নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ প্রথমবারের মতো ‘ব্রেইন ডেড’ রোগীর শরীর থেকে নেয়া দুইটি কিডনি দু’জনের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপনের (ট্রান্সপ্লান্ট) করা হয়েছে যা ক্যাডাভেরিক কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট নামে পরিচিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইউরোলজি বিভাগের রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল এর নের্তৃত্বে বুধবার রাতে ২০ বছর বয়সী সারার দেহ থেকে দুইটি কিডনি দু’জন নারীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
একটি কিডনির ট্রান্সপ্লান্ট সার্জারি বিএসএমএমইউতে হয়েছে, অন্যটি প্রতিস্থাপন করেছে ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন।সারাহ এর শরীর থেকে যাবতীয় ক্রস ম্যাচিং সম্পন্ন করে দ্রুততার সাথে অপসারন এবং প্রতিস্থাপন করা একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল।
সারার স্কুলশিক্ষক মা ‘ব্রেন ডেড’ সারার দুটি কিডনি ও দুটি কর্ণিয়া ট্রান্সপ্লান্টের অনুমতি দেন।কিডনি দুটি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করলেও কর্ণিয়া দুটি এখন ফ্রিজারে সংরক্ষিত আছে।”
দেহদানকারী সারাহ ইসলাম ঐশ্বর্য্য Tuberous sclerosis রোগে আক্রান্ত ছিলো। এ রোগের প্রোগনোসিস খারাপ এবং প্রধান সমস্যা শরীরের নানা স্থানে নন-ক্যন্সারাস টিউমার হয়।
সারাহ এর মৃত্যুর মুল কারণ ব্রেন টিউমার। সারাহ তার জীবন দিয়ে দুজন নারীর জীবন এবং ২ জন ব্যক্তির চোখের জ্যোতি ফিরিয়ে এনেছেন। আমৃত্যু চক্ষু এবং দেহের ভিসেরা দানকে বাংলাদেশে তেমনভাবে প্রচারনা করা হয়না।
সারাহ কিংবা বিএসএমএমইউ এর চিকিৎসক দের নিয়ে নেই মিডিয়ার শোরগোল।ভালো কাজের প্রসার ব্যতিত তা কখনোই জনমনে দাগ কাটতে পারবেনা।
আপনার দেহ মৃত্যুর পর আরেকজনের বাচার আশা জাগাচ্ছে,বাচতে সাহায্য করছে তা কম কি?ইহকাল এবং পরকালের ধর্মীয় হিসেবে এত কল্যাণ নিহিত।
বর্তমানে চক্ষুদান নিয়ে কিছুটা আলোচনা হলেও দেহদান পুরোই নতুন একটি কনসেপ্ট।আমরা বিদেহী সারাহ এর আত্নার মাগফিরাত কামনা করি।একই সাথে দেহদান এর পারমিশন দেয়া সারাহ এর মায়ের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা, একই সাথে ভাগ্যবান দুই নারী এবং কর্ণিয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে চোখের আলো ফিরে পেতে যাওয়া রোগীদের শুভেচ্ছা জানাই।
আরো যারা যারা নীরবে লেখাপড়া এবং গবেষণার জন্য দেহদান করেছেন তারা যথাক্রমে, সঞ্জীব চৌধুরী, অভিজিৎ রয় এবং মোবাশ্বের হাসান প্রমুখ। (তথ্য সূত্র ঃ ডিফেন্স রিসার্চ ফোরাম)