নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভূক্ত তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ হারুন-অর-রশিদ এবং গভর্নিংসহ যারা পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে সরাসরি সংযুক্ত এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস হামলার ইন্ধনদাতা সে সকল শিক্ষকদের এর পদত্যাগের দাবিতে দুই কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছে তেজগাঁও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ২ টায় ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামের ভিতরে অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে ৩ দফা দাবি উল্লেখপূর্বক বিক্ষোভ করে এ দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে তেজগাঁও কলেজ থেকে সরাসরি কোন শিক্ষার্থীকে ভূমিকা রাখতে দেয়া হয় নি। গুন্ডাবাহিনী ছাত্রলীগ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা এবং আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকিসহ হয়রানি করা হয়েছে। এমনকি বিভিন্নভাবে আন্দোলনে যোগ দেয়ায় অনেকে হামলার শিকার হয়েছে, কারো হাত ভেঙ্গে গেছে আর কারো শরীরে রাবার বুলেটের চিহ্ন। কলেজ অধ্যক্ষ কোনও শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নেননি। এমনকি শিক্ষার্থীদের যে যৌক্তিক আন্দোলন সেটির প্রতিও তার অনেক বিদ্বেষ ছিল। তিনি সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত; অর্থাৎ তিনি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এখনো বহাল আছেন। যার কারণে শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে আহত নিহত কারোর খোঁজ নেননি। একজন অধ্যক্ষ হয়ে সে কি করে ছাত্রদের উপর হামলার ইন্ধন এবং হামলায় যুক্ত থাকতে পারে? আমাদের ক্যাম্পাসে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগের অনেক দালাল রয়েছে, যারা ঐ স্বৈরাচারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। ছাত্ররা এখন রাষ্ট্র সংস্কারে হাত দিয়েছে, শিক্ষাঙ্গন/ক্যাম্পাসও এর বহির্ভূত নয়। তাই অধ্যক্ষসহ পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল শিক্ষকদের পদত্যাগ করতেই হবে। এমনকি অধ্যক্ষ যদি আগামী দুই কার্যদিবসের মধ্যে কলেজে এসে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করে তবে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।
তেজগাঁও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন কলেজ অধ্যক্ষ কীভাবে কোন আইনে সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে তা বোধগম্য নয়। তিনি সরাসরি ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করতেন। অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন ক্যাম্পাসে মার খেতো তখন অধ্যক্ষ প্রতিবাদ না করে উল্টো ছাত্রলীগের সাফাই গাইতেন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিতেন।
এছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, একই সাথে ছাত্র শিক্ষকদের মতানৈক্য নতুন নিয়োগ এবং ছাত্র-শিক্ষক কর্তৃক যাচাইপূর্বক নিরপেক্ষ, নির্দলীয়, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষককেই কেবল অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং বিভাগ ভিত্তিক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করতে হবে। ক্যাম্পাসে সকল প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ছাত্র সংসদ গঠিত করতে হবে। একজন অধ্যক্ষ ও বিভাগভিত্তিক চেয়ারম্যান ৩ বছরের বেশি উক্ত পদে বহাল থাকতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, গত ১২ আগস্ট সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখের পড়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় তেজগাঁও কলেজের উপাধ্যক্ষ আঞ্জুমান আরা বেগম।