!! স্কুলে স্কুলে ‘মশার কামড় ক্ষতিকর’ আর্টবুক বিতরণ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ডিএনসিসি মেয়রের !!
নিজস্ব প্রতিবেদক : মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন ডেঙ্গু মোকাবিলায় তিন স্তরে কাজ করবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
তিনি বলেন, ‘প্রথম স্তরে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি কাজ করবে। এই কমিটি নিজ নিজ এলাকায় ঘুরে এডিসের লার্ভার উৎসস্থল চিহ্নিত করবে, লার্ভান:জন ধ্বংসে ব্যবস্থা নিবে, কোন কোন বাড়িতে ডেঙ্গু রোগী আছে সেই তালিকা করবে এবং কমান্ড সেন্টারের সার্ভারে মশক নিধন কার্যক্রমের ডাটা এন্ট্রি দিবে। ২য় স্তরে রয়েছে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাপিড একশন টিম। টাস্কফোর্স কমিটির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই টিম সেখানে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে। আর ৩য় স্তরে রয়েছে মেয়রের নেতৃত্ব কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং টিম।’
বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘মশার কামড় ক্ষতিকর’ শীর্ষক সচেতনতামূলক কার্টুন বই বিতরণকালে ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
সকাল সাড়ে এগারোটায় রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (বালিকা শাখা) শাখা থেকে মেয়র আতিকুল ইসলাম স্কুলে স্কুলে ‘মশার কামড় ক্ষতিকর’ শীর্ষক সচেতনতামূলক কার্টুন বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ শুরু করেন। পরে তিনি আরও ৪টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বইটি বিতরণ করেন। স্কুলগুলো হল: লালমাটিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লালমাটিয়া প্রাইমারি স্কুল, লালমাটিয়া সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজ, জামিলা আইনুল আনন্দ উচ্চ বিদ্যালয়, শ্যামলী।
পাঁচটি স্কুলের ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে বইটি বিতরণ করা হয়। শিক্ষার্থীরা বইটি পাওয়ার পরে অংকন করে। অংকনে ভাল করায় প্রতি ক্লাসের ৫ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কার তুলে দেন ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
উপস্থিত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ছোটমনিদের জানাতে চাই, মশার কামড় মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে তাদেরকে জানাতে পারলে, সচেতন করতে পারলে আমরা মশার কামড় থেকে রক্ষা পাব। বইটিতে চিত্রাঙ্কন করার মাধ্যমে শিশুরা মশার কামড় থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে শিখতে পারে৷’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের শিশুদের সুপার হিরো বানাতে চাই মশার বিরুদ্ধে। শিশুরা যদি মশার বিষয়ে জানতে পারে এবং কামড় থেকে নিজেদের মুক্ত রাখতে পারে, তবে অনেকাংশেই আমরা মশাবাহিত রোগ রুখতে পারব। শিশুরা মশার প্রজননস্থল, ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানলে পরিবারে এর প্রভাব পড়বে। সিটি কর্পোরেশন থেকে বই ঢাকা উত্তরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেওয়া হবে। এক লাখ বই বিতরণ শেষ হলে আমরা আরও বই ছাপিয়ে শিশুদের মাঝে তা বিতরণ করব।’
শিক্ষার্থীদের আহবান করে মেয়র বলেন, ‘তোমরা বাবা, মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, নানা-নানি সহ আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের জানাবে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। বাসাবাড়ি, বাড়ান্দা, ছাদ সবজায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।’
মেয়র বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যেকোনো বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারেন সমাজের মধ্যে। শিক্ষার্থীরাই সুন্দর সুস্থ সমাজ গঠনের কারিগর। আমি তাদের আহ্বান করছি, আজ থেকেই নিজেদের বাসা এবং এলাকার মধ্যে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বার্তা ছড়িয়ে দাও। সুস্থতার জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম শুরুর চার মাস আগে থেকে আমি বিএনসিসি এবং বাংলাদেশ স্কাউটের সদস্যদের নিয়ে মাঠে নেমেছি। বর্ষায় আমরা কার্যক্রম আরও জোড়দার করেছি। মশা নিয়ে ল্যাবে গবেষণার জন্য ইতিমধ্যে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি হয়েছে। ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন কীটনাশকের কার্যকারিতা ও মশার ঘনত্ব, মশার প্রজাতি এই ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে।’
এসময় ডিএনসিসি মেয়র প্রতিটি স্কুলে উপস্থিত অভিভাবকদের মাঝে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।
বই বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেঃ জেনাঃ এ.কে.এম শফিকুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম, মোঃ শফিকুল ইসলাম (সেন্টু), শেখ মোহাম্মদ হোসেন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী ও রোকসানা আলম প্রমুখ।