নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ মঙ্গলবার ২৭ সেপ্টেম্বর, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে নিয়ে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। সবচেয়ে বড় আড়তের কাজ করে চট্টগ্রাম বন্দর। এ বন্দরটি ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। বন্দরের কাজে কিছুটা সমস্যা আছে। চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের একসাথে কাজ করতে হবে।
কিছু জটিলতায় কাস্টমস ও ব্যবসায়িরা একে অপরকে দোষারোপ করে থাকে। কাস্টমস জটিলতা দূর করতে মালামাল ছাড়ানোর জন্য ব্যবসায়িদের সকল কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে। এরপরেও মালামাল ছাড় করতে কারো কোন অবহেলা থাকলে দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার সাথে সাথে চট্টগ্রাম বন্দর মালামাল ছাড় করে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে দেশীয় বিনিয়োগেরপাশাপাশি বিদেশী বিনিয়োগও চাই। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। এ লাইফলাইনকে আরো ছড়িয়ে দিতে চাই।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘দৈনিক ইত্তেফাক’ আয়োজিত ‘দেশীয় বিনিয়োগে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
গ্লোবাল টেলিভিশনের সিইও এবং এডিটর ইন চীফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান, বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নূরুল কাইয়ুম খান, শিপ হ্যান্ডলিংএন্ড বার্থ অপারেটর এসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলে ইকরাম চৌধুরী, নৌপরিবহন অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক কমডোর (অবঃ) সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ.ই. মামুন, যমুনা টেলিভিশনের সিইও ফাহিম আহমেদ, বৈশাখী টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো:আয়নুল ইসলাম। ব্যবসায়ী খায়রুল আলম সুজন মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে এ পর্যায়ে গেছে। মোংলা বন্দর ও পায়রা বন্দর এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থে পায়রা বন্দরের উন্নয়ন হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
এতে চট্টগ্রাম বন্দরের রাইট (অধিকার) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের অধিকার মানে বাংলাদেশের অধিকার। জাপানের অর্থায়নে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে। পায়রা বন্দরের ফার্স্ট টার্মিনাল ও আন্দারমানিক নদীর ওপর সেতু সির্মাণের কাজ চলছে।
মোংলা বন্দরের আউটারবারে ড্রেজিং হয়েছে এবং ইনারবারে ড্রেজিং চলছে। পদ্মা সেতু হয়ে গেছে। মৃতপ্রায় মোংলা বন্দরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে লাভের ধারায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কিছু করতে হবে-বাংলাদেশ এখন আর সে চিন্তায় নাই; বাস্তবায়নে আছে।
২০২৬-২৭ সালের দিকে বাংলাদেশকে অন্যধরনের মেরিটাইম সেক্টর হিসেবে দেখতে পাব। মাতারবাড়ী বন্দর সিঙ্গাপুরের মতো হবে। চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব উন্নয়নের পাশাপাশি পায়রা বন্দরের উন্নয়নে অর্থায়ন করছে। চট্টগ্রাম বন্দর করোনার সময়ে সরকারি তহবিলে ৩০ কোটি টাকা দিয়েছে।
সে অর্থ সরকার করোনা মোকাবেলায় ব্যয় করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে ৩,৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চট্টগ্রাম বন্দর।
অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্যপরিবহনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম-ঢাকা নৌপথ বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ড্রেজিং করা হচ্ছে। মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের সমীক্ষা হচ্ছে। নৌপথে কন্টেইনার নিয়ে আসার কথা ভাবতে হবে।