(ছবিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের বক্তব্য দিতে দেখা যাচ্ছে।)
নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে (টিসিবি ভবন-৮ম তলা, ঢাকা) অধিদপ্তরের সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ২৫তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, এ খবর নিশ্চিত করেছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা।
উল্লেখিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষসহ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান এবং পরিষদের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
(ছবিতে বানিজ্য মন্ত্রী ও জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক সহ উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে দেখা যাচ্ছে।)
সভার শুরুতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পরিষদের সদস্য সচিব হিসেবে সভাপতির অনুমতিক্রমে বিগত ২৪তম সভার গৃহীত সিদ্ধান্তসহ কার্যবিবরণী সভায় উপস্থাপন করেন। আলোচনায় ২৪তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার মাধ্যমে সভার সকল সদস্যের সম্মতিক্রমে ২৪তম সভার কার্যবিবরণী দৃঢ়ীকরণ করা হয়।
এরপর সভায় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী অধিদপ্তরের গৃহীত কার্যক্রমের প্রতিবেদন পরিষদের সদয় অবগতির জন্য উপস্থাপন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই ২০২২ থেকে মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত ত্রৈমাসিক ভিত্তিক হিসাব বিবরণী অনুমোদন এবং ১৫ মার্চ বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসে গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিতকরণসহ বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়াও সভায় অধিদপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি ভিডিও চিত্র এবং অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রচারণামূলক দুইটি প্রামাণচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
(বক্তাদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহনে মুখরিত আলোচনা সভা)
সভায় ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম পূর্বের চেয়েও বর্তমানে অধিকতর দৃশ্যমান। অধিদপ্তরের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত করা প্রয়োজন। এলক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে অফিস স্থাপনের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন।
সভায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বর্তমান কার্যক্রমের জন্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ধনব্যাদ জানান। তিনি বলেন, ভেজাল ও নকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তিনি এই অধিদপ্তরকে জনবল বৃদ্ধির মাধ্যমে আরো শক্তিশালীকরণের বিষয়েও বলেন।
সভায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) এর মহাপরিচালক অধিদপ্তরের বর্তমান কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউড (বিএসটিআই) যৌথভাবে কাজ করলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ করা সহজ হবে। তিনি অধিদপ্তরের জন্য নিজস্ব ভবন এবং জনবল বৃদ্ধির বিষয়েও বলেন।
সভায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন অধিদপ্তরের বর্তমান তদারকিমূলক কার্যক্রম বিশেষ করে রমজানে অধিদপ্তরের তদারকিমূলক কার্যক্রমের জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। এই জন্য তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে ধনব্যাদ জানান। তিনি ঔষধের মেয়াদে ঘষামাজা করে বিক্রয়ের বিরুদ্ধে তদারকি কার্যক্রম জোরদার করার বিষয়ে বলেন।
তিনি সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশহিসেবে সারাদেশের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিয়ম সভা আয়োজন করার অনুরোধ জানান। সভায় বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ফেরদৌস আহমেদ ভোক্তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার বিষয়ে বলেন। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে টিম গঠন করে জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে।
সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর জন্য এবং অধিদপ্তরকে শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে জনবল বৃদ্ধির প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছি। বর্তমান প্রস্তাবে অধিদপ্তরের কর্মকতা-কর্মচারীদের পদোন্নতি এবং বিদ্যমান বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়গুলোতে প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি বর্তমান জনবল বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদনের পর পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত অধিদপ্তরের কার্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব প্রেরণের বিষয়েও বলেন।
সভায় পরিষদের অন্যান্য সকল সদস্য অধিদপ্তরের বর্তমান সামগ্রিক কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে এবং অধিদপ্তরকে শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে সারাদেশ ব্যাপী এর সুফল পৌঁছিয়ে দিতে অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধি অতীব প্রয়োজন।
এছাড়াও সভায় ভোক্তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে ডিজিটাল মাধ্যমসহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণামূলক কার্যক্রম জোরদারের পাশাপাশি চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
পরিশেষে পরিষদের সভাপতি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি অধিদপ্তরের বর্তমান কার্যক্রমের প্রশংসা করে ভোক্তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতাবৃদ্ধিমূলক কার্যক্রমকে গুরুত্ব প্রদানের আহবান জানিয়ে উপস্থিত সকলকে ধনব্যাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।