নিজস্ব প্রতিবেদক : বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, ডক্টর মোঃ ইউনুসের বিচার চলছে। আমাদের এ প্রসঙ্গে কথা নেই। বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিন্টন, বান কি মুন সহ বিশ^বরেন্য ১৭৫ জন নেতা এর মধ্যে ১০৪ জন নোবেল বিজয়ী বিবৃতি দিয়েছেন ডক্টর ইউনুসের পক্ষে।
বিশ্ব বরেণ্য এত নেতা একটি বিষয়ে কোন বিবৃতি দিয়েছেন, এটা আমার জানা নেই। বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের বক্তব্যে, বিচার বিভাগীয় হয়রানীর অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাদের বিচার-বুদ্ধি বা সততা সম্পর্কে কোন সন্দেহ বা কটাক্ষ করা হাস্যকর। তারা বিচার বিভাগীয় হয়রানীর কথা বলেছেন, এটি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখতে হবে। বিশ্ববরেণ্য নেতাদের বিবৃতি খতিয়ে না দেখলে জাতিকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। বিশ্ব সমাজে আমাদের হেয় প্রতিপন্ন হতে হবে। এজন্য হয়তো, জাতিকে চড়া মূল্য দিতে হবে। বিশ্ববরেণ্য ঐ সকল মানুষের বিচার, বুদ্ধি, বিবেক ও সততা নিয়ে কটাক্ষ করা বিশ্বে আমাদের হাস্যকর করে তুলছে। আমরা যদি মনে করি উট পাখির মত মাথা গুঁজে বালুতে কিছু লুকিয়েছি, আমি কাউকে দেখিনি তাই কেউ আমাকেও দেখছে না। উট পাখির মত মনে করলে চলবে না, সবাই আমাদের দেখছেন।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতি সভাপতি এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ এর রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ নিউইয়র্ক টাইম পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে, নীরবে ধংস করা হচ্ছে একটি দেশের গণতন্ত্র, কাঠগড়ায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ। নিউইয়র্ক টাইমসের সেই প্রতিবেদনেও বিচারিক হয়রানীর কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে গণতন্ত্রহীনতার কথা বলা হয়েছে। গণতন্ত্র ধংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। নিউইয়র্ক টাইমসকে বিশ্বের এক নম্বর গণমাধ্যম বলা হয়ে থাকে। তাদের যে কোন প্রতিবেদন সারা বিশ্বে গ্রহণযোগ্য।
দেশের মানুষ, সরকার ও বিরোধীদলের সাথে কথা বলে নিউইয়র্ক টাইমস এই প্রতিবেদনটি করেছে। সারা বিশ্ব যে পত্রিকাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে, আমরা তাকে মূল্য না দিলে তাতেও আমাদের খেসাড়ত দিতে হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। গণতন্ত্র ধংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে ন্যাস্ত করা হয়েছে। এটাকে গুরুত্ব দেয়া জরুরি, না হলে জাতি হিসেবে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে।
এসময় গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে প্রকাশ, সরকার নির্বাচনের আগে বড় বড় পদে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব পদে প্রচুর পদোন্নতি দিয়েছে। এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে, গণমাধ্যম বলছে, সরকার একটি শ্রেণীকে সুযোগ-সুবিধা দিতেই পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। তাদের কোন কাজ নেই, নিজেদের কাজই করবে তারা। দেশে এমনিতেই অর্থের অভাব, সরকার যে রাজস্ব আদায় করছে তাতে হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এতো পদোন্নতিতে সার্ভিস আরো খারাপ হবে। লোকজন বেশি হওয়ায় কাজ আরো খারাপ হবে। সরকারের উদ্দেশ্য সৎ নয়, উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনে জিততে হবে। সরকার পদন্নোতি দিয়ে জনগণের পয়সায় নির্বাচন প্রভাবিত করতে চায়।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্র ধংস করে একদলীয় শাসন চালু করেছে। প্রশাসনকে ধংস করেছে, অন্য কারো এই প্রশাসন দিয়ে দেশ চালানো কঠিন হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি ধংস করেছে সরকার। আগামীতে অন্য কোন সরকার এলে তাদের খুবই খারাপ অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। মাদকের বিস্তার ঘটিয়ে সরকার দেশের তরুন সমাজ ধংস করেছে। পরিবেশ ও প্রকৃতি ধংস করেছে বর্তমান সরকার। আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি ধংস ও বিপর্যস্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে যাচ্ছি। আমাদের দায় আছে, রাজনৈতিক ভাবে আমরা এর বিরোধীতা করেই যাবো। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ভালো সমাজ উপহার দিতেই আমাদের রাজনীতি।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় যুব সংহতি’র সভাপতি এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ এর আশু রোগ মুক্তি কামনায় দোয় ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম ওমর, খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ ইয়া চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আমির হোসেন ভূঁইয়া, মোঃ বেলাল হোসেন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল পরিচালনা করেন জাতীয় যুব সংহতি’র সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ ক্বারী ইসাহুরুল্লাহ আসিফ।
আরো উপস্থিত ছিলেন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মোঃ হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, ওলিউল্লাহ মাসুদ, সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন, আজহারুল ইসলাম সরকার, মাহমুদ আলম , সমরেশ মন্ডল মানিক, দ্বীন ইসলাম শেখ, কেন্দ্রীয় নেতা শফিউল ইসলাম দুলাল, রেজাউল করিম রেজা, মখলেছুর রহমান বস্তু, লেঃ কর্ণেল তসলিম উদ্দিন, জিয়াউর রহমান বিপুল, সোলায়মান সামী এডভোকেট মোঃ নজরুল ইসলাম খান, ইব্রাহীম খান জুয়েল, শাহ ইমরান রিপন, জাতীয় ছাত্র সমাজ এর সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম খান, হকার্স এর সাধারণ সম্পাদক রাশেদ নিজাম, মটর শ্রমিক এর সদস্য সচিব মোঃ আব্দুর রহিম, যুব সংহতি’র নেতাদের মধ্যে জাফর আহমেদ রাজু, আবু সাঈদসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মী।