সাইফুর রশিদ চৌধুরী ঃ শ্রাবনী আক্তার (১৯) গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানাধীন সৈর্দ্দী গ্রামস্থ্ দেলোয়ার শেখের কনিষ্ঠ কন্যা। প্রায় এক বছর পূর্বে একই এলাকার হাসান বেপারীর সাথে তার বিয়ে হয়। জানা যায় হাসান বেপারী একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি।
বিয়ের পর থেকেই তার স্ত্রীকে টাকার জন্য মারধর ও নির্যাতন করতো। ঘটনার আগের দিন ভিকটিম শ্রাবনী আক্তার (১৯) তার বাবার বাড়িতে ছিলো। গত ২৬ মার্চ, ভিকটিমকে ইফতার পার্টির কথা বলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদের বাড়িতে ডেকে নেয়।
গত ২৭ মার্চ, রাত আনুমানিক ৪ টার সময় আসামী হাসান শেখের পরিবার ভিকটিমের বোনের কাছে ফোন করে জানায় যে তার বোন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে ভিকটিমের মা ও তার আত্মীয়-স্বজন আসামী হাসান বেপারীর বাড়িতে উপস্থিত হয়ে একটি ভ্যানের উপর ভিকটিমের মরদেহ শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায়। তখন মৃতদেহের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় এবং ভিকটিমের ঘরের অন্যান্য মালামাল এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পায়।
ঘটনার কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামীর পরিবারের সবাই কানাঘুষা করতে থাকে। তখন ভিকটিমের পরিবারের লোকজন বুঝতে পারে যে তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশে খবর দিলে আসামীর পরিবারের লোকজন গা ঢাকা দেয়।
পরবর্তীতে থানা পুলিশ এসে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন এবং ভিকটিমের মা বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হয় এবং জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৬ (সদর কোম্পানি) খুলনার একটি চৌকস আভিযানিক দল গতকাল শনিবার ৮ এপ্রিল, সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলার ভাংগা থানাধীন রশিদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যা মামলায় প্রধান পলাতক আসামী হাসান বেপারী (২৩), থানা-মুকসুদপুর, জেলা-গোপালগঞ্জকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।