নিজস্ব প্রতিবেদক : শিল্পায়ন করতে গিয়ে যেন খাদ্য উৎপাদন হ্রাস না পায় সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কৃষিজমি নষ্ট করে শিল্পায়ন করা যাবে না। কারণ দেশের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। শিল্পের কথা চিন্তা করে আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) গভর্নর বোর্ডের ৩৪তম সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সভায় শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পায়নের পাশাপাশি কৃষির গুরুত্বও অনেক বেশি। আমাদের বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে যেন খাদ্য উৎপাদন হ্রাস না পায়। খাদ্য চাহিদা পৃথিবীতে কখনো কমবে না, প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের লক্ষ্য। আমাদের অর্থনীতি যেহেতু কৃষিনির্ভর, এই কৃষি নির্ভরতা- এককভাবে শুধু কৃষিনির্ভরতায় না থেকে কৃষির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শিল্পের উন্নয়নও একান্তভাবে প্রয়োজন। শিল্প উন্নয়ন করতে পারলে আমাদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে, রফতানি বাড়বে, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হবে।
বিনিয়োগ লক্ষ্য হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন সারাবিশ্বের কাছে বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান। আমাদের যেহেতু জনসংখ্যার অধিকাংশেরই তরুণ কর্মক্ষম ও তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারি সেই লক্ষ্যে আমাদের আমরা পদক্ষেপ ও নিয়েছি।
দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। দেশের স্থিতিশীল পরিবেশ এবং সরকারের দেয়া নানা সুবিধার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আমরা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পেরেছি এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে বলেই বিনিয়োগের ক্ষেত্রটা আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধাও দিয়ে দিচ্ছি। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসার ক্ষেত্রে বেপজার অবদানের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সারাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা শিল্পাঞ্চলগুলো বিশেষভাবে করে দিচ্ছি। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ সুরক্ষার দিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ সংশ্লিষ্ট সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান।