পাবনায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহরের দাবিতে মানববন্ধন

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন রাজশাহী সংগঠন সংবাদ সারাদেশ

পাবনা প্রতিনিধি  : পাবনায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের শ্রমিকবৃন্দ। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।


বিজ্ঞাপন

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, মো. মিলন শেখ, হারুন খান, আম্বিয়া খাতুন, রাজিয়া খাতুন, রনি শেখ; মালিকপক্ষ মাসুদ রানা, ফজলুল হক প্রমূখ।

বক্তব্যকালে বক্তাগণ বলেন, মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের একাংশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামীম আহমেদ গং প্রতিষ্ঠানের আরও ৪ জন মালিককে না জানিয়ে এবং শ্রমিকদের কোন নোটিশ না দিয়েই গোপনে আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহযোগীতায় প্রতিষ্ঠানের সকল উৎপাদন প্রক্রিয়ার যন্ত্রপাতি ও মালামাল অবৈধভাবে নিয়ে যায়।


বিজ্ঞাপন

এ সময় শ্রমিক-কর্মচারীরা শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের সকল পাওনাদি ও বকেয়া বেতন পরিশোধের জোর দাবি জানান। একই সাথে শ্রমিকদের নামে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদের করা মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত শ্রমিক হারুনের নিঃশর্ত মুক্তিসহ সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।


বিজ্ঞাপন

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রাষ্ট্র সংস্কার শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রমিক নেতা শেখ নাসির উদ্দিন বলেন, অবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনাদি বুঝিয়ে দিতে হবে। আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্রমিকদের তিন দিনের ভিতরে তাদের বেতন ভাতা সম্পূর্ণ বুঝিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখন পুরোপুরি অস্বীকার করছে। তিনি বলছেন, ‘আমি ওখানে যাইনি, আমার স্টেশনের পুলিশ পাঠায়নি’, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।

তিনি আরো বলেন, যেকোন কোম্পানী স্থানান্তর বা বন্ধ করতে হলে শ্রমিকদের ৩ মাস আগে নোটিশ দিয়ে অবগত করতে হয় এবং তাদের বকেয়া বেতন-ভাতাদি পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু শামীম আহমেদ গং কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই গায়ের জোরে মালামাল নিয়ে গিয়েছেন। আর এ কাজে সহযোগিতা করেছেন প্রশাসনের অসাধু দুর্নীতিবাজ কিছু কর্মকর্তা।

আমরা শামীম আহমেদ ও আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিচার দাবি করছি, শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অন্যথায় যেকোন অপ্রীতিকার পরিস্থিতির দায় সরকার ও শামীম আহমেদের ওপর বর্তাবে।

উল্লেখ্য যে, স্থানীয় থানার ওসি’র প্রত্যক্ষ সহায়তায় মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে। এসময় শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের পাওনা বেতন-ভাতার দাবি জানাতে তাদের মারধর ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি ভয়-ভীতি দেখানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।

জানা যায়, কোম্পানির সিডিউল টেন অনুযায়ী এই কোম্পানির মালিক পাঁচজন- মো. শামীম আহমেদ, মো. মাসুদ রানা,  মো. ফজলুল করিম, মো. আব্দুল আওয়াল এবং  মো. ফাহাদুল আফসার চৌধুরী।

শামীম আহমেদ কোম্পানির বাকী পরিচালকদের নিয়ে কখনো কোন বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন না। কোম্পানি তিনি একক স্বৈরাচার নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত করছেন।

পরিচালকদের সাথে তিনি কখনোই কোম্পানির জবাবদিহিতা করেন না। কোম্পানির বাকি পরিচালকদের স্বাক্ষর নকল ও অবৈধভাবে জানা অজানা শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসতের উদ্দেশ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন।

যার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ও আর জেএসসিতে একটি কমপ্লেইন দাখিল ও প্রত্যেকটা ব্যাংককে একাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য নোটিশ প্রদান করেন বাকি পরিচালকরা।

তারা পল্লী বিদ্যুৎ কাশিনাথপুর শাখা, বিএসটিআই, পাবনা অভিযোগ দাখিল করেছেন। তার অনিয়মের কারণে অন্যান্য মালিকেরা যখন কোম্পানিটা বন্ধ করার সিন্ধান্ত নিয়েছে, ঠিক তখনি শামীম আহমেদ অন্য অনেকগুলো কোম্পানি খুলেছেন যার মধ্যে মেরিনার্স বেকার্স এন্ড বেভারেজ লিমিটেড একটি।

শামীম আহমেদ মেরিনারর্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের সম্পদ মেরিনার্স বেকারস এন্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে সম্পদ ট্রান্সফার করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন, অন্যরা তাৎক্ষণাৎ বাধা প্রদান করেন। শামীম আহমেদ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট এর দোসর।

উল্লেখ্য শামীম গং ও আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নগ্ন হস্তক্ষেপে প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০ আগস্ট ২০২৫ রবিবার দিনে-দুপুরে কোম্পানির শ্রমিকদের মারধর, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অস্ত্রের মুখে শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত করে এবং মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের মালিকদের সম্পদ ও মেশিনারিজ ক্রেন ও ট্রাক ব্যবহার করে প্রায় দুই কোটি টাকার মালামাল ডাকাতি ও লুট করে।

এই ঘটনাটির পুরাটাই আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নগ্ন হস্তক্ষেপে সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা ঘটনার সঠিক তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিচার দাবি করেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *