নিজস্ব প্রতিনিধি : বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ চান এমপিও নীতিমালা সংশোধনের দাবিতে রাজপথে নামা নন-এমপিও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী সবই জানেন। তার সাক্ষাত পেলেই সব সমস্যার সমাধান হবে বলেও মনে করেন তারা।
নন-এমপিও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত পেলে এমপিও নীতিমালা ২০১৮-এর স্থগিতপূর্বক স্বীকৃতিই একমাত্র মানদণ্ড ধরে শুধু স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ এমপিওভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরবেন তারা। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নীতিমালার ভুল-ক্রটি তুলে ধরতে চান তারা।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, জুমার নামাজের প্রস্তুতি চলছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই শিক্ষক-কর্মচারীরা। আন্দোলনের অংশ নেয়া রেজাউল করিম নামে এক শিক্ষক বলেন, ‘এমপিও নীতিমালা-২০১৮’ ভুলে ভরা ও নানা অসংগতিপূর্ণ।
এমপিওভুক্তির (বেতনের সরকারি অংশ) নীতিমালা অনুসরণ করে এমপিও তালিকা প্রকাশ হলে দেশের বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকার ব্যাপক জনসমালোচনার মুখে পড়বে, জন-অসন্তোষ তৈরি হবে। আমরা সেটা চাই না। আমরা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ এমপিওভুক্তির আওতায় দেখতে চাই।
এ ব্যাপারে ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় বলেন, আমরা এর আগেও আন্দোলন করেছি। দাবি আদায় হয়নি। গত মার্চেও আমরা আন্দোলন করেছি। আশ্বাসে ফিরেছি কর্মস্থলে। কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। এমপিওভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হলেও ভুলে ভরা নীতিমালা তৈরি করে নতুন সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি, ভুল ও অসঙ্গতিগুলো সংশোধন করার অনুরোধ করেছি। প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা সংশোধন না করে এপিওভুক্তির নতুন তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আবারও আন্দোলনে নেমেছি। আমরা প্রত্যাশা করি প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাবো। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতেই সব সমস্যার সমাধান মিলবে।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, এমপিও নীতিমালা-২০১৮ পরিশিষ্ট ‘খ’ এ নিম্ন-মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) শ্রেণি পর্যন্ত ১৫০ জন শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘খ’ তে নিম্ন-মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও ফলাফল চাওয়া হয়নি। এ স্তরে কোন মানদণ্ডে এমপিও করা হবে বিষয়টি আমদের কাছে স্পষ্ট নয়। পরিশিষ্ট ‘ক’ তে মাধ্যমিক পর্যায়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩০০ জন এবং মফস্বলে ২০০ জন আবার বালিকা বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শহরে ২০০ জন, সফস্বলে ১০০ জন চাওয়া হয়েছে। উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৪০ জন, ২০০ জনে ৪০ জন পরীক্ষার্থী হলে ১৫০ জনে ২৬ জন হওয়ার কথা থাকলেও উভয়ক্ষেত্রে ৪০ জন চাওয়া হয়েছে।
নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১২০ জনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে ৪০ জন, আবার ১৫০ জনের মধ্যেও ৪০ জন চাওয়া হয়েছে। স্নাতক পর্যায়েও এমন জটিলতা তৈরি করা হয়েছে।
তারা বলেন, ভুলে ভরা ও নানা অসঙ্গতিপূর্ণ এমপিওভুক্তির (বেতনের সরকারি অংশ) নীতিমালা অনুসরণ করে এমপিও তালিকা প্রকাশ হলে দেশের বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সরকার ব্যাপক জনসমালোচনার মুখে পড়বে, জন-অসন্তোষ তৈরি হবে।