খুচরা বাজারে পেঁয়াজ ১৩০ টাকা
মহসীন আহেমদ স্বপন : রাজধানীর খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম এখনো ১৩০ টাকা। পাইকারিতে এর দাম ১১০ থেকে ১২৬ টাকা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, সব ধরণের পেঁয়াজে ৫ থেকে ১০ টাকা করে কমেছে। শুক্রবার কারওয়ানবাজার ও কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে শীতের আগাম শাক-সবজির সরবরাহ বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম বেড়েছে। সব ধরনের শাক-সবজির চড়া দামে অতিষ্ঠ ক্রেতারা।
এদিকে, শ্যামবাজারে বেঁধে দেওয়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। শ্যামবাজার বণিক সমিতি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা এবং মিশর, তুরস্ক ও চীনের পেঁয়াজের কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ও রসুন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বণিক সমিতি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরা সেই দামে বিক্রি করছি। তবে দু’একজন ব্যবসায়ী জানালেন, নির্ধারিত দামে পেঁয়াজ বিক্রি এখনও শুরু হয়নি।
এদিকে, কারওয়ানবাজারের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম এখন ১১০ থেকে ১২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহ আগে ১৩০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছিল এই পেঁয়াজ। সে হিসেবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে অন্তত ৫ টাকা। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ নেই বললেই চলে। আর মিসরের পেঁয়াজের দাম কমে ৯৫ টাকা ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই ধরণের পেঁয়াজেই কেজিতে দাম ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে।
কারওয়ানবাজারের পাইকারি বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমছে। আগের চেয়ে এখন ৫ থেকে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। আরেক বিক্রেতা অন্তর বলেন, সব ধরণের পেঁয়াজের দামই বাজারে কমেছে। আমরাও কম দামে বিক্রি করছি।
কারওয়ানবাজারের লাকসাম বাণিজ্যালয়ের মালিক মো. হাবিবুর রহমান মোস্তফা বলেন, বাজারে এখনো নতুন পেঁয়াজ উঠেনি। উঠলে আরও দাম কমবে।
কারওয়ানবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা বাংলামোটরের বাসিন্দা শাহীন বলেন, পেঁয়াজের দাম এখনও খুব একটা কমেনি। যেখানে কেজিতে ৮০ থেকে ১০০ টাকা দাম বেড়েছিল, সেখানে কমেছে মাত্র ১০ টাকা।
এদিকে, মহাখালীর বউবাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। এই বাজারের পেঁয়াজের বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, খুচরা বাজারে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে অন্তত ১০ টাকা। বিজয় স্মরণীর কলমিলতা বাজার ও ফার্মগেট ইন্দিরা রোডের মাহবুব প্লাজার নিচ তলার বাজারটিতেও একই দামে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।
সবজির বাজারে আগুন : শীতের আগাম শাক-সবজির সরবরাহ বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম বেড়েছে। সব ধরনের শাক-সবজির চড়া দামে অতিষ্ঠ ক্রেতারা।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সিম ৬০ থেকে ৭০ টাকা আর গাঁজর বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে।
পটল বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪০ টাকা, উস্তে-ঝিঙা-ধুন্দুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাকরোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ৩০ টাকা, শসা জাত ও মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ ছাড়া আকারভেদে প্রতিপিস বাঁধা কপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ফুল কপি ২৫ থেকে ৪০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।
খুচরা বিক্রেতাদের অভিমত, আড়তে গেলে পছন্দমতো সব ধরনের সবিজ পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু দাম বেশি। বেশি দামে কেনার কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আর পাইকারি বিক্রেতাদের অভিমত, যে হারে সবজির সরবরাহ বাড়ছে, চাহিদা তার থেকে বেশি। এ কারণে দাম তুলনামূলক বেশি।