বিশেষ প্রতিবেদক : বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক উৎপাদন ও বাজারজাতের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ থাকলেও ড্রাগ প্রশাসন সঠিক ব্যবস্থা নিতে অনেকটাই ব্যর্থ। র্যাব-১. এর নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সরোয়ার আলম ভেজাল বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখলেও ড্রাগ প্রশাসনের একটি সিন্ডিকেটের সহযোগীতায় অভিযুক্ত ইউনানী, আর্য়ূবেদিক ও হারবাল কোম্পানী এখনো বাজারজাত করছে ক্ষতিকারক ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও রুচিবর্ধক ওষুধ। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ড্রাগ প্রশাসন কিছুটা নড়েচড়ে বসে। মহাপরিচালক নিজ উদ্যোগে অঞ্চল ভিত্তিক ড্রাগ সুপারকে অভিযুক্ত কোম্পানীর ভেজাল ঔষধ জব্দ করে ড্রাগ টেষ্টিং ল্যাবরেটরীতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু ড্রাগ সুপারদের অনেকেই সেই নির্দেশকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অভিযুক্ত কোম্পানীর স্বপক্ষে থাকায় অদ্যবদি কোনো ঔষধই ড্রাগ টেষ্টিং ল্যাবরেটরীতে পৌছেনি। বরং অভিযুক্ত কোম্পানীর অনেকেই প্রোডক্টঅনুমোদনের অ্যানেক্সার জমা দিয়েই ট্রেড নামে বাজারজত করছেন পুদিনা, পুদিনা-প্লাস, রুচিতা, রুচিতা-প্লাস, প্রোটিন-প্লাস, কিউভিট-প্লাস, ত্রিফলা-প্লাস, অ্যামিনা-প্লাস এবং কালোজাম, আপেল, আঙ্গুর, কমলা, অরেঞ্জী ও ব্যানানা নামের অবাস্তব ঔষধ।
সান ড্রাগ ইউনানী ল্যাবরেটরীতে, উৎপাদন লাইসেন্স নম্বর ইউ-২৫২, সাবেক সানরাইজ ইউনানী ল্যাবরেটরীজ। ফরিদপুরের শহিদ নামের এক ব্যবসায়ী মালিকানা পরিবর্তন ছাড়াই নবায়ন বিহীন সান ড্রাগ ইউনানীর ব্যানারে ২২টি প্রোডক্ট তালিকা সরবরাহের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষধ নকল করে মিটফোর্ডসহ সারাদেশে বিক্রি করতেন। বর্তমানে এই ভেজাল ব্যবসায়ী হেলদী-গোল্ড (ফ্যামেলী টনিক) নামের সিরাপ মিটফোর্ডে বাজারজাত করছেন, যা লাইসেন্স নং- ইউ-১৮০, ডিএআর নং-ইউ-৬৬-এ-০০৬। প্রাপ্ত তথ্যে মতে, হেলদী গোল্ড সিরাপের লেবেল-কার্টন বানাতে গিয়ে রাজধানীর ফকিরাপুলের সালাউদিদ্দন প্রিন্টিং প্রেসে-এ ড্রাগ প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদিত চুয়াডাঙ্গার চিশতিয়া দাওয়াখানা এবং শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক ট্রেড নামের যে কাগজ-পত্র জমা দিয়েছেন তা জাল ও কারসাজী করে বানানো। কেনন, সান ড্রাগ ইউনানী ল্যাবরেটরীজ ও চিশতিয়া দাওয়াখানা নামের কোম্পানীর কোনো অস্তিত্ব নেই। এই নকল ও ভেজাল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সান ড্রাগ ল্যাবরেটরীজ আয়ু এবং বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষধ নকল করে বাজারজাত করার অভিযোগ রয়েছে।
সিলেটের মাইসান ল্যাবরেটরীজ ইউনানী লেবেল-কার্র্টনের অনুমোদন ছাড়াই অবাস্তব ট্রেড নামে ভেজাল ও ক্ষতিকারক সিরাজ বিক্রির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও ড্রাগ প্রশাসনের নজরে আসেনি। প্রতিষ্ঠানটি মাল্টি ভিটামিনের ব্যানারে অবৈধভাবে ঔষধ বানিয়ে ট্রেড নামে মিটফোর্ডের সুরেশ^রী মার্কেট ও আলী চেয়ারম্যান মার্কেট এবং রাজধানীর ফুটপাতসহ রংপুর, জামালপুর, বরিশাল, খুলনা ও দিনাজপুরে ডিলার নিয়োগ দিয়ে আন্ডার রেটে-এ কালোজাম, মাল্টা প্লাস ও আপেল-প্লাস, বিক্রি করে এখন আলোচিত। তথ্য মতে, কালোজাম মাল্টা- প্লাস ও আপেল প্লাস নামের কোনো ঔষধ ড্রাগ প্রশাসনের আওতাভুক্ত নয়। তারপরও মাইসান ল্যাবরেটরীজ ইউনানীর ব্যবসায়ীক কারসাজী ও প্রতারণা এখনো চলছে।
ইউনানী আয়ূর্বেদিক ঔষধ শিল্প সমিতির তথ্য মতে, ম্যাবকো ফার্মার বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক ‘পিউটন এবং বিভা-গেইন’ সিরাপ নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটি ড্রাগ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মিটফোর্ডসহ সারাদেশে বাজারজাত করছে। প্রতিষ্ঠানটি অর্থের বিনিময়ে স্যাম্পল পরিবর্তন করে মানসম্মত রিপোর্ট বাগিয়ে নিতে সক্ষম বলেই লোক দেখানো পরিক্ষা করানোর নামে পিউটন সিরাপ জব্দ করা হয়েছিল। ড্রাগের একটি সিন্ডিকেট যেখানে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে সোচ্চার ও সহযোগিতা করছে, সেখানে টেষ্টিং ল্যারটেরী কর্তৃক পরিক্ষা করলেও জনস্বার্থের কোনো উপকারে আসবে না। বাস্তবতা হলো, একটি সিন্ডিকেট আর্থিক সুবিধা নিয়ে ম্যাবকোর জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে সহায়তা করায় কোনো অভিযোগই বাস্তবায়ন হয়নি। বরং প্রশাসনের সহযোগীতায় আরো বেপরোয়া হয়ে ক্ষতিকারক পিউটন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা ফার্মা ইউনানী ভিটামিন, ক্যাসিয়াম ও রুচিবর্ধক সিরাপসহ ক্ষতিকারক জিনসিন ও আমলকি বিক্রি করে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। ড্রাগ প্রশাসনের সহযোগীতায় ডিপি পুদিনা-এম, রুচিফেন, রুচক, ডিপি-আমলকি, রেড জিনসিন,ডিপি-আমলা, ডিপি-দিনার, ডিপি-আঙ্গুর, ভিটেম-জেডও পিভেজিন নামের ভেজাল ঔষধ বিক্রির মাধ্যমে জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে এখনো সক্রিয়। প্রতিষ্ঠানটি যেখানে ৪৫০ মিলি সিরাপ মাত্র ৩০ টাকা বিক্রি করছে, সেখানে ট্রেড নামের প্রায় ঔষধের লেবেল-কার্টনে কিভাবে ‘আইএসও-৯০০১’ সার্টিফাইড কোম্পানীর লোগো ব্যবহার করে, তা ড্রাগ প্রশাসনই ভালো করে জানেন।
জেবিএল ড্রাগ লেবরেটরীজ ইউনানী চুড়ান্ত অনুমোদন ছাড়াই অনেক ঔষধ ট্রেড নামে সারাদেশে ডিলার নিয়োগ দিয়ে আন্ডার রেট- এ বিক্রি করছে-রুচিটন, দামানিল, অ্যামরো-ভি, হিমু-এক্সটা, জিনটোরিন, মোলেক্স-গোল্ড, জেবিলেক্স, জেবিএল-কালি, নিশিক্যাপ, লিপি, লাফিগ, ভিটাপ্লাস, ও জেসিল্ডা নামের ক্ষতিকারক ঔষধ। প্রতিষ্ঠানটি জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকলেও গাজীপুরর দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রতিষ্ঠনটিকে জবাব দিহীতার আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। ভূক্তভোগী ব্যবাসয়ীদের মতে, ড্রাগ টেষ্টিং ল্যাবরেটরী কর্তৃত তিনটি ঔষধ মান-বহির্ভূত হওয়ার পরও প্রচলিত নিয়মে ব্যবস্থা না নিয়ে সহযোগীতা করায় প্রতিষ্ঠনটি এখনো ভেজাল ব্যবসায় সক্রিয় রয়েছে।
আল-সাফা ফার্মাসিউটিকালস ইউনানীর ব্যবসায়ীক কারসাজী এখনো চলমান। কোম্পানীর রুচিনীড, হাসিটন, জেলিটন, আমটন, হানিটন, গোপালটন, মাস্তিটন ও অরেঞ্জী নামের ঔষধ নিয়ে চলছে বির্তক। সংশ্লিষ্ট ড্রাগ সুপারদে সাথে আর্থিক সর্ম্পক থাকায় জনস্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য কখনোই আইনের মুখোমুখি হতে হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি ম্যাবকো, ঢাকা ফার্মা, নফিউ, একরাম জেবিএল, রবিন, আশরাফুল, আধুনিক, সিকো, বিসমিল্লাহ, নেচার, ইন্ট্রা, শেড, জিএমসহ প্রায় শতাধিক ইউনানী ও আয়ূর্বেদিক ঔষধ কোম্পানীর ঔষধ আন্ডার রেটে-এ ক্রয় করে ওভার রেটে-এ বিক্রি করছে। এমনকি বিভিন্ন কোম্পানীর বহুল প্রচলিত ঔষধ সমূহ আল সাফা ইউনানী এবং পাইওনিয়ার ল্যাবরেটরীতে অবৈধভাবে উৎপাদন পূর্বক বাজারজাত করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আল-সাফা ইউনানীর সাইন বোর্ড এলাকায় তার কারখানায় ভেজাল ঔষধ উৎপাদনের পাশাপাশি বাজারজাত করে রাতের আধারে অসাধু ব্যবসায়ীদের পছন্দের ঔষধ বানিয়ে আল-সাফার কার্টুনে সরবরাহ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পাবনা ইন্ট্রা ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনানীর জিনসিন-প্লাস সিরাপ ফেন্ডি ডিল এর বিকল্প হিসেবে দেশের আনাচে কানাচে পান বিড়িও মুদিরদোকানে মুড়ি মুকরির মতো বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২৪টি এনার্জি ড্রিকিংস ও জিনসিন প্লাস সিরাপ রাসায়নিক পরীক্ষা চালিয়ে যে সব এনার্জি ড্রিংকসে উচ্চ মাত্রার ক্যাফেইন, অ্যালকোহল, ভায়াগ্রা সেনেগ্রার উৎপাদন পেয়ে ছিলেন, তার মধ্যে ইন্ট্রা ফার্মার জিনসিন প্লাস ছিল অন্যতম। সিরাপটিতে সিনডেনাফিল সাইট্রেট ছিল ১৩৫.২৫ মিলিগ্রাম এবং ক্যাফেইন ছিল ২১০.৫০ মিলিগ্রাম। প্রতিষ্ঠানটি ড্রাগ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আগের মতোই জনস্বার্থের জন্য ক্ষতিকর জিনসিন প্লাস, হরমোসিন, হাব্বে নিশাত, নিশাত এমএক্স, রুবিকর্ট এবং আরোকমাউল লাহুম সিরাপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।
এদিকে, নরসিংদীর ঔষধি ল্যাবরেটরীজ আয়ু-ট্রেড নামে ওডিজিন, অভিটন, অরভিট ও অভিক্স নামক ঔষধ সামগ্রী ক্ষতিকারক কেমিকেল ব্যবহারপূর্বক উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। সুরমা ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানী ট্রেড নামে আরক পুদিনা, সেব-এস ও পিউরী বি সিরাপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। উক্ত ঔষধ সমুহে ষ্টোরয়েড জাতীয় কেমিক্যেল ব্যবহারের ফলে সারাদেশে আরক পুদিনা, সেব এস ও পিউরী বি সিরাপগুলোর ব্যাপক হারে বিক্রি হচ্ছে। এসব সেবনে মানবদেহের ক্ষতি হচ্ছে। আধুনিক ফার্মাসিউটক্যালস ইউনানী ট্রেড নামে রুচিতা প্লাস, এস-পিল, আম্বর-গোল্ড ও লেডিনিল। র্যাম ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানী ট্রেড নামে রুচি-প্লাস, এসএস ফার্মা -ট্রেড নামে পিউরিসিন, এস টোন, রিভাট ও এস জিনসিন। সেইফকো ফার্মা ইউনানী আবারো ট্রেড নামে মাল্টিসেইফ, সেইফ-প্লাস, সেইফ-জেড ও জিনসেং-এস। নরসিংদীর নেপলস ল্যাবরেটরীজ লিঃ ট্রেড নামে এবি –ট্যাব,নিম ট্যাব, এল-টিউনি, নেপ-জিন, ভি-ক্যাপ, ভিট ফেম গোল্ড, ন্যাপ-ভিট ও ভি-৫০, এবি-টাইজার, গো-ফিট, বডি ফিট এবং ন্যাপ টাইজার, নামক ঔষধ সমূহের ষ্টোরয়েড জাতীয় কেমিক্যেল ব্যবহার পূর্বক জনসাধরণের জন্য ক্ষতিকারক ঔষধ সমূহের উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।
বগুড়ার এমি ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) ট্রেড নামে যৌবন, ফ্রেশইন, এমি-ভিট-জি, ভিগোটন, ভিগার- প্লাস, মিন্সটুয়েড, ফেভারফিট অয়েল ও শক্তি প্লাস ট্যাবলেট এবং একই ডিএআর নাম্বার ব্যবহার করে এমি – কোল্ড ও বাসকারিস্ট নামক কাশি সিরাপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। দিদার ফার্মা সিউটিক্যালস (আয়ু) ডি হরমোলিন যৌবন শতদল রতি বিলাস, শুক্রসঞ্জিবনি হালুয়ায় সিনড্রেনাফিল সাইট্রেড ব্যবহার পূর্বক যৌন উত্তেজক ঔষধ সমূহ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। যাহা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সিরাজগঞ্জের ম্যানহার্ট ল্যাবরেটরীজ ইউনানী ট্রেড নামে এম-টন, এম-ফিট, এম-ভিট, জিনসিন,ম্যানসিন, লিভার গার্ড ও এম জাইম নামক ঔষধ সমূহে স্টোরএড ও সিনড্রেনাফিল সাইট্রেড ব্যবহার পূর্বক ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।
নারায়নগঞ্জের জেন ফার্মা ইউনানীর বাতিল হওয়া ডুলোক্যাপ ও ভিয়েক্সসহ রোসাপ, ক্যাপসিডাইন, ফিট, উইনফেরা, এক্সাটেন জি, ফ্রনিল, অস্টাসিস, নেপারোলাস ও নিউজেন নাম ঔষধ সমূহে উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। বিসমিল্লাহ ল্যাবরেটরীজ ইউনানী ট্রেড নামে পুদিনা, পিউ বি, বিগোসেব, বি স্ক্রীন, বি আমলকি প্লাস, গ্লোবিরোন, এন্টোজিন ও ইউমিল রুচি-বি উৎপাদন ও বাজারজাতের পাশাপাশি ন্যাচার ফার্মাসিউটিক্যালস ইউনানীর পুদিনা এস এর লেবেল কার্টন নকল করে আরক পুদিনা বানিয়ে বাজারজাত করছে।
ভুক্তভোগীদের তথ্য মতে, একটি সিন্ডিকেট চক্র লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন, প্রকল্প হস্তান্ত, কারখানা স্থানান্তরম রেসিপি অনুমোদন, নমুনা পরিক্ষা, মান নিয়ন্ত্রণসহ কোম্পানী ও প্রোডাক্ট সাসপেন্ড এবং সিলগালার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ড্রাগ প্রশাসনের একজন পিয়ন (বাড়ী কুমিল্লা ) এবং একজন ক্ষমতাসীন ড্রাইভারের যোগ-সাজশে অভিযুক্ত কোম্পানীর মালিকদের জিম্মি করে আর্থিক বাণিজ্য করছে। ফলে, ঢাকার একটি কোম্পানী সকালে সাসপেন্ড হয়ে টাকার বিনিময়ে বিকালে সচল হয়ে উঠে। সক্রিয় সিন্ডিকেটের সহযোগীতায় সেইফকো ফার্মা, সুরমা ফার্মা, ঔষধি ল্যাবরেটরীজ, রয়েল ল্যাবরেটরীজ ইউনানী, ইগো ফার্মা, বিসমিল্লাহ ল্যাবঃ জেন ফার্মা, ইউনিক ল্যাবঃ, নাফিউ ফার্মা, মিষ্টিক, একটিভ ইউনানী, জীনি ইউনানী, ইন্ট্রা ফার্মা, নিকো আয়ুর্বেদিক, আরকে ইউানানী, ইকো ফার্মা, কে ইউ ফার্মা ও শ্রীপুর দাওয়াখানা সব অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে আগের মতোই ভেজাল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ শিল্প মালিক সমিতির তথ্য মতে, একটি সিন্ডিকেট চক্র অসাধু ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা করায় সারাদেশে ভেজাল ব্যবসার নেটওয়ার্ক আরো চাঙ্গা হয়ে উঠছে। ড্রাগ প্রশাসন এসব অনিয়মের বিষয়টি নজরে না নিয়ে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক কোম্পানী ফার্মাসিউটিক্যালস লিখতে পারবে না ছাড়াও যে নিয়ম চালু করেন, তাতে অনেক কোম্পানী ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে বার বার কারখানা পরিদর্শনের নামে কি হচ্ছে তা ভুক্তভোগী মালিক ছাড়া আর কারো জানার সুযোগ নেই। বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ হলে সন্দেহ বশত অনেক কোম্পানী কোনো সময় সিলগালা হতে পারে। এদিকে আঞ্চলিক ড্রাগ সুপারদের সহযোগীতা ছাড়াই ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক ভেজাল বিরোধী অভিযানের নামে অনেক কোম্পানী আর্থিক ও ব্যবসায়ীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ড্রাগ প্রশাসনের কোনো নজরদারী বা তদারকি নেই। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মহাপরিচালক জনস্বার্থে বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রচলিত নিয়মে পদক্ষেপ নিলে ড্রাগ প্রশাসন সিন্ডিকেট মুক্ত হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের ভেজাল ব্যবসা বন্ধ হবে।