আমিনুর রহমান বাদশা : রাজধানী সহ সারাদেশে যখন ডেঙ্গু জ্বরকে পুঁজি করে ডাব ব্যাবসায়ীদের নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ঠিক তখনই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ডাবের অস্বাভাবিক মুল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
যেখানে প্রতিটি ভাব ৪০ টাকা ৫০ টাকা, সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে সেখানে রাতারাতি ডাব ব্যাবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ডাবের অস্বাভাবিক মুল্য বৃদ্ধি করে প্রতি পিস ডাব ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে দেখা যায়। অজুহাত ডেঙ্গু জ্বর।
বাংলাদেশে-ই নাকি সর্ব প্রথম আবিস্কৃত হয়েছে ডেঙ্গু ডাব! ঠিক এমন কঠিন বাস্তবতা ও পরিস্থিতিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাব ব্যাবসায়ীদের নৈরাজ্য বন্ধ করতে ঢাকা শহরের ডাবের আড়তদার, এফবিসিসিআই এর সভাপতি, বাংলাদেশ কনজুমার এসোসিয়েশনের সভাপতি সহ সংশ্লিষ্ট মহলের সাথে এক মতবিনিময় সভারআয়োজন করেন।
উক্ত মতবিনিময় সভায় মহাপরিচালক রাজধানীতে বিগত দিনের ডাবের অস্বাভাবিক মুল্য বৃদ্ধিতে অধিদপ্তরের অভিযানে বিভিন্ন অসংগতি বিষয়ের প্রসংগ তুলে ধরেন। মহাপরিচালক ডাব ব্যাবসায়ীদের নৈরাজ্য বন্ধ করতে কঠোরভাবে নির্দেশনা দেন। তিনি ডাব ক্রয়ের ও বিক্রয়ের পাকা রশিদ সংরক্ষণ করতে বলেন।
এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে গতকাল মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট, রাত ১২টা ১৫ মিনিট থেকে ভোর সাড়ে ৫ পর্যন্ত ডাবের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশনা অনু্যায়ী অধিদপ্তর কর্তৃক বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়।
বাজারে ডাবের আড়তদারা ডাবের অস্বাভাবিক মুল্যে ডাব সরবরাহ করছে কিনা এজন্য মহাপরিচালকের নির্দেশে ঢাকা মহানগরীর কারওয়ান বাজার, বেড়িবাঁধ ও যাত্রাবাড়ী ডাবের পাইকারি আড়তে ডাবের মুল্য তদারকির জন্য গভীর রাতে পরিচালিত হয় ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান। উক্ত অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল এবং প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম।
শুরুতে কারওয়ান বাজারে পরিচালিত অভিযানে দেখা যায় সেখানে ডাবের মূল্য তালিকা প্রদর্শন হলেও ডাব ক্রয়-বিক্রিতে পাকা রশিদ সংরক্ষণ করা হচ্ছে না এবং মূল্য তালিকায় প্রদর্শনকৃত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে ডাব বিক্রি করা হয়েছে।
উল্লেখিত অপরাধে ২টি প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা করে সর্বমোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর যাত্রাবাড়ী ডাবের আড়তে তদারকিতে গেলে সকাল ৭ টার সময় ডাব বিক্রি শুরু হবে বলে আড়তদাররা জানান।
বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযানে দেখা যায় ডাব বিক্রির ক্ষেত্রে কার্বন কপি ছাড়া রশিদ দেয়া হয়েছে এবং বিক্রেতাগণ ডাব ক্রয়ের রশিদ দেখাতে পারেনি।
উল্লেখ্য, এসব আড়তে গড় ক্রয়মূল্য ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং বিক্রি মূল্য ৪০, ৫০, ৭৫, ৮০ টাকা এবং সবচেয়ে বড় বাছাইকৃত ডাব ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আজকের দেশ ডটকম কে জানান, জাতীয়, জনস্বার্থ ও ভোক্ত অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এ ধরনের অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।