কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, “সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ” দপ্তরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা গোলাম রাজ্জাকের ছবি।
নিজস্ব সংবাদদাতা : বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, “সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ” দপ্তরের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা গোলাম রাজ্জাক নিজেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পরিচয় দিয়ে গত সাত বছর ধরে রাজধানীর শ্যামলী আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের ব্যাপক উৎপাত করে আসছে।
গত ৯ জুন, বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এর নিকট গোলাম রাজ্জাক সাহেব নিজেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পরিচয় দিলে বিপত্তি শুরু হয়।
সেখানে উপস্থিত থাকা শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়ার নজরে আসলে বিষয়টি তদন্ত শুরু হয়। ব্যাপক জেরার মুখে গোলাম রাজ্জাক স্বীকার করতে বাধ্য হন যে তিনি কোন উপসচিব বা যুগ্ন সচিব নন। একজন অতিরিক্ত সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মাত্র।
রাজ্জাক নিজেকে যুগ্নসচিব পরিচয়ে তার নিজ বিল্ডিং এর অন্যান্য ফ্লাট মালিকদের সবসময় ভয়ভীতি দেখাতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছ। তার বিভিন্ন প্রতারণার শিকার এলাকাবাসীও।
গত ১১ জুন, গোলাম রাজ্জাকের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় ফৌজদারী আইনে একটি হত্যা চেষ্টার মামলা হয়। মামলা নম্বর ২২।
মামলার বর্ণনা অনুযায়ী গোলাম রাজ্জাক বহিরাগত লোকজন সহ একই বিল্ডিং এর অপর ফ্লাট মালিক আল ইমরানের উপর লোহার রড, বেলচা ও বটি ইত্যাদি দিয়ে হামলা করে হত্যা চেষ্টা করে। শ্যামলী তিন নম্বর রোডের রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজে তা স্পষ্ট দেখা যায়।
ইতোমধ্যে সিসিটিভি ফুটেজটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়। গোলাম রাজ্জাক শ্যামলী তিন নম্বর রোডের ২৭/৩ বাড়ির এ/১ নং ফ্ল্যাটে বসবাস করেন।
একই বিল্ডিং এর অন্য ফ্ল্যাট মালিক মাহজিব ফ্লাট নম্বর c/২, সোহেব ফ্লাট নম্বর এ/৩, আসমা ফ্ল্যাট নম্বর সি/১, জনাব ফয়েজ আহমেদ ফ্ল্যাট নম্বর সি/৫, সালাউদ্দিন ফ্লাট নম্বর সি/৩, আনোয়ার হোসেন ফ্ল্যাট নম্বর বি/১, তাদের সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। গোলাম রাজ্জাকের দুই ছেলের বিরুদ্ধেও বাবার মিথ্যা পরিচয় দিয়ে এলাকায় ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তাদের বিরুদ্ধে চুরি ও মাদক সেবন সহ অনেক অভিযোগ রয়েছে। কয়েকদিন আগে গোলাম রাজ্জাক এর ছোট ছেলে রিয়ান এর বিরুদ্ধে মোবাইল চুরির অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি জিডি হয় জিডি নম্বর ২১১৯ তারিখ ২৮-৮-২০২২।
এর আগেও গোলাম রাজ্জাকের বিরুদ্ধে একই বিল্ডিং এর সার্ভিস চার্জ এর জন্য অতিরিক্ত অংকের বিল সংগ্রহ করে আত্মসাৎ এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তার এহেন চুরির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে নিজেকে সচিব পরিচয়ে অন্যান্য ফ্লাট মালিকদের নিপীড়ন করতেন।
এলাকাবাসী এরকম অপরাধী প্রতারকের অত্যাচার থেকে পরিত্রাণের জন্য মানববন্ধন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।