বিশেষ প্রতিবেদক : বৈধ পণ্য আমদানির আড়ালে বেনাপোল বন্দরকে অবৈধ ভায়াগ্রার রুট বানানোর চেষ্টা করছে একটি চক্র। আর এ কাজে সহায়তার অভিযোগ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অবশ্য এ অপতৎপরতা রোধে বেনাপোল কাস্টমস তৎপর হলেও তাদের আশংকা দেশের অন্য বন্দরগুলো টার্গেট হতে পারে চক্রটির। আর অবৈধভাবে আসা এ ভায়াগ্রা ইয়াবার বিকল্প মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার শংকা বিশেষজ্ঞদের। তাই দেশের সকল বন্দরে সর্তকতা জারির দাবি তাদের।
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে গার্মেন্টস পণ্য, মেশিনারিজ, বিভিন্ন ভারী শিল্পের কাঁচামাল ও ক্যামিকেলসহ তিন শতাধিক পণ্য আমদানি হয়।
তবে বৈধভাবে ভারী শিল্পের কাঁচামাল ও কেমিকেল আমদানির আড়ালে অবৈধ ভায়াগ্রা আমদানি করছে একটি চক্র। বিশেষ করে সোডিয়াম স্টার্চ গ্লাইকোলেট, মেইজ স্টার্চ, কর্ন স্টার্চসহ সাদা পাউডার জাতীয় পণ্যের সাথে আমদানি করা হচ্ছে এ ভায়াগ্রা। গত এপ্রিল মাসের শুরুতে কাস্টমস কর্তৃক ২শ কেজির একটি চালান আটকের মধ্য দিয়ে উম্মোচিত হয় এ চোরাচালানোর বিষয়টি। এরপর ৬ জুলাই আটক করা হয় আড়াই হাজার কেজির আরো একটি চালান। জব্দকৃত এ ভায়াগ্রার মূল্য ২ হাজার ৩শ কোটি টাকা। অথচ পরীক্ষণ বিভাগের অস্বচ্ছতায় প্রায় ছেড়েই দেয়া হচ্ছিল এ চালানটি।
একজন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী বলেন, কিছু সুযোগ সন্ধানী আমদানীকারক সব সময়ই ছিলো। এখনো আছে। এরা বৈধ পণ্যের সাথে অবৈধ পণ্য মিশিয়ে নিয়ে আসে।
এ প্রসঙ্গে বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার দীপা রানী হালদার বলেন, আমাদেরকে নির্ভর করতে হয় বুয়েটের প্রতিবেদনের উপর। এ চালানের সময় আমরা বুঝতে পারলাম তাদের দেয়া প্রতিবেদনও সব সমঙ সঠিক হচ্ছে না।
ভায়াগ্রার এ চালান দুটি আটকের পর বেনাপোল কাস্টমস তৎপর হলেও তাদের আশংকা দেশের অন্য বন্দরগুলো টার্গেট হতে পারে চক্রটির।
বেনাপোলের কাস্টমস কমিশনার মুহাম্মদ বেলাল হুসাইন চৌধুরী বলেন, অফিসারদের কোনো না কোনো ভাবে এটা বুঝিয়ে তারা নিয়ে যেতে পারে। এ কারণে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। রাজস্ব বোর্ডকেও আমি এটা জানিয়েছি।
এদিকে অবৈধভাবে আসা এ ভায়াগ্রা ইয়াবার বিকল্প মাদক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার শংকা রয়েছে জানিয়ে দেশের সকল বন্দরে সর্তকতা জারির দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কিশোর মজুমদার বলেন, ভায়াগ্রাকে মাদকের বিকল্প হিসেবে তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। তাই সরকার ও কাস্টমসকে এ বিষয়ে আরো বেশি সতর্ক হওয়া দরকার।
ভায়াগ্রা পাচাররোধে বিশ্ব কাস্টমস সংস্থা কর্তৃক সারাবিশ্বে সর্তকতা জারি রয়েছে। এরপরও ভায়াগ্রার চালান প্রতিরোধে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ভারতীয় কাস্টমস ও বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে পাশাপাশি দেশের সাড়ে চার হাজার কাস্টমস কর্মকর্তাদের ই-মেইলে সর্তকতার বার্তাও পাঠানো হয়েছে।