জামালপুরের ইসলামপুরে ধর্ষণ মামলার বাদীর বাড়ীতে হামলায় আহত ৫ :  গ্রেফতার হয়নি ১৬ আসামী

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুর জেলার ইসলামপুরে ধর্ষণ মামলার বাদীর বাড়ীতে হামলায় ৫ জন আহত হয়েছেন । শনিবার (২৮ জুন ) সকাল ১০ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গুরুত্বর আহত অবস্থায় ৪ জন জামালপুর ২৫০ শয্যা জেলারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন । তারা হলেন ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ভাটিপাড়া এলাকার মৃত আঃ মোমেন এর ছেলে ইসলামপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার আরবি বিভাগের অবসর প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক মোঃ আঃ মালেক (৭০),তার ছেলে আল আমিন (৩৫), আরেক ছেলে মাহমুদুল হাসান (২৮) ও মেয়ে মাসুদা আক্তার (৩২) ।


বিজ্ঞাপন

হাসপাতাল ও সরোজমিনে গিয়ে জানা গেছে ,১ জানুয়ারী ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা ভাটিপাড়া এলাকার মাহমুদুল হাসান এর ২০ বছর বয়সী বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বোনকে কে বা কাহারা অপহরণ করে। পরদিন মেয়ের বাবা আঃ মালেক বাদী হয়ে ইসলামপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন । খোজ পেয়ে পার্শবর্তী মেলান্দহ উপজেলার মেলান্দহ বাজারের শাপলা মার্কেট এলাকায় বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে মেয়েকে উদ্ধার করে আনলে প্রতিবন্ধী মেয়ের ইশারা ইঙ্গিতে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করে। এদিকে ধর্ষণের বিষয়টি ডাক্তারী পরীক্ষা নিরীক্ষায় সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ১৭ ফেব্রুয়ারী   মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে ২০০০ সংশোধিত ২০২০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৯(১) ৩০  ধারায় অজ্ঞাত আসামী দিয়ে মামলা দায়ের  করে । এ ঘটনায় বেশ আলোচিত হলে পুলিশ তদন্ত করে ১৯ ফেব্রুয়ারী একই এলাকার আবুল কালামের ছেলে মোঃ সবুজ (২১) ও গত ১১ জুন আব্দুল গফুরের ছেলে মুজাহিদুল (২৮) কে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে ।  এদিকে ২৫ জুন ধর্ষণ মামলায় তাদের জামিন আবেদন আদালত না মন্জুর করায়  মুজাহিদুল ও মোঃ সবুজ এর পরিবারের লোকজন গিয়ে বাসার গেট ভেংগে  ধর্ষণ মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান এর বাড়ীতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৫ জনকে আহত করে এবং ঘরে থাকা আসবাব পত্র লুটপাট করে নিয়ে যায় । এতে মাহমুদুল হাসান এর স্ত্রী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হলেও ৪ জনের অবস্থা অবনতি দেখে ইসলামপুর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন । পরদিন মোঃ আঃ মালেক এর ছেলে মোঃ আতিকুল্লাহ বাদী হয়ে ১৮৬০ পেনাল কোডের ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৪২৭/৫০৬(২)/১১৪/৩৪ ধারায় প্রতিবেশী ইলিয়াস  মোঃ সজিব, মোঃ মোখলেছুর রহমান , মোঃ আবু সামাদ , মোঃ আঃ মোতালেব , মোঃ হাফিজুর ,মোঃ রমজান , মোঃ কালু,মোছাঃ কমলা বেগম , মোছাঃ বানেছা বেগম, মোছাঃ খাদিজা বেগম, মোঃ মোস্তফা, আবু কালাম ,মোঃ শাহীন, মোছাঃ শাপলা, কবিতা,ফাহিমা, ফুলেছা বেগম, মর্জিনা বেগম এর নাম উল্লেখ্য করে আরো ৩/৪জনকে অজ্ঞাত আসামী করে ইসলামপুর থানায় মামলা দায়ের করে । এদিকে ঘটনার পর পরই আবু সামাদ ,কমলা বেগম, খাদিজা খাতুনকে গ্রেফতার করে ২৬ জুন আদালতে প্রেরণ করেন । অন্যান্য আসামীরা এলাকায় ঘুড়া ফেড়া করলেও ইসলামপুর থানা পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে পারছে না ।

এদিকে ধর্ষণ মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান জানান ,আমার বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বোনকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে প্রতিবেশী মোতালেবের রেখে রাতভর গণ ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করেছে । পরে থানা পুলিশ তাদের তদন্তে ২ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে ।  এ ঘটনায় আরো কেউ জড়িত আছে কিনা পুলিশের পাশাপাশি বিচারের স্বার্থে জামালপুর ডিবি পুলিশ ও র‍্যাবের ছায়া তদন্তের দাবী জানাই। তিনি আরো জানান,   আসামীদের জামিন না হওয়ায় ওরা আমাদের ওপর হামলা করেছে।  অতি দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

অন্যদিকে মোঃ আতিকুল্লাহ জানান, আমাদের বাড়ীতে হামলা করে আমাদের ৫ জনকে আহত করেছে ও ব্যাপক ক্ষতিসাধন এবং অর্থ লুট করে নিয়ে গেছে।  আমি বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আসামীরা এলাকায় এসে ঘুড়াঘুড়ি করে আরো বিভিন্ন জায়গায় বলাবলি করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সহ বিভিন্ন ভাবে ফাসিয়ে দিবে। এবং তারা নিজেদের ঘর নিজেরাই ভাংচুর করে ধর্ষণ ও মারামারি মামলা অন্যদিকে নেওয়ার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে দেওয়ানগঞ্জ থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে৷ এদিকে  মামলা প্রত্যাহার না করলে আমাদের খুন করবে বলে বিভিন্ন জায়গায় বলাবলি করে।  বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।  আমরা বিচার চাই।  তিনি আরো জানান, এই অরাজকতার শেষ কোথায়? ধর্ষণের বিচার চাওয়া কি আমাদের অপরাধ ছিল? দেশের জনগণের নিকট আমার প্রশ্ন?

প্রশাসনের প্রতি আমি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে বিনীত অনুরোধ করছি দয়া করে আমাদেরকে রক্ষা করুণ। এই মুহূর্তে প্রশাসন ছাড়া আমাদেরকে রক্ষা করার কেউ নেই। দয়া করে নির্যাতিত পরিবারের পাশে দাড়ানোর আহব্বান জানান তিনি।

এ বিষয়ে বার বার বিবাদীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি তারা৷

তবে ইসলামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ আসম আতিকুর রহমান শনিবার বিকাল ৫ টায় মুঠোফোনে জানান, ঘটনার পরেই অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আসামীদের তথ্য প্রযুক্তি সহায়তায় গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *