নিজস্ব প্রতিনিধি (কুমিল্লা) : ভারতে পালিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বৈরাচার গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার প্রাক্তন প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খানের সঙ্গে গোপন বৈঠকের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় কুমিল্লার আওয়ামীপন্থী দুই সাংবাদিককে সীমান্তে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা (ডলার) উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ব্যাপক তদন্তে নেমেছে।

সূত্র জানায়, শনিবার ২৮ জুন, গভীর রাতে নীলফামারী সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন তারা। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি ও সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ অভিযানে দুইজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের একটি গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত সাংবাদিকরা যথাক্রমে, শাহজাদা এমরান কুমিল্লা ভিত্তিক ‘আমাদের কুমিল্লা’ নামের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক। অভিযোগ রয়েছে, এই সংবাদমাধ্যমটি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এবং বিতর্কিত সাবেক প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খানের প্রত্যক্ষ সম্পাদনায় পরিচালিত হয়। এবং অপরজন তরিককুল ইসলাম তরুণ (ছদ্মনাম) কথিত সাংবাদিক পরিচয়ে পরিচিত হলেও প্রকৃতপক্ষে কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতাল (সিডি প্যাড) এ কর্মরত। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি সরকারদলীয় পরিচয়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে যুক্ত ছিলেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে, আটককৃতরা শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি চক্রের পক্ষে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ রক্ষা ও তথ্য পাচারে জড়িত থাকতে পারেন। তাদের সঙ্গে কোনো রাষ্ট্রীয় গোপন বার্তা, নথিপত্র কিংবা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ছিল কি না—তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ ডলারের উৎস ও ব্যবহার পরিকল্পনাও তদন্তাধীন।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, আটককৃতদের মধ্যে একাধিকবার ভারতের যশোর বেনাপোল সীমান্ত ব্যবহার করে যাতায়াতের প্রমাণ রয়েছে। তাদের আগেও সন্দেহজনক কার্যক্রমে জড়িত থাকার বিষয়েও আলামত মিলেছে।
উক্ত বিষয় নীলফামারীর এসপি এ.এফ.এম তারিক হোসেন খান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান তাদেরকে আটক করা হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি ২০ লক্ষ ডলার সহ সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি তাদেরকে আটক করেছেন তবে তাদেরকে ঢাকায় ডিবি হেডকোয়ার্টারে পাঠানো হয়েছে বাকি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা কোনো একক বা বিচ্ছিন্ন চক্রান্ত নয়; বরং এর পেছনে বৃহৎ রাজনৈতিক বা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র লুকিয়ে থাকতে পারে। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার ব্যানার ব্যবহার করে যারা নানা জায়গায় প্রভাব খাটিয়েছেন, এই দুজনও তাদের মধ্যে অন্যতম বলে গোয়েন্দাদের দাবি।
সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এ বিষয়ে বিশেষ নজরদারি এবং সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে আটক দু’জনকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এমন ঘটনায় কুমিল্লার রাজনৈতিক ও সাংবাদিক মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।