‘মিস ঢাকা ২০২০’
বিনোদন ডেস্ক : রেজিষ্ট্রেশন চলছে ‘মিস ঢাকা ২০২০’ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার। হাজার হাজার প্রতিভাবান নারীর প্রিয় প্লাটফর্ম হয়ে উঠেছে মিস ঢাকা ২০২০। প্রতিযোগিতার প্রথম ও প্রধান প্রতিপাদ্য করা হয়েছে মর্মবানীকে। প্রতিযোগিতার বাছাই সোপানে এর বিঘোষিত ব্যতিক্রম ও মৌলিক মূল্যবোধ চোখে পড়ে। এটি প্রশংসাযোগ্য। কবি রফিক আজাদের মতো বলতে গেলে, এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়। দেহজ সৌন্দর্য প্রকাশের প্রচলিত ধারণা ভাঙ্গার মূর্ত প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠে এসেছেন আমাদের সময়ের ক’জন কৃতি, দরদী ও মনীষী নারী। এঁরা হলেন দরদী নারী মাদার তেরেসা, নারী শিক্ষার অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত, কবি ও জাগরণের দূত বেগম সুফিয়া কামাল এবং জনকল্যাণ ও সমাজসেবার পুরোধা নারী নওয়াব ফয়জুন্নেসার মতো গুণী ও দেশবরেণ্য নারী।এই মহিয়সি নারীরা মিস ঢাকা ২০২০ এর আইকন। ধারণা-বিকাশের এই পছন্দের মধ্যেই ঠাহর করে নিতে কষ্ট হয় না উদ্যোক্তাদের ব্যতিক্রমী বিবেচনা এবং রুচি ও ভাবনার স্তর-বিন্যাস। মিস ঢাকা ২০২০’র ক্ষেত্রে আমরা “মিসেস মালয়েশিয়া” প্রতিযোগিতার কথা স্মরণ করতে পারি। এখানেও পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সচেতনতা, দাম্পত্য ও সাংসারিক সুখ সাচ্ছন্দ্য, সমঝোতা, নৈতিক আদর্শ অনুসরণ ও প্রচার, হতদরিদ্র ও সুবিধা-বঞ্চিতদের মানবিক ত্রাণ ও সহায়তা, নারী ও শিশুদের সক্ষমতা-বৃদ্ধিতে অবদান রাখা, এই সব মূল্যায়নের ভিত্তি সৌন্দর্য্যরে সাথী হচ্ছে। ফলে যারা ভবিষ্যতে এ ধরণের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবার কথা ভাবছেন, তাদের মধ্যে রূপচর্চার চেয়ে জ্ঞানচর্চা, সুকুমার বৃত্তির অনুশীলন এবং সেবা ও সহানুভূতির আবেগ তৈরি হচ্ছে। ফলে উপকৃত হচ্ছে তাদের সমাজ এবং রাষ্ট্র।‘মিস ঢাকা’ প্রতিযোগিতার ব্যতিক্রমগুলো দেখলে রূপের এই নতুন বৈশ্বিক-বিন্যাস অনুসরণের মানসিকতা উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না। নন্দনতত্ত্ব বা সৌন্দর্যতত্ত্বকে এত দিন নারীর রূপ বর্ণনা ও বিশ্লেষণে সীমিত রাখা হয়েছে। এখন যা প্রয়োজন তা’ হলো নারী সম্পর্কে ধারণারই আমূল পরিবর্তন। তাঁরা যথার্থই বলেছেন: “নারীমুক্তির যে আনন্দ অনুভূতি, তার বিকাশ-প্রক্রিয়া এবং বৈশিষ্ট্যকেই আমরা সৌন্দর্য হিসাবে উপস্থাপন করতে চাই।” নন্দনতত্ত্বের নতুন বিন্যাসে এই উদ্যোগের ভূমিকাকে এ জন্য প্রশংসা করতেই হয়।‘মিস ঢাকা’ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা নিয়ে এত ব্যতিক্রমী আশাবাদ অনর্থকও নয়; নিরর্থক তো নয়ই। সৌন্দর্যের বিশ্বজোড়া প্রচলিত মাণদন্ডের বাইরেও এমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে যেগুলোর দিকে তাকালে ‘মিস ঢাকা’ প্রতিযোগিতার ব্যতিক্রম ধর্মিতার দাবী কিংবা আশাবাদকে একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। আমরা কি ‘মিস ঢাকা’ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার উন্মুক্ত মঞ্চ থেকে এমন একজন বা বর্ষ পরম্পরায় এমন হৃদয়বান নারীর খোঁজ পাবো না? আমরা কি মনের সৌন্দর্যকে গড়ন-গঠন-বচনের সেকেলে ও দেহসর্বস্ব গুণাবলীর জিঞ্জির ভেঙ্গে “মানবতার পথে সৌন্দর্যের পদচারনা” দেখতে পাবো না?