আজকের দেশ ডেস্ক : পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লিয়াকতপুরে তেজগাম এক্সপ্রেসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা বেড়ে ৭৩য়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন আরো ৪০ জন। এদের মধ্যে কমপক্ষে ১২ জনের অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে বলেও জানা যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে করাচি থেকে রাওয়ালপিন্ডি যাওয়ার পথে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে চলন্ত ট্রেনটিতে আগুন ধরে যায়। পাঞ্জাব প্রদেশের দক্ষিণে রহিম ইয়ার খান শহরের কাছে লিয়াকতপুর এলাকার কাছে এই দুর্গটনা ঘটে। এতে ট্রেনের তিনটি বগি পুড়ে ছা্ই হয়ে গেছে।
ট্রেনে আগুন লাগার পর আতঙ্কিত যাত্রীরা চিৎকার শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে অনেক যাত্রী চলন্ত ট্রেন থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েন। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়। সবমিলিয়ে ৪০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদের প্রায় সবার অবস্থাই গুরুতর।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭৩ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১৮টি মরদেহ এত খারাপভাবে পুড়েছে যে তাদের সনাক্ত করা যাচ্ছে না। হতাহতদের লিয়াকতপুরের ডিএইচকিউ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ট্রেনের যে বগিতে বিস্ফোরণটি ঘটেছে, সেটি তাবলীগ জামাতের এক লোক বুকিং নিয়েছিলেন। সকালের নাস্তা তৈরিতে তিনি গ্যাস স্টোভে ডিম সিদ্ধ করছিলেন, তখনই বিকট বিস্ফোরণে চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানের রেলওয়েমন্ত্রী শেখ রশিদও এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরে আগুন ট্রেনের অরো দুটি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানে দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রীরা খাবার তৈরির জন্য গোপনে স্টোভ ব্যবহার করে থাকেন।
ঘটনাস্থলে এখনও কাজ করছে দমকল ও উদ্ধার বাহিনীর ১১২২ টিম। তারা ট্রেনের বাকি যাত্রীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে আগুনে পুড়ে যাওয়া বগিগুলো আলাদা করে ফেলা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করতে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও মুলতান থেকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের উন্নত ও সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে ট্রেন দুর্ঘটনা কোনো নতুন বিষয় নয়। সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাটি ঘটেছিলো ২০০৫ সালে। সিন্ধ প্রদেশের এক রেলওয়ে স্টেশনে দুই টেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রায় ১৩০ যাত্রী নিহত হয়েছিলো।