিকিৎসকসহ ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

অপরাধ আইন ও আদালত এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলায় ইউনাইটেড হাসপাতালের চার চিকিৎসকসহ আরও ১০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে মামলাটির ২১১ সাক্ষীর মধ্যে ৯৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এই ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। একইসঙ্গে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামি ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন আদালত। ১০ সাক্ষী হলেন- ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাসুম বিল্লাহ, ডা. আমিনুল হাসান, ডা. এরসাদুল্লাহ, ডা. একেএম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাত্তার, আবু তাহের ফারুকী, সিআইডির পরিদর্শক জামাল উদ্দিন, শেখ নজরুল ইসলাম, মাসুদ সিদ্দিক ও সিআইডির সহকারী ডিএনএ এনালিস্ট নুসরাত ইয়াসমিন। ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের ওপর গ্রেনেড হামলাও চালান জঙ্গিরা। এতে মহানগর ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন। এরপর ৪ জুলাই গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস বাদী হয়ে মামলা করেন। ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ২৬ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। এরপর ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। এ মামলার আসামিরা হলেন- হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আবদুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ ওরফে রিপন। এর মধ্যে পলাতক মামুনুর রশিদ ওরফে রিপনকে গত ১৯ জানুয়ারি গাজীপুর এবং শরিফুল ইসলাম ওরফে আবদুস সবুর খানকে ২৫ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার গ্রেফতার সব আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এদিকে, সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে হলি আর্টিজান থেকে ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। অভিযানে অংশ নেওয়া পাঁচ জঙ্গির সবাই নিহত হন। হলি আর্টিজান হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহমেদ চৌধুরীকে। ২০১৬ সালের ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় জঙ্গিবিরোধী এক অভিযানে দুই সহযোগীসহ নিহত হন তামিম। রায়হান কবির তারেক ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে আট সহযোগীসহ নিহত হন। সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর মিরপুরের রূপনগরে সিটিটিসি’র জঙ্গিবিরোধী অভিযানে মারা যান। হামলাকারীদের আশ্রয়দাতা তানভীর কাদেরী নিহত হন ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরে এক অভিযানে। হামলার পরিকল্পনায় অন্যতম সহযোগী সরোয়ার জাহান মানিক ২০১৬ সালের ৮ অক্টোবর আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযান চলাকালে পালাতে গিয়ে ভবনের পাঁচতলা থেকে নিচে পড়ে নিহত হন। নুরুল ইসলাম মারজান ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় সিটিটিসি ইউনিটের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এক সহযোগীসহ নিহত হন। বাশারুজ্জামান ওরফে চকোলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান নিহত হন ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সিটিটিসি’র অভিযানে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *