শেরপুর থেকে ৩ শতাধিক লোকের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা নিয়ে সাজাপ্রাপ্ত ২ জন পলাতক আসামী রাজধানীর তুরাগ থেকে গ্রেফতার

Uncategorized আইন ও আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ শেরপুর জেলায় প্রায় ৩ শতাধিক ব্যক্তির নিকট হতে ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা সাজাপ্রাপ্ত ২ জন পলাতক আসামীকে রাজধানীর তুরাগ এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ এর একটি টিম, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


জানা গেছে, বাবর অ্যান্ড কোং (প্রাঃ) লিমিটেড এর বর্তমান চেয়ারম্যান আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০) এর নামে আদালত হতে ৩২ টি গ্রেফতারী ও ০৩টি সাজা পরোয়ানা সহ মোট ৩৫টি গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং আসামী মিসেস কামরুন নাহার হাসেম (৬১)’কে গ্রেফতারের জন্য আদালত হতে মোট ৩টি গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হয়।

শেরপুরে বাবর অ্যান্ড কোং (প্রাঃ) লিমিটেড এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০) এর বাবা মৃত আবুল হাসেম। মৃত আবুল হাসেম জীবিত থাকাবস্থায় সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে ব্যবসার জন্য প্রলুব্ধ করে তাদের নিকট হতে অগ্রিম টাকা গ্রহণ করেন।

সাধারণ মানুষের নিকট হতে কোটি কোটি টাকা গ্রহণের একপর্যায়ে আবুল হাসেম মৃত্যুবরণ করায় তার ছেলে আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০) সাধারণ মানুষের সাথে একই প্রতারনা করে ভূল বুঝিয়ে তাদের বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে আরও অগ্রিম টাকা গ্রহণ করা অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০) ব্যবসার জন্য অগ্রিম ইট বিক্রয়ের ৪৫ কোটি টাকা ও চাল বিক্রয়ের ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে আসে। এই সংক্রান্তে উক্ত বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও লোকাল পত্রিকায় নিউজ করা হয়।

সমকাল ও মানবকন্ঠ পত্রিকা পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, প্রায় ৬ একর জমির উপর ২টি অটো ব্রিকফিল্ড, ৩টি ফিলিং ষ্টেশন, ১টি অটো রাইস মিল, পোলট্রি ফার্মসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০) এর মালিকানাধীন বাবর অ্যান্ড কোম্পানীর এবং জেলা হাসপাতাল সড়কের নারায়নপুরে একটি তিনতলা বাড়ী রয়েছে তাদের। মূলত এইসব দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে ভূল বুঝিয়ে তাদের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা বিভিন্ন ব্যবসা বাবদ অগ্রিম গ্রহণ করা হতো।

আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০) ঢাকায় পালিয়ে আসার পর সাধারণ মানুষ তাকে গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন করা সহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন এবং আদালতে একাধিক মামলা করেন।

যার ফলে গ্রেফতার কৃত আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০) এর বিরুদ্ধে আদালতে হতে ৩২টি গ্রেফতারী ও ৩ টি সাজা পরোয়ানা ইস্যু করা হয় এবং আসামীর মা মিসেস কামরুন নাহার হাসেম (৬১) এর নামে ০৩টি মামলায় মোট ৩টি গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করা হয়। এসংক্রান্তে র‌্যাব-১ এর নিকট সাধারণ ভুক্তভোগীরা একটি অভিযোগ করেন এবং আইনগত সহায়তা কামনা করেন।

এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব-১ ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ২৩ আগস্ট আনুমানিক ৭ টা ১০ মিনিটের সময় র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, সিআর মামলা নং-৭৭/২০২১, ধারা- N.1.Act এর ১৩৮/১৪০ এবং সিআর মামলা নং-১৫০/২০২১, ধারা- N.1.Act এর ১৫০ এর গ্রেফতারি পরোয়ানা ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী ডিএমপির তুরাগ থানাধীন রাজউক উত্তরা এ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্ট, হাসনাহেনা বিল্ডিং, ফ্লাট নং-৬০৩, সেক্টর-১৮ এ অবস্থান করছে।

প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও সাজাপ্রাপ্ত আসামী কামরুজ্জামান সুজন (৪০), পিতা-মৃত আল হাজ্জ আবুল হাসেম, থানা-শেরপুর সদর, জেলা-শেরপুর এবং মিসেস কামরুন নাহার হাসেম (৬১)’ স্বামী-মৃত আল হাজ্জ আবুল হাসেম, থানা-শেরপুর সদর, জেলা-শেরপুরদের গ্রেফতার করে।


বিজ্ঞাপন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *