নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বিজিবি মহাপরিচালকের বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে বিজিবিতে বীরত্ব ও কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, ওএসপি, বিএসপি, এসইউপি, এনডিসি, পিএসসি, এমফিল, আজ সোমবার ১১ মার্চ, সকালে পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবার গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সানুগ্রহ উপস্থিতির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বিজিবি দিবস কুচকাওয়াজসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করায় এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানান। পাশাপাশি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র প্রতিটি সদস্যের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
তিনি বিজিবির আভিযানিক, প্রশাসনিক, প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা কার্যক্রম, পারস্পরিক যোগাযোগ এবং খেলাধুলা ও শারীরিক উৎকর্ষতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে সীমান্ত সুরক্ষা, মাদক ও চোরাচালান রোধসহ বিজিবির ওপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব *সততা ও সত্যবাদিতা, আনুগত্য, নিষ্ঠা এবং শৃঙ্খলার* সাথে পালনের আহ্বান জানান। পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অনৈতিক কাজ থেকে নিজেকে দূরে রেখে ধর্মীয় ও পারিবারিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দেন।
দরবার শেষে বিজিবিতে অপারেশনাল কর্মকান্ড, চোরাচালান নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ কোম্পানী/বিওপি কমান্ডারসহ অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জনকারী সর্বমোট ২৮ জনকে ব্যক্তিগত পুরস্কার প্রদান করা হয়। একইসাথে ০৪টি শ্রেষ্ঠ ব্যাটালিয়নকে ট্রফি প্রদান করা হয়। এরপর ৫৩ জনকে মহাপরিচালকের অপারেশনাল ও প্রশাসনিক প্রশংসাপত্র (ইনসিগনিয়াসহ) প্রদান করা হয়।
পরবর্তীতে বিজিবি মহাপরিচালক বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারবর্গকে সংবর্ধনা, উপহার ও অনুদান প্রদান করেন। এসময় তিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন ইপিআরের ৮১৭ জন বীর শহীদের আত্মত্যাগ ও বীরত্বের কথা গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের সূর্য সন্তান। তাঁদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
তাঁদের এই আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা বৃদ্ধিসহ তাঁদের পুনর্বাসন ও কল্যাণে সকল সুযোগ-সুবিধা আগের তুলনায় বহুগুনে বৃদ্ধি করেছে। একইভাবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের উত্তরসূরীদের জন্য সবসময় কাজ করে যাচ্ছে।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বিজিবির খেতাবপ্রাপ্ত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গকে বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট থেকে মাসিক ২০০০ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার ও পোষ্যদেরকে ভর্তুকি মূল্যে রেশন প্রদান এবং বিজিবিতে চাকুরির ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও নাতি/নাতনিদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। বিজিবি মহাপরিচালক ভবিষ্যতেও বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের পাশে থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। পরে বিজিবি মহাপরিচালক খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারবর্গের সাথে বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশগ্রহণ করেন।